28-09-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
15-02-2007 মধুবন
“দীর্ঘসূত্রিতা, আলস্য আর বাহানাবাজির নিদ্রা থেকে
জেগে ওঠাই শিব রাত্রির প্রকৃত জাগরণ”
আজ বাপদাদা নিজের চতুর্দিকে অতি আদরের, অতি হারানিধি, পরমাত্ম ভালবাসার যোগ্য বিশেষ
বাচ্চাদের সাথে মিলিত হতে আর বিচিত্র বাবা বাচ্চাদের বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছেন।
তোমরাও সবাই আজ বিশেষভাবে বিচিত্র বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছ তো না! এই বার্থ ডে
সমগ্র কল্পে কারও হয় না। কখনও শুনবে না যে বাবা আর বাচ্চাদের একই দিনে বার্থ ডে হতে।
তো তোমরা সবাই বাবার বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছ, নাকি বাচ্চাদের বার্থ ডেও উদযাপন
করতে এসেছো? কেননা, সমগ্র কল্পে পরমাত্ম বাবা আর পরমাত্ম বাচ্চাদের এত অসীম ভালোবাসা
যে জন্মও একসাথেই হয়। বিশ্ব পরিবর্তনের কার্য বাবা একলা করবেন না, বাচ্চাদের সাথে
একসঙ্গে করতে হবে। অলৌকিকভাবে সাথে থাকার এই ভালবাসা, সাথী হওয়ার ভালবাসা এই
সঙ্গমেই অনুভব করো। বাবা আর বাচ্চাদের এত গভীর ভালোবাসা যে জন্মও একসাথে। আর তোমরা
থাকই বা কোথায়? একলা নাকি সাথে? প্রত্যেক বাচ্চা উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে বলে আমি
বাবার সাথে কম্বাইন্ড। কম্বাইন্ড থাকো তো না! একলা তো থাকো না, তাই না! একসাথে জন্ম,
একসাথে থাকো আর ভবিষ্যতের প্রতিজ্ঞা কী? সাথে আছি, সাথে থাকবো, সাথে যাবো নিজের
সুইট হোমে। বাবা আর বাচ্চার এত ভালবাসা আর কোথাও দেখেছো? যে কোনও বাচ্চা, যেখানেই
থাকুক, যেমনই হোক কিন্তু সাথে আছে আর সাথে যাবে। তো এরকম এই বিচিত্র, অনুপম আর গভীর
স্নেহ ও ভালোবাসার জন্মদিন উদযাপন করতে এসেছেন তিনি। হয় তোমরা সমুখে উদযাপন করছো,
অথবা দেশ বিদেশে চতুর্দিকে একই সময়ে একসাথে উদযাপন করছো।
বাপদাদা চতুর্দিকে দেখছেন যে কীভাবে বাচ্চারা সবাই উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে মনে মনে
বাঃ বাবা! বাঃ বাবা! বাঃ বার্থ ডে! এই গীত গাইছে। যদি সুইচ খোলা হয় তবে চতুর্দিকের
আওয়াজ, হৃদয়ের আওয়াজ, উৎসাহ-উদ্দীপনার আওয়াজ বাপদাদা শ্রবণ করছেন। বাপদাদা
বাচ্চাদের সকলের উৎসাহ দেখে বাচ্চাদেরও নিজেদেরকে দিব্য জন্মের পদ্ম-পদ্ম -পদ্মগুন
কল্যাণ কামনা জ্ঞাপন করছেন। বাস্তবে উৎসবের অর্থই হলো উৎসাহ উদ্দীপনায় থাক্কা। তো
তোমরা সবাই উৎসাহের সাথে এই উৎসব উদযাপন করছ। ভক্তরা নামও রেখেছে শিবরাত্রি।
আজ বাপদাদা সেই ভক্ত আত্মাদের অভিনন্দিত করছেন, যারা তোমাদের এই বিচিত্র জন্মদিনের
উদযাপন কপি করেছে। তোমরা জ্ঞান আর প্রেম রূপে উদযাপন করে থাকো, আর সেই ভক্ত আত্মারা
ভাবনা আর শ্রদ্ধার সাথে পালন করে, তোমাদের উদযাপিত উৎসব তারা খুব ভালো কপি করেছে।
তো আজ বাপদাদা সেই বাচ্চাদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন, কপি করার ব্যাপারে তারা ভালো
পার্ট প্লে করেছে। দেখ সব বিষয়ের কপি করেছে। কপি করতেও তো বুদ্ধি দরকার তাই না!
