28.10.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
সদ্গুরুর সর্বপ্রথম শ্রীমৎ হলো দেহী-অভিমানী হও, দেহ-অভিমান পরিত্যাগ করো"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমরা এইসময় কোনো ইচ্ছা চাহিদাই রাখতে পারো না - কেন?
উত্তরঃ
কারণ তোমরা হলে
বাণপ্রস্থী। তোমরা জানো যে, এই চোখ দিয়ে যাকিছু দেখছি সে'সবই বিনাশ হয়ে যাবে। এখন
তোমাদের কিছুই চাহিদা নেই, সম্পূর্ণরূপে বেগার হতে হবে। যদি এমন কোন দামী জিনিস
পরিধান করো তবে তা আকর্ষণ করবে, পুনরায় দেহ-অভিমানে আবদ্ধ হয়ে পড়বে। এতেই পরিশ্রম
রয়েছে । যখন পরিশ্রম করে সম্পূর্ণ দেহী-অভিমানী হবে তখন বিশ্বের রাজত্ব পাবে।
ওম্ শান্তি ।
এই যে ১৫
মিনিট বা আধা ঘন্টা বাচ্চারা বসে রয়েছে, বাবাও ১৫ মিনিটের জন্য বসান কারণ হলো এটাই
যে, নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। এই শিক্ষা একবারই পাওয়া যায়,
পুনরায় আর কখনো পাওয়া যাবে না। সত্যযুগে এভাবে বলবে না যে, আত্ম-অভিমানী হয়ে বসো।
এ'কথা একমাত্র সদ্গুরুই বলেন অর্থাৎ ওঁনার উদ্দেশ্যেই বলা হয়, একমাত্র সৎগুরুর সঙ্গে
স্বর্গবাস, আর সব সঙ্গে (অসৎসঙ্গে) নরকবাস বা ডুবে যাওয়া। এখানে এক পিতাই তোমাদের
দেহী-অভিমানী বানান। কারণ তিনি নিজেই তো দেহী(অশরীরী), তাই না। বোঝাবার জন্য বলেন,
আমি সকল আত্মাদের পিতা।ওঁনার তো অশরীরী অর্থাৎ আত্মা হয়ে বাবাকে অর্থাৎ নিজেকে
স্মরণ করার প্রয়োজন নেই। স্মরণও তারাই করবে যারা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের হবে।
এমন(দেবতা) তো অনেকেই হয় কিন্তু পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে। এ অতি বোঝবার মতন
এবং বোঝাবার মতন বিষয়। পরমপিতা পরমাত্মা তোমাদের পিতাও আবার তিনি নলেজফুলও।
আত্মাতেই জ্ঞান থাকে, তাই না। তোমাদের আত্মা সংস্কার নিয়ে যায় (পরজন্মে)। বাবার
মধ্যে প্রথম থেকেই সংস্কার থাকে। তিনিই পিতা একথা তো সকলেই মানে। এছাড়া ওঁনার মধ্যে
দ্বিতীয় আরেকটি গুণ রয়েছে যে, ওঁনার মধ্যে ওরিজিনাল নলেজ (সত্যজ্ঞান) রয়েছে। তিনি
বীজ-স্বরূপ। বাবা যেমন বসে-বসে তোমাদের-কে বোঝান, ঠিক তেমনই তোমাদেরও অন্যদের বোঝাতে
হবে বাবা মনুষ্য সৃষ্টির বীজরূপ। তুমি তিনিই সত্য, চৈতন্য, নলেজফুল, ওঁনার মধ্যেই
এই সমগ্র সৃষ্টি রূপী কল্পবৃক্ষের (ঝাড়) নলেজ রয়েছে। আর কারোরই এই বৃক্ষের নলেজ নেই।
বৃক্ষের বীজ হলেন বাবা, যাঁকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। যেমন আমগাছ, এর অর্থাৎ
আমগাছের সৃষ্টি তো বীজকেই বলা হবে, তাই না। তাহলে এ(বীজ) হয়ে গেল বাবা(বৃক্ষের
