28.10.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
“মিষ্টি বাচ্চারা -
এই সঙ্গমযুগে সেবা করে তোমাদেরকে গায়ন যোগ্য হতে হবে, এরপর ভবিষ্যতে পুরুষোত্তম হলে
তোমরা পূজনীয় হয়ে যাবে”
প্রশ্নঃ -
কোন্ রোগের
সমূলে বিনাশ হলেই বাবার হৃদয়ে বসতে পারবে?
উত্তরঃ
দেহ অভিমানের
রোগ। এই দেহ অভিমান থাকার জন্যই অন্যান্য সকল বিকারগুলির উৎপত্তি । মহারোগী বানিয়ে
দিয়েছে। এই দেহ অভিমান সমাপ্ত হলেই বাবার অন্তরে জায়গা পাবে। ২) অন্তরে স্থান
পাওয়ার জন্য বুদ্ধিকে সুবিশাল বানাও। জ্ঞান চিতার ওপর বসো। আধ্যাত্মিক সেবাতে লেগে
যাও এবং জ্ঞান শোনানোর সঙ্গে সঙ্গে বাবাকে ভালো করে স্মরণ করো।
গীতঃ-
জাগো রে সজনীরা
জাগো…
ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি
আত্মিক বাচ্চারা গান শুনলো - আত্মিক পিতা এই পুরানো তন এর দ্বারা কথা বলেন। বাবা
বলেন, আমাকে পুরাতন শরীরে এবং পুরাতন রাজধানীতে আসতে হয়েছে। এটা এখন রাবণের রাজধানী।
শরীরটাও পরের। কারণ এই শরীরে তো আগে থেকেই আত্মা ছিল। আমি পরের শরীরে এসে প্রবেশ করি।
নিজের শরীর হলে তো সেই শরীরের একটা নাম থাকতো। কিন্তু আমার নাম কখনোই পাল্টায় না।
আমাকে এর পরেও শিববাবা বলা হয়। বাচ্চারা প্রতিদিনই গান শোনে। নুতন যুগ বা সত্যযুগ
আসছে। এক্ষেত্রে কাকে জাগাতে হবে? আত্মাদেরকে। কারণ আত্মারাই ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত
রয়েছে । কিছুই বোঝে না। নিজের বাবাকেই চেনে না। এখন বাবা সবাইকে জাগাতে এসেছেন।
তোমরা এখন অসীম জগতের পিতাকে জেনেছ। ওনার কাছ থেকে নতুন যুগের জন্য সুখ পাওয়া যায়।
সত্যযুগকে বলা হয় নতুন যুগ আর কলিযুগকে বলা হয় পুরাতন যুগ। এইসব কথা বিদ্বান,
পন্ডিত কেউই জানে না। যদি কাউকে জিজ্ঞেস করো যে নতুন যুগ কিভাবে পুরাতন হয়ে যায়?
তাহলে কেউই বলতে পারবে না। বলবে যে এগুলো তো লাখ লাখ বছরের কথা। তোমরা এখন জেনেছ যে
আমরা কিভাবে নতুন যুগ থেকে পুরাতন যুগে এসে পৌঁছেছি অর্থাৎ স্বর্গবাসী থেকে নরকবাসী
হয়েছি। মানুষ তো কিছুই জানে না। যার পূজা করছে, তার বায়োগ্রাফি জানে না। যেমন
জগদম্বার পূজা করে, এখন জগদম্বা কে, সেটা জানে না। অম্বা বাস্তবে মাতা'দেরকে বলা হয়।
কিন্তু পূজা এক-এরই হওয়া উচিত। শিববাবারও একটিই অব্যভিচারী স্মরণিক রয়েছে। অম্বাও
একজনই। কিন্তু জগৎ অম্বাকে মানুষ জানে না। ইনি হলেন জগৎ অম্বা আর লক্ষ্মী হলেন
জগতের মহারানী। তোমরা জান যে, জগৎ অম্বা কে আর জগতের মহারানী কে? এই সব কথা কারোরই
জানা সম্ভব নয়। লক্ষ্মীকে দেবী আর অম্বাকে ব্রাহ্মণী বলা হবে। ব্রাহ্মণ সঙ্গমযুগেই
হয়ে থাকে। এই সঙ্গমযুগকে কেউই জানে না। প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা নতুন পুরুষোত্তম
সৃষ্টি রচিত হয়ে থাকে। পুরুষোত্তম তোমরা ওখানে (সত্যযুগে) দেখতে পাবে। এই সময়
তোমরা ব্রাহ্মণরা হলে গায়নযোগ্য। এখন তোমরা সেবা করছো, এরপর তোমরা পূজার যোগ্য হবে।
ব্রহ্মার এত গুলো হাত দেখিয়ে থাকে, তাহলে অম্বার কেন দেবে না। সবাই তো তার সন্তান,
তাই না ! মা - বাবা'ই তো প্রজাপিতা হবেন। বাচ্চাদেরকে তো প্রজাপিতা বলা হবে না।
লক্ষ্মী - নারায়ণকে কখনো সত্যযুগে জগৎ পিতা জগৎ মাতা বলা হবে না। প্রজাপিতা নামই
বিখ্যাত। জগৎ পিতা আর জগৎ মাতা একই। বাকিরা হল তাদের সন্তান। আজমেরে প্রজাপিতা