মুখ্য বিষয় তো হলো এই দিন ভক্তরাও ব্রত পালন করে, সেই ব্রত ভোজনপানের, ভাবনা দ্বারা
বৃত্তি শ্রেষ্ঠ বানানোর জন্য ব্রত পালন করে, প্রতি বছর তাদের ব্রত পালন করতে হয় আর
তোমরা কী ব্রত নিয়েছ? একবারই ব্রত গ্রহণ করে থাকো, বছর বছর ব্রত গ্রহণ করো না।
একবারই ব্রত গ্রহণ করেছ পবিত্রতার। সবাই তোমরা পবিত্রতার ব্রত নিয়েছ, নিশ্চিতরূপে
নিয়েছ? যারা নিশ্চিতভাবে নিয়েছ তারা হাত তোলো, পাক্কা, সামান্যতম কাঁচা নয়?
পাক্কা? আচ্ছা। আরেকটা প্রশ্নও আছে, ব্রত গ্রহণ করেছ, ভালো, অভিনন্দন কিন্তু
অপবিত্রতার মুখ্য পাঁচ সাথী আছে, ঠিক আছে! কাঁধ নাড়াও। আচ্ছা, পাঁচটারই ব্রত গ্রহণ
করেছ? নাকি দু' তিনটেরই নিয়েছো? কেননা, যেখানে পবিত্রতা আছে, সেখানে যদি অংশ
মাত্রও অপবিত্রতা থাকে তবে কি সম্পূর্ণ পবিত্র আত্মা বলা যাবে? আর তোমরা সব
ব্রাহ্মণ আত্মার পবিত্রতা ব্রাহ্মণ জন্মের প্রপার্টি, পার্সোনালিটি, রয়্যালটি। তো
চেক করো, সম্পূর্ণ পবিত্রতা এমন তো নয় যে, মুখ্য পবিত্রতার ব্যাপারে অ্যাটেনশন আছে
কিন্তু অন্যান্য যে সাথীরা আছে তাদেরকে আলগাভাবে ছেড়ে দিয়েছ! দাওনি তো? ছোটদের
প্রতি ভালবাসা রেখেছ আর বড়দের ঠিক করেছো! তো বাবার কি অনুমতি আছে, যে আরও চার
রয়েছে! পবিত্রতা শুধু ব্রহ্মচর্যকে বলা হয় না, ব্রহ্মাচারী... ব্রহ্মাচারী হওয়া
অর্থাৎ পবিত্রতার ব্রত পালন করেছ। অনেক বাচ্চা অধ্যাত্ম বার্তালাপ করার সময় বলে,
অধ্যাত্ম বার্তালাপ সবাই করো তো না? তো খুব মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে। বলে, বাবা মুখ্য
বিষয়ে ভালো তো না, অন্য ছোট ছোট সাধারণভাবে কখনো মন্সা সংকল্পে এসে যায়। মন্সায়
আসে, বাচাতে আসে না, তাছাড়া মন্সা তো কেউ দেখতে পায় না। আবার কেউ কেউ বলে ছোট ছোট
বাচ্চাকাচ্চার প্রতি ভালোবাসা থাকে তো না। তো এই চারের সাথেও ভালোবাসা হয়ে যায়?