সৃষ্টিকর্তা), কিন্তু ওটা হলো জড়। যদি চৈতন্য হতো তবে তো এ(বৃক্ষ) জানত, তাই না যে
-- আমার থেকে বৃক্ষের সৃষ্টি কীভাবে হয়।কিন্তু ওটা হলো জড় বীজ যার বীজ (মাটির) নীচে
বপন করা হয়। আর এ হলো চৈতন্য বীজ-স্বরূপ। এই বীজ থাকে উপরে, তোমরাও মাস্টার বীজরূপ
হয়ে যাও। বাবার কাছ থেকে তোমরা নলেজ পাও। তিনি হলেন সর্বোচ্চ। তোমরা পদও উচ্চ
প্রাপ্ত কর। স্বর্গে তো উচ্চপদ চাই, তাই না। একথা মানুষ জানে না। স্বর্গে
দেবী-দেবতাদের রাজধানী থাকে। রাজধানীতে রাজা, রানী, প্রজা, ধনী-গরীব ইত্যাদি এসব পদ
কীভাবে হবে। এখন তোমরা জানো যে, আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা কীভাবে হচ্ছে
? কে করছেন ? ভগবান। আবার বাবা বলেন যে, বাছা! যাকিছু হচ্ছে তা ড্রামার প্ল্যান
অনুসারে। সকলেই ড্রামার বশে অর্থাৎ ড্রামার প্ল্যানে আবদ্ধ। বাবা বলেন, আমিও
ড্রামার বশে। আমারও ড্রামায় পার্ট রয়েছে। আমি সেই পার্টই প্লে করি। তিনি হলেন
সুপ্রীম আত্মা। ওঁনাকে পরমপিতা বলা হয়, আর সকলকে বলা হয় ব্রাদার্স। আর কাউকে ফাদার,
টিচার, গুরু বলা হয় না। তিনি সকলেরই পরমপিতা, শিক্ষক, সৎগুরু। একথা ভুলে যাওয়া উচিৎ
নয়। কিন্তু কিছু বাচ্চারা ভুলে যায়, কারণ পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে রাজধানী
স্থাপিত হচ্ছে। প্রত্যেকে যেমন পুরুষার্থ করে তা (স্থূলে) শীঘ্রই স্পষ্টভাবে জানতে
পারা যায় -- এরা বাবাকে স্মরণ করে কি করে না? দেহী-অভিমানী হয়েছ কি হওনি ? এ জ্ঞানে
তীক্ষ্ণ - তা তার অ্যাক্টিভিটি থেকেই বোঝা যায়। বাবা কাউকে কিছু সরাসরি বলেন না।
যেন তারা অচৈতন্য না হয়ে যায়। যেন অনুতাপ না করে যে, বাবা একথা কী বললেন, আর সকলেই
বা কী বলবে! বাবা বলতে পারেন যে, অমুকে-অমুকে কেমন সার্ভিস করছে। সার্ভিসের উপরেই
তো সবকিছু। বাবাও তো এসে সার্ভিস করেন, তাই না। বাচ্চাদেরই তো বাবাকে স্মরণ করতে হবে।
স্মরণের সাবজেক্টই কঠিন। বাবা যোগ আর জ্ঞান শেখান। জ্ঞান অতি সহজ। স্মরণেই তো
অনুত্তীর্ণ হয়, দেহ-অভিমান চলে আসে। তখন এই চাই, এই ভাল জিনিসটা চাই। এমন-এমন
চিন্তা-ভাবনা আসে।
বাবা বলেন, এখানে তো
তোমরা বনবাসে রয়েছো, তাই না। তোমাদের এখন বাণপ্রস্থে যেতে হবে। তাই এমন কোনও জিনিসই
(দামী) তোমরা পরিধান করতে পারো না। তোমরা তো বনবাসে রয়েছো, তাই না। যদি এমন কোনো
পার্থিব বস্তু থাকে তবে তা আকর্ষণ করবে। এমনকি শরীরও আকর্ষণ করবে। মুহূর্তে-মুহূর্তে
দেহ-অভিমানে নিয়ে আসবে। এতে পরিশ্রম আছে। পরিশ্রম ব্যতীত বিশ্বের রাজত্ব (বাদশাহী)
কি পাওয়া যাবে, না পাওয়া যাবে না। পরিশ্রমও তো পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে
প্রতিকল্পে করে এসেছ, এখনও করছ। রেজাল্টের প্রত্যক্ষতাও হতে থাকবে। স্কুলেও যেমন
নম্বরের ক্রমানুসারে ট্রান্সফার হয়। শিক্ষক বুঝতে পারে যে, অমুকে ভাল পরিশ্রম করেছে।
এর পড়াবার শখ আছে, এমনই মনে (ফীলিং) হয়। সেখানে তারা এক ক্লাস থেকে ট্রান্সফার হয়ে
দ্বিতীয় ক্লাসে, আবার তৃতীয়তে চলে যায়। এখানে একবারই পড়তে হয়। পরে যত তোমরা এগিয়ে
যেতে থাকবে ততই সবকিছু জানতে পারবে। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। অবশ্যই উচ্চপদ প্রাপ্ত
করবে। একথা তো জানে যে, কেউ রাজা-রানী হয়, কেউ-কেউ অন্যকিছু হয়ে যায়। প্রজাও অনেক
হয়। সবকিছু তাদের অ্যাক্টিভিটির দ্বারা বোঝা যায়। এরা কত দেহ-অভিমানে থাকে, এদের
সঙ্গে বাবার কতটা ভালবাসা রয়েছে। বাবার সঙ্গেই তো প্রেম থাকা উচিত, তাই না। ভাইদের
সঙ্গে নয়। ভাইদের ভালবাসা থেকে কিছু প্রাপ্ত হয় না। সকলেই একই পিতার থেকে
উত্তরাধিকার পাবে। বাবা বলেন - বাচ্চারা ! নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমাকে অর্থাৎ
বাবাকে স্মরণ করো তবেই তোমাদের পাপ খন্ডন হবে। মুখ্যকথাই হলো এটা। স্মরণের দ্বারাই
শক্তি প্রাপ্ত করবে। দিনে-দিনে ব্যাটারী চার্জড (পরিপূর্ণ) হতে থাকবে। কারণ জ্ঞানের
ধারণা হতে থাকে, তাই না। তীর নিশানায় বিদ্ধ হতে থাকে। দিনে-দিনে তোমাদের উন্নতি
পুরুষার্থের নম্বর অনুসারে হতে থাকে। ইনিই একমাত্র বাবা, শিক্ষক, সৎগুরু, যিনি
দেহী-অভিমানী হওয়ার শিক্ষা দেন। আর কেউ দিতে পারে না। আর সকলে হলো দেহ-অভিমানী,
আত্ম-অভিমানীর নলেজ কেউ পায় না। কোনো মানুষ একাধারে বাবা, শিক্ষক, গুরু হতে পারে
না। প্রত্যেকেই নিজের নিজের পার্ট প্লে করে। তোমরা সাক্ষী হয়ে দেখো। সম্পূর্ণ নাটকই
তোমাদের সাক্ষীদ্রষ্টা হয়ে দেখতে হবে। অভিনয়ও করতে হবে। বাবা হলেন ক্রিয়েটার,
ডায়রেক্টর, অ্যাক্টর। শিববাবা এসে নিজের পার্ট প্লে করেন। তিনি তো সকলের পিতা, তাই
না। তিনি আসেন তাঁর পুত্র এবং কন্যাসন্তানদের উত্তরাধিকার দিতে। একমাত্র তিনিই হলেন
পিতা, আর বাকি সকলে হলো পরস্পরের ভাই। উত্তরাধিকার একমাত্র বাবার কাছ থেকেই পাওয়া
যায়। এই দুনিয়ার কোন জিনিস বুদ্ধিতে অর্থাৎ স্মরণে যেন না আসে। বাবা বলেন, যা কিছু
দেখছো, এসবই বিনাশী। এখন তোমাদের ঘরে ফিরে যেতে হবে। ওরা (সন্ন্যাসী) তো ব্রহ্মকে
স্মরণ করে অর্থাৎ ঘরকে স্মরণ করে। মনে করে, ব্রহ্ম-তে বিলীন হয়ে যাবে। একেই বলা হয়