ক্রোধ এসে যায়, মোহ এসে যায়, চাই না তবুও এসে যায়। বাপদাদা বলেন, যে কেউই চলে আসে
তার মানে তো দরজা খোলা থাকে তবেই আসে তো না! তাহলে দরজা খোলা কেন? দরজা খোলা -
দুর্বলতার, দুর্বলতার দরজা খোলা অর্থাৎ আহ্বান করা। তো আজকের দিনে তো বাবার আর
নিজের বার্থ ডে উদযাপন করছো, কিন্তু জন্মানোর সাথে সাথেই যে প্রতিজ্ঞা করেছ! প্রথম
প্রথম বাবা কী বরদান দিয়েছেন, মনে আছে তোমাদের? বার্থ ডে-র বরদান মনে আছে? কী
দিয়েছেন? পবিত্র ভব, যোগী ভব। বরদান সবার স্মরণে আছে তো না! স্মরণে আছে, ভুলে যাওনি
তো? পবিত্র ভব-র বরদান একটার জন্য দেননি, পাঁচটার জন্যই দিয়েছেন। তো আজ বাপদাদা কী
চাইছেন? বার্থ ডে উদযাপন করতে এসেছো, বাবারও জন্য উদযাপন করতে এসেছো তো না।
শিবরাত্রি উদযাপন করতে এসেছ, তো বার্থ ডে'র উপহার এনেছো, নাকি খালি হাতে এসেছো?
স্থাপনের ৭০ বছর সমাপ্ত হচ্ছে। স্মরণে আছে তো না! ৭০ বছর! ভাবো, হতে পারে তোমরা পরে
এসেছ কিন্তু স্থাপনের ৭০ বছর হয়ে গেছে তো না! হতে পারে এখন এসেছো, কিন্তু স্থাপনের
কর্তব্যে তোমরা সবাই সাথী, তাই না! হতে পারে আজ প্রথমবারই এসেছ। প্রথমবার যারা এসেছ
তারা হাত উঠাও। যারা প্রথমবার মধুবনে এসেছ মিলিত হতে তারা হাত উঠাও। লম্বা করে হাত
উঠাও। আচ্ছা। তোমাদের সকলেরই হয় এখন এক বছর হয়েছে বা দু' বছর হয়েছে, কিন্তু
নিজেদের কী বলে থাকো? ব্রহ্মাকুমারী, ব্রহ্মা কুমার নাকি পুরুষার্থী কুমার? কী বলে
থাকো? নিজেকে কী কেউ পুরুষার্থী কুমার বলো? ব্রহ্মা কুমারের সাইন লাগাও তো না! সবাই
বিকে লেখো নাকি পি.কে. লেখো? পুরুষার্থী কুমার! তো তোমাদের প্রতিজ্ঞা কী? সাথী থাকব,
সাথে যাব, কম্বাইন্ড থাকব, সুতরাং কম্বাইন্ড থাকতে সমতা চাই তো না! তো আমরা ৭০
বছরের উৎসব উদযাপন করছি। বাপদাদা দেখেছেন, টার্নের হিসেবে যে জোন এসেছে তারা ৭০
বছরের উৎসব উদযাপন করছে। তোমরা সম্মান সমারোহ উদযাপন করে থাকো। তোমরা সবাই উদযাপন
করো তো না! ব্যস শুধু ছোট ছোট গিফ্ট দিয়ে দাও, কিন্তু প্রথমতঃ আজ তো বার্থ ডে
উদযাপন করতে এসেছ, উদযাপন করতেই এসেছ তো না! পাক্কা না? দ্বিতীয়তঃ, ৭০ বছর সমাপ্ত
হয়েছে, তাইতো সম্মাননা অনুষ্ঠানও উদযাপন করছ, বার্থ ডেও উদযাপন করছ। তার জন্য কী
উপহার দেবে? ট্রে দিয়ে দেবে, চাদর দিয়ে দেবে? কী উপহার এনেছো? ঠিক আছে, রুপোর
গ্লাস দিয়ে দেবো! কিন্তু আজকের দিনে বাপদাদার শুভ আশা রয়েছে নিজের আশার দীপক
বাচ্চাদের প্রতি। বাবা কী বলবেন তোমাদের! প্রথম লাইনে যারা আছ তারা বলো, বাবা বলবেন!