অজ্ঞানতা। মানুষ মুক্তি-জীবনমুক্তির বিষয়ে যাকিছু বলে তা ভুল, যা কিছু যুক্তি রচনা
করে, তা সবই ভুল। সঠিক পথ একমাত্র বাবা-ই বলেন। বাবা বলেন, ড্রামার প্ল্যান অনুসারে
আমি তোমাদের রাজারও রাজা বানিয়ে দিই। কেউ বলে, আমাদের বুদ্ধিতে বসে না, বাবা আমাদের
মুখ খোলাও, কৃপা করো। বাবা বলেন, এখানে বাবার কিছু করার কোন কথাই নয়। মুখ্যকথা হলো
তোমাদের ডায়রেক্শন অনুসারে চলতে হবে। সঠিক ডায়রেক্শন বাবার কাছ থেকেই পাওয়া যায়,
বাকি সব হলো মানুষের ভুল মত (ডায়রেক্শন) কারণ এইসবের মধ্যে ৫ বিকার রয়েছে, তাই না।
অধঃপতনে যেতে-যেতে অপবিত্র হতে থাকে। কী-কী ধরণের রিদ্ধি-সিদ্ধি ইত্যাদির প্রয়োগ
করতে থাকে। তাতে কিন্তু সুখ নেই। তোমরা জানো যে, এ হলো অল্পকালের সুখ। একে বলা হয়
কাক-বিষ্ঠাসম সুখ। সিঁড়ির চিত্রের মাধ্যমে খুব ভালো ভাবে বোঝাতে হবে আর বৃক্ষের
উপরেও বোঝাতে হবে। যেকোন ধর্মাবলম্বীকে তোমরা দেখাতে পারো, তোমাদের যারা ধর্মস্থাপক,
তারা অমুক-অমুক সময়ে আসে। খ্রাইস্ট অমুক সময়ে আসবে। যারা অন্যান্য ধর্মে কনভার্ট হয়ে
গেছে, তাদের এই ধর্ম ভালো লাগবে, তৎক্ষণাৎ তারা বেরিয়ে আসবে। এছাড়া অন্য কারোর ভালো
লাগবে না, তাহলে তারা পুরুষার্থ করবে কীভাবে। মানুষ মানুষকে ফাঁসী কাঠে ঝোলায়।
তোমাদের একমাত্র বাবার স্মরণেই থাকতে হবে। এ হলো অতি মিষ্টি-মধুর ফাঁসী (স্মরণের
যোগ)। আত্মার বুদ্ধিযোগ বাবার দিকেই থাকে। আত্মাকে বলা হয় বাবাকে স্মরণ কর। এ হলো
স্মরণের ফাঁসী। বাবা তো উপরে থাকেন, তাই না। তোমরা জানো যে, আমরা হলাম আত্মা,
আমাদের বাবাকেই স্মরণ করতে হবে। এই শরীর এখানেই ত্যাগ করতে হবে। তোমাদের মধ্যে
সম্পূর্ণ জ্ঞানই রয়েছে। তোমরা এখানে বসে কী করছ ? বাণীর ঊর্ধ্বে যাওয়ার (সাইলেন্সে)
জন্য তোমরা পুরুষার্থ করো। বাবা বলেন, সকলকেই আমার কাছে আসতে হবে। তবে তো তিনি হলেন
কালেরও কাল (মহাকাল), তাই না। ওই কাল (মৃত্যু) তো একজনকে নিয়ে যায়, সেই কাল বলেও
কেউ নেই যে এসে নিয়ে যায়। এ ড্রামায় নির্ধারিত হয়েই রয়েছে। আত্মা সময় হলে নিজে
থেকেই চলে যায়। এই বাবা সকল আত্মাদের-কেই নিয়ে যাবেন। তোমাদের সকলের বুদ্ধিযোগ এখন
নিজেদের ঘরে ফিরে যাওয়ার দিকেই রয়েছে। শরীর ত্যাগ করাকে মৃত্যু বলা হয়। শরীর শেষ হয়ে
গেছে, তাই আত্মা চলে গেছে। বাবাকে ডাকাও হয় এইজন্য যে, বাবা এসে আমাদের এই সৃষ্টির
থেকে নিয়ে যাও। এখানে আমরা থাকব না। ড্রামার প্ল্যান অনুসারে এখন ফিরে যেতে হবে।
তারা বলা, বাবা এখানে অপার দুঃখ রয়েছে। এখন এখানে থাকতে চাই না। এ অতি অপবিত্র
(ছিঃ-ছিঃ) দুনিয়া। মরতে তো অবশ্যই হবে। সকলেরই এখন বাণপ্রস্থ অবস্থা। এখন বাণীর
ঊর্ধ্বে যেতে হবে। তোমাদেরকে কোনো কাল (অকালমৃত্যু) গ্রাস করবে না। তোমরা তো
খুশী-পূর্বক যাও। শাস্ত্রাদি যা কিছু আছে তা সবই হলো ভক্তিমার্গের, এসব পুনরায় হবে।
এটাই ড্রামার ওয়ান্ডারফুল কথা। এসব টেপ, ঘড়ি যা কিছু এইসময় দেখছ, এসব পুনরায় হবে।
এতে বিভ্রান্ত হওয়ার মতন কিছু নেই। ওয়ার্ল্ডের হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী রিপীটের অর্থই হলো
তার হুবহু রিপীট। তোমরা এখন জানো, আমরা পুনরায় শূদ্র, বৈশ্য, ক্ষত্রিয়, ব্রাহ্মণ
থেকে দেবী-দেবতা হচ্ছি, এমনই আবার (৫ হাজার পর) হব। এর থেকে এতটুকুও পৃথক কিছু হতে
পারে না। এসব বোঝার মতো বিষয়।
তোমরা জানো, তিনি
অসীম জগতের পিতাও, টিচার-সৎগুরুও। এমন কোনো মানুষ হতে পারে না। ওঁনাকে তোমরা বাবা
বলো। এঁনাকে প্রজাপিতা ব্রহ্মা বল। ইনিও বলেন, তোমরা আমার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পাবে
না। বাপু গান্ধীজীও প্রজাপিতা ছিলেন না, তাই না। বাবা বলেন, এই কথায় তোমরা
বিভ্রান্ত হয়োনা। তাদেরকে বল যে, আমরা ব্রহ্মাকে ভগবান বা দেবতা ইত্যাদি বলিই না।
বাবা বলেছেন, এঁনার অনেক জন্মের অন্তিমে, বাণপ্রস্থ অবস্থায় আমি এঁনার মধ্যে প্রবেশ
করি সমগ্র বিশ্বকে পবিত্র করার জন্য। বৃক্ষেও দেখাও, দেখ একদম পিছনে দাঁড়িয়ে রয়েছে।
এখন সকলেই তমোপ্রধান জর্জরিত অবস্থায় রয়েছে, তাই না। ইনিও তমোপ্রধান হয়েই দাঁড়িয়ে
রয়েছেন, সেইরকমই ফীচার্স (আকৃতি)। এঁনার মধ্যে বাবা প্রবেশ করে এঁনার নাম রাখেন
ব্রহ্মা। তা নাহলে তোমরা বলো, ব্রহ্মার নাম কোথা থেকে এলো? ইনি হলেন পতিত, উনি হলেন
পবিত্র। ওই পবিত্র দেবতারাই পুনরায় ৮৪ জন্ম নিয়ে পতিত মানুষ হয়ে যায়। ইনিও(ব্রহ্মা)
মানুষ থেকে দেবতায় পরিণত হবেন। মানুষ থেকে দেবতায় পরিনত করো, এ তো বাবারই কাজ। এসব
অতি ওয়ান্ডারফুল বোঝার মতো বিষয়। ইনিই (ব্রহ্মা) উনি (বিষ্ণু) হন মাত্র এক সেকেন্ডে,
উনি ৮৪ জন্ম নিয়ে পুনরায় ইনি(ব্রহ্মা) হন। এঁনার মধ্যে বাবা প্রবেশ কর, বসে পড়ান,
তোমরাও পড়। এঁনাদেরও তো কুল (ঘরানা) রয়েছে। লক্ষ্মী-নারায়ণ, রাধা-কৃষ্ণের মন্দির আছে।
কিন্তু একথা কেউ জানে না যে, প্রথমে রাধা-কৃষ্ণ হলো প্রিন্স-প্রিন্সেজ, যারা পরে
লক্ষ্মী-নারায়ণ হয়। ইনিই বেগার তথা প্রিন্স হবেন। প্রিন্স থেকে আবার বেগারে পরিনত
হয়। কত সহজ কথা। ৮৪ জন্মের কাহিনী এই দুই চিত্রতে রয়েছে। ইনিই(ব্রহ্মা) উনি (বিষ্ণু)
হয়ে যান। তারা হলেন যুগল, তাই ৪ ভুজা দেওয়া হয়েছে। এটাই প্রবৃত্তি মার্গ, তাই না।