বলা বা শোনা বারণ আছে কি? এভাবে এক কানে শুনে হৃদয়ে সমাহিত করা। বের করে দেবে না
তো, এতও তো নেই, কিন্তু হৃদয়েই সমাহিত করতে হয়। তো আজকের দিনে বাবা বলবেন! প্রথম
লাইনের তোমরা বলো, কাঁধ নাড়াও, টিচার্স কাঁধ নাড়াও। ঝাণ্ডা ভালই নাড়াচ্ছ। ডবল
ফরেনার্স বাবা বলবেন?
নিজেকে এতে জুড়তে হবে, তবেই বলো হ্যাঁ, এমনি বলে দিও না। কেননা, এই ৭০ বছরে দেখ
বাপদাদা গড়িমসি, আলস্য আর বাহানাবাজির খেলা দেখে নিয়েছেন। আচ্ছা ঠিক আছে ৭০ নয়তো
৫০, ৪০, ৩০, ২০! কিন্তু এত সময় তো বাচ্চাদের এই তিন খেলা অনেক দেখেছেন।
তো আজকের দিনে ভক্ত জেগে থাকে, ঘুমায় না, তো তোমরা সব বাচ্চার জাগরণ কোনটা? কোন
নিদ্রায় বারবার নিদ্রিত হও? দীর্ঘসূত্রিতা, আলস্য আর বাহানা বাজির নিদ্রায় আরামে
নিদ্রিত হও। তো আজ বাপদাদা এই তিন বিষয়ে সব সময় জাগরণ দেখতে চান। কখনো দেখ ক্রোধ
আসে, কখনো অভিমান আসে, লোভ আসে; কারণ হিসেবে কী বলো তোমরা? বাপদাদা একটা ট্রেডমার্ক
দেখতে পান, যে কোনো ব্যাপার হলো তো কী বলো তোমরা - এরকম তো চলেই, তোমরা জানো না কে
করে! কিন্তু এই কথাই তোমরা বলে থাকো - এরকম তো হয়েই থাকে, এরকম তো চলতেই থাকে, এটা
থোরাই নতুন কোনো ব্যাপার, এরকম হয়ই। এরকমটা কী? গড়িমসি নয়? এও তো করে, মেজরিটি
ক্রোধের থেকে বাঁচার জন্য এ' করেছে, তবে হয়েছে। আমি ভুল (রং) করেছি সেটা বলবে না।
এ' করেছে তো না, এটা হয়েছে তো না, সেইজন্য হয়েছে। অন্যের উপর দোষ দেওয়া অনেক সহজ।
এ' যদি না করে তো হবে না। আর বাবা বলেছেন সেটা হবে না। সে যদি করে তবে হবে, বাবার
শ্রীমৎ অনুসারে কি ক্রোধ শেষ করতে পারো না? আজকাল ক্রোধের বাচ্চা প্রভাব, প্রভাবও
বিভিন্ন রকমের হয়। তাহলে কি আজকে অন্য চারের ব্রত গ্রহণ করবে? যেমন মেজরিটি প্রথম
বিষয়ে দৃঢ় সঙ্কল্প করেছে। অন্য চারের সংকল্পও কি একইরকম? এই অজুহাত দিও না যে এ'
এরকম করেছে তবেই আমার দ্বারা হয়েছে। আর বাবা যে বারবার বলছেন সেটা মনে নেই, অন্যে
যেটা করেছে সেটা মনে আছে! তো এটা বাহানাবাজিই তো হলো তাই না! তো আজ বাপদাদা বার্থ
ডে গিফ্ট চান এই তিন বিষয়ে যা চার বিষয়ে তোমাদেরকে আগ্রহশূন্য করে দেয়।
সংস্কারের মোকাবিলা তো তোমাদের করতেই হবে। সংস্কারের মোকাবিলা নয়, এটা পেপার। এক
জন্মের পড়াশোনা আর সমগ্র কল্পের প্রাপ্তি। অর্ধেক কল্প রাজত্বের ভাগ্য, অর্ধেক