এক সৎগুরুই তোমাদের পার করে দেন। বাবা কত ভালভাবে বোঝান, আবার দৈবী-গুণও ধারণ করা
চাই। স্ত্রী-দের বিষয়ে স্বামীদের বা স্বামীদের বিষয়ে স্ত্রী-দের যদি জিজ্ঞাসাবাদ করা
হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ পরস্পরের কমজোরী বা খুঁত বের করে দেবে। এই বিষয়ে হয় তারা বলবে, এ
আমাকে বিরক্ত করে অথবা একথা বলবে, আমরা দু'জনেই সঠিকভাবে চলি। আর তা নাহলে বলবে,
কেউ কাউকে বিরক্ত করি না, দুজনেই পরস্পরের সাহায্যকারী, সাথী হয়ে চলি। কেউ-কেউ আবার
পরস্পরকে অধঃপতনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বাবা বলেন, এখানে স্বভাবকে পরিবর্তন করতে
হয়। ওসব হলো আসুরী স্বভাব। দেবতাদের হয় দৈব-স্বভাব। এইসবই তোমরা জানো, অসুরদের আর
দেবতাদের যুদ্ধ কখনই হয় নি। পুরানো দুনিয়া আর নতুন দুনিয়া - পরস্পরের মধ্যে মিলন
কীভাবে হতে পারে। বাবা বলেন, অতীতে যা ঘটে গেছে সেগুলো বসে লিখেছে, ওগুলোকে গল্পকথা
বলা হয়। উৎসবাদি সবই এখানকার। দ্বাপর থেকে পালন করা হয়। সত্যযুগে পালন করা হয় না।
এসব বুদ্ধির দ্বারা বোঝার মতন বিষয়। দেহ-অভিমানের কারণে বাচ্চারা অনেক পয়েন্টস্ ভুলে
যায়। জ্ঞান অতি সহজ। ৭ দিনেই সমগ্র জ্ঞান ধারণ করা যেতে পারে। প্রথমে অ্যাটেনশন চাই
স্মরণের যাত্রায়। আচ্ছা!
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
অসীম জগতের নাটকে অ্যাক্ট করতে-করতে সম্পূর্ণ নাটককে সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে। এতে
বিভ্রান্ত হয়ে পড়ো না। এই দুনিয়ার কোনো বস্তু দেখলেও, বুদ্ধির মাধ্যমে যেন তা স্মরণে
না আসে।
২ ) নিজের আসুরী
স্বভাবকে পরিবর্তন করে দৈবী-স্বভাব ধারণ করতে হবে। পরস্পরের সাহায্যকারী হয়ে চলতে
হবে, কাউকে বিরক্ত করা উচিত নয়।
বরদান:-
নিজের
মধ্যে সর্ব শক্তিকে ইমার্জ রূপে অনুভবকারী সর্ব সিদ্ধি স্বরূপ ভব
লৌকিকে কারো কাছে কোনো
বিষয়ের শক্তি থাকে, ধনের শক্তি হতে পারে, বুদ্ধির, সম্বন্ধ-সম্পর্কের.... তো তার
এই নিশ্চয় থাকে যে, এটা কি বড় ব্যাপার। সে শক্তির আধারে সিদ্ধি প্রাপ্ত করে নেয়।
তোমাদের কাছে তো সকল শক্তিই রয়েছে, অবিনাশী ধনের শক্তি সর্বদা সাথেই রয়েছে,
বুদ্ধির শক্তিও রয়েছে তো পজিশনের শক্তি রয়েছে, সর্ব শক্তি তোমাদের মধ্যে রয়েছে,
এগুলোকে কেবল ইমার্জ রূপে অনিকরো তো সময় মতো বিধির দ্বারা সিদ্ধি প্রাপ্ত করে
সিদ্ধি স্বরূপ হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
মনকে
প্রভুর আমানত মনে করে তাকে সর্বদা শ্রেষ্ঠ কার্যে লাগাও।