কল্প পূজ্য। এক জন্মে সমগ্র কল্পের প্রাপ্তি, তাও ছোট জন্ম, ফুল জন্ম নয় ছোট জন্ম।
তো সাহস কি আছে তোমাদের? যারা মনে করছ অবশ্যই সাহস রাখবো, এটা নয় পুরুষার্থ করবো,
অ্যাটেনশন রাখবো... বো বো (ভবিষ্যৎ সূচক শব্দ) প্রয়োজন নেই। ছোট বাচ্চা নও তোমরা,
৭০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। সেতো তিন চার মাসের বাচ্চারা বো বো করে। তোমরা তো বাবার সাথী
তো না! বিশ্ব কল্যাণকারী, তার তো ৭০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। বাপদাদা তোমাদের হাত উঠাতে
বলছেন না কেননা, বাপদাদা দেখেছেন হাত উঠিয়েও কখনো কখনো অমনোযোগী হয়ে যাও। কিন্তু
ভাবছ যা কিছুই হয়ে যাক, পাহাড় সমান পেপারও যদি এসে যায়, তবুও পাহাড়কে তুলো
বানিয়ে দেব, এমন দৃঢ় সংকল্প করার সাহস আছে তোমাদের? কেননা, তোমরা সংকল্প করো খুব
ভালো, বাপদাদাও খুশি হন যখন তোমরা সেই সংকল্প করো। কিন্তু কী হয়, ৭০ বছর তো
ঢিলেঢালাভাবে যেতে দিয়েছ কিন্তু বাপদাদা দেখছেন যে সময়ের কোনো ভরসা নেই আর এই
জ্ঞানের আধারে সব পুরুষার্থের বিষয়ে বহুকালের হিসেব রয়েছে। আচ্ছা তোমরা বলবে এখনই
করে নেবো বহুকালের হিসেব। কেননা প্রাপ্তি চাই! প্রত্যেকে কী প্রাপ্তি চাও? এখনই
তোমাদের হাত উঠিয়ে দিচ্ছি, রামসীতা হবে কেউ? যারা রামসীতা হতে চাও তারা হাত উঠাও,
রাজত্ব লাভ হবে। কেউ কেউ হাত ওঠাচ্ছে। রাম সীতা হবে, লক্ষ্মী নারায়ণ হবে না?
ওঠাচ্ছে! দেখ, তোমরা দেখ ওঠাচ্ছে। ফরেনার্স ওঠাচ্ছে? ডবল ফরেনারদের মধ্যে থেকে কেউ
ওঠায়? লক্ষ্মী নারায়ণ হওয়া অর্থাৎ বহুকালের রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত করা। যখন
বহুকালের ভাগ্য প্রাপ্ত করতে চাও, তখন সব বিষয়ে বহুকাল প্রয়োজন তো না! এখন ৬৩
জন্মের বহুকালের সংস্কার রয়েছে, তাইতো তোমরা বলে থাকো - আমার ভাব ছিল না, ভাবনা
ছিল না, কিন্তু ৬৩ জন্মের সংস্কার! তো বহুকালের হিসেব আছে তো না! সংকল্পে দৃঢ়তার
ঘাটতি থেকে যায় - হয়ে যাবে, এরকম চলে, চলতে দাও, কে হয়েছে, এছাড়া একটা কথা তো
সবারই খুব ভালোই আসে, বাপদাদা সব কথা নোট করেছেন। নিজস্ব মনোবল যখন কাজ করে না, তখন
বলে মহারথীও এরকম করে, আমি করেছি তো কী হয়েছে? কিন্তু বাপদাদা জিজ্ঞাসা করছেন - যে
সময় মহারথী ভুল করে সেই সময় সে মহারথী থাকে? তাহলে মহারথীর নাম কেন খারাপ করো?
সেই সময় সে মহারথীই নয়, তো মহারথী ব'লে নিজেকে হীনবল করা এটা নিজের সাথে প্রতারণা
করা। অন্যকে দেখা সহজ, নিজেকে দেখতে সামান্য সাহস চাই। তো আজ বাপদাদা হিসেব নিতে
এসেছেন। কিন্তু হিসেবনিকেশ শেষ করার গিফ্ট নিতে এসেছেন। সেইজন্য বাপদাদা এটাই চান,
দুর্বলতা আর বাহানাবাজির হিসেবনিকেশ অনেক বড় দেনাপাওনা (পুস্তক), এটাকে নিকেশ (সমাপ্ত)
করতে হবে। তো প্রত্যেকে যারা মনে করো আমি করে দেখাবো, করতেই হবে, ঝুঁকতেই হবে,
বদলাতেই হবে, পরিবর্তন সেরিমনি উদযাপন করতেই হবে। যারা মনে করো সংকল্প করবে তারা
হাত উঠাও। দৃঢ় নাকি সাধারণ? সাধারণ সংকল্পও হয় আবার দৃঢ় সংকল্পও হয়। তো আজ তোমরা
সবাই দৃঢ় সংকল্প নিয়েছ? দৃঢ়ভাবে নিয়েছ? মধুবনের তোমরা বড় করে হাত তোলো, এটুকু
নয়। মধুবনের যারা, এখানে বসে আছে। কাছে বসার অনেক চান্স আছে। মধুবনের যারা, একদম
সামনে বসে আছে। প্রথম সিট মধুবনের লাভ হয়, বাপদাদা খুশি। প্রথমে বসে আছ, প্রথমেই
থাকতে হবে।
তো আজকের গিফ্ট সুন্দর হয়েছে না! বাপদাদাও খুশি কেননা তোমরা একা নও। তোমাদের
নিজেদের রাজধানীতে তোমাদের রয়্যাল ফ্যমিলি, তোমাদের রয়্যাল প্রজা, তারপর দ্বাপর
থেকে তোমাদের ভক্ত, সতঃ রজঃ তমোগুণী, তিন প্রকারের ভক্তের লাইন আছে তোমাদের পিছনে।
যা তোমরা করবে সেটা তোমাদের পিছনের ওরা করবে। তোমরা যদি অজুহাত দাও তবে তোমাদের
ভক্তরাও অনেক অজুহাত দেবে। এখন ব্রাহ্মণ পরিবারও তোমাদের দেখে ভুল কপি করবে, এ
ব্যাপারে তারা হুঁশিয়ার তো না! তো এখন দৃঢ় সংকল্প করো, সংস্কারের সংঘর্ষ হোক বা
স্বভাবের মতভেদ, তৃতীয় বিষয় দুর্বলতার - কারও ব্যাপারে কেউ মিথ্যা কথা বলে দেয়,
তো কিছু বাচ্চা বলে আমার বেশি ক্রোধ আসে মিথ্যা কথায়। কিন্তু সত্য বাবার থেকে সেটা
ভেরিফাই করিয়েছো? সত্য বাবা তোমাদের সাথে আছেন, সমস্ত মিথ্যা দুনিয়া যদি একদিকে
থাকে আর এক বাবা তোমাদের সাথে থাকেন, তবে তোমাদের বিজয় নিশ্চিত হয়েই আছে। কেউ
তোমাদের নাড়াতে পারে না, কেননা বাবা তোমাদের সাথে আছেন। তারা বলছে মিথ্যা, তো
মিথ্যাকে মিথ্যাই করে দাওনা, বাড়াও কেন? তো আজ এই বাহানাবাজি বাবার ভালো লাগেনি -
এটা হয়েছে, এটা হয়েছে, এটা হয়েছে... এটা এটা এর গীত সমাপ্ত হওয়া উচিত। ভালো
হয়েছে, ভালো হবে, ভালো থাকবো, সবাইকে ভালো বানাবো। ভালো ভালো ভালোর গীত গাও। তো
পছন্দ তোমাদের? পছন্দ? বাহানাবাজি শেষ করবে? করবে? দুটো দুটো হাতই তোলো। দুটো দুটো
হাত তোলো। আচ্ছা। হ্যাঁ, ভালো করে নাড়াও। আচ্ছা, যারা দেখছে তারাও হাত নাড়াচ্ছে।
যেখান থেকেই দেখছো হাত নাড়াও। তোমরা তো নাড়াচ্ছো। আচ্ছা সবাই নিচে নামাও, এখন
নিজের পরিবর্তনের তালি বাজাও। (সবাই জোরে তালি বাজিয়েছে) আচ্ছা।
আচ্ছা এখন প্রত্যেকে এক মিনিটের জন্য দৃঢ় সংকল্প স্বরূপে ব'সো, বাহানাবাজি, আলস্য,
অমনোযোগিতা সবসময় দৃঢ় সংকল্প দ্বারা সমাপ্ত করে বহুকালের হিসেব জমা করতেই হবে। যা
কিছু হয়ে যাক, কিছু দেখার নেই কিন্তু বাবার হৃদয় সিংহাসনাসীন হতেই হবে, বিশ্বের
সিংহাসনে আসীন হতেই হবে। এই দৃঢ় সংকল্প স্বরূপে সবাই ব'সো। আচ্ছা।
চতুর্দিকের, যারা সদা উৎসাহ-উদ্দীপনার অনুভবে থাকে, সদা দৃঢ়তা সফলতার চাবি কার্যে
প্রয়োগ করে, সদা বাবার সাথে এবং সব কার্যে সাথী হয়ে থাকে, সদা একনামী আর ইকনমি,
একাগ্রতার স্বরূপে সবচেয়ে সামনে উড়তে থাকে, বাপদাদার এমন অতি আদরের, হারানিধি,
বিশেষ বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।
বরদান:-
সীমাবদ্ধ দুনিয়ার সমুদয় ইচ্ছা ত্যাগ করে প্রকৃত
তপস্বী মূর্ত ভব
সীমাবদ্ধ দুনিয়ার সমুদয় ইচ্ছা ত্যাগ করে সত্য সত্য
তপস্বী মূর্ত হও। তপস্বী মূর্ত অর্থাৎ সীমাবদ্ধতার ইচ্ছা মাত্র অবিদ্যা রূপ। যে
নেওয়ার সংকল্প করে সে অল্পকালের জন্য নেয় কিন্তু সদাকালের জন্য হারায়। তপস্বী
হওয়াতে বিশেষ বিঘ্ন রূপ এই অল্পকালের ইচ্ছা, সেইজন্য এখন তপস্বী মূর্ত হওয়ার
প্রমাণ দাও অর্থাৎ সীমাবদ্ধতার মান মর্যাদার গ্রহীতা ভাব ত্যাগ করে বিধাতা হও। যখন
বিধাতা ভাবের সংস্কার ইমার্জ হবে তখন অন্য সব সংস্কার আপনা থেকেই নিয়ন্ত্রিত হবে।
স্লোগান:-
কর্মের ফলের সূক্ষ্ম কামনা রাখাও ফল পাকার আগেই খেয়ে
ফেলা।
অব্যক্ত ইশারা :- এখন লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে
যোগকে জ্বালা রূপ বানাও পাপ কাটেশ্বর বা পাপ হরণী তখনই হতে পারো যখন স্মরণ জ্বালা
স্বরূপ হবে। এই স্মরণ দ্বারা অনেক আত্মার নির্বলতা দূর হবে, সেইজন্য প্রতি সেকেণ্ড
প্রতিটা শ্বাস বাবা আর তুমি কম্বাইন্ড হয়ে থাকো। কোনও সময় সাধারণ স্মরণ যেন না হয়।
স্নেহ আর শক্তি দুই রূপ কম্বাইন্ড হবে।