ব্রহ্মার মন্দিরে গেলে বলবে-"বাবা", কেননা তিনি তো প্রজাপিতা । সসীম জগতের পিতারা
সন্তানের জন্ম দেয়, তাহলে তাদের বলা হবে সসীম জগতের পিতা । ইনি হলেন অসীম জগতের ।শিববাবা
তো সব আত্মাদের অসীম জগতের পিতা । এই কনট্রাস্টও বাচ্চারা, তোমাদের লিখতে হবে। জগৎ
অম্বা সরস্বতী একই। কত কত নাম রেখে দিয়েছে - দুর্গা, কালী ইত্যাদি। তোমরা সবাই হলে
অম্বা আর বাবার সন্তান। এরা তো হলো রচনা, তাই না ! প্রজাপিতা ব্রহ্মার কন্যা হল
সরস্বতী, তাকেই অম্বা বলা হয়। বাকিরা হলো পুত্র আর কন্যা। সবাই হলো অ্যাডপ্টেড। এতো
এতো বাচ্চা নাহলে কোথা থেকে আসতে পারে ! এরা সবাই হল মুখ বংশাবলী। মুখের দ্বারা
স্ত্রীকে ক্রিয়েট করেছেন তো রচনা হয়ে গেল। তিনি বলেন এরা সবাই হল আমার। আমি এনার
দ্বারা বাচ্চাদের জন্ম দিয়েছি। এ সবই হলো অ্যাডপশন। তখন এরা হয়ে গেল ঈশ্বরীয়, মুখ
দ্বারা রচিত। আত্মাই তো অবশ্যই। তাকে অ্যাডপ্ট করতে হয় না। বাবা বলেন, তোমরা সর্বদা
হলে আমার সন্তান। এরপর আমি এসে প্রজাপিতা ব্রহ্মার দ্বারা বাচ্চাদেরকে অ্যাডপ্ট করি।
বাচ্চাদেরকে (আত্মাদেরকে) অ্যাডপ্ট করি না, পুত্র আর কন্যাদেরকে করে থাকি। ও খুবই
সূক্ষ্ম বোঝার মতো বিষয়। এই কথা গুলিকে বুঝতে পারলে তোমরা লক্ষ্মী - নারায়ণ হয়ে
যাও। কীভাবে হবে, এটা এখন আমরা বুঝতে পারি। এমন কী কর্ম তারা করেছিলেন যে এরা
বিশ্বের মালিক হলেন। তোমরা প্রদর্শনী ইত্যাদিতে এ'সব কথা জিজ্ঞাসা করতে পার। তোমরা
জানো যে, এরা স্বর্গের রাজধানী কীভাবে নিয়েছিলেন। তোমাদের মধ্যেও সবাই যথার্থ ভাবে
এ' সব কথা বোঝাতে পারে না। যার মধ্যে দৈবী গুণ থাকবে, এই আধ্যাত্মিক সার্ভিসে লেগে
থাকবে, সে'ই বোঝাতে পারবে। বাকিরা তো মায়ার অসুখে ফেঁসে থাকবে। অনেক প্রকারের রোগ
রয়েছে। দেহ অভিমানের রোগ ও রয়েছে। এই বিকার গুলোই তোমাদেরকে রোগী বানিয়েছে।
বাবা বলেন, তোমাদেরকে
পবিত্র দেবতা বানাই। তোমরা সর্ব গুণ সম্পন্ন... পবিত্র ছিলে। এখন পতিত হয়ে গেছো।
অসীম জগতের বাবা'ই এ' কথা বলবেন। এতে নিন্দার কিছু নেই, এ হলো বোঝার বিষয়।
ভারতবাসীদেরকে অসীম জগতের পিতা বলেন, আমি ভারতেই আসি। ভারতের মহিমা হলো অপরম অপার।
এখানে এসে নরককে স্বর্গ বানাই। সবাইকে শান্তি দিই। তাই এমন বাবার মহিমা হলো অপরম
অপার। কোনো পারাবার নেই। জগৎ অম্বা আর ওনার মহিমাও কেউ জানে না। সেই কনট্রাস্টও
তোমরা অন্যদেরকে বলতে পার। ওটা হল জগৎ অম্বার বায়োগ্রাফি আর এটা হল লক্ষ্মীর। এই
জগৎ অম্বাই তারপর লক্ষ্মী হন। তারপর লক্ষ্মী তথা ৮৪ জন্মের পরে জগৎ অম্বা হবেন।
উভয়ের চিত্রও আলাদা আলাদা রাখতে হবে। দেখানো হয় লক্ষ্মী কলস পেল, তারপর লক্ষ্মী
কীভাবে সঙ্গমে এলো? তিনি তো সত্যযুগের। এ সব কথা বাবা বুঝিয়ে থাকেন। চিত্র বানানোর
সময় যে বিষয়ের চিত্র, তার উপরে বিচার সাগর মন্থন করা উচিত। তখন বোঝা সহজ হবে।
এতখানি বিশাল বুদ্ধি চাই, তবেই বাবার হৃদয়ে বসতে পারবে। যখন বাবাকে খুব ভালো ভাবে
স্মরণ করবে জ্ঞান চিতাতে বসবে তখনই হৃদয়ে বসতে পারবে এমন নয় যে, তোমরা ভালো
প্রবচন করো, তখনই হৃদয়ে বসতে পারো, না তা নয়। বাবা বলেন, হৃদয়ে অন্তিম সময়ে চড়বে।
নম্বর অনুযায়ী পুরুষার্থ অনুসারে যখন দেহ-অভিমান সমাপ্ত হয়ে যাবে ।
বাবা বোঝান, ব্রহ্ম
জ্ঞানী ব্রহ্মতে লীন হয়ে যাওয়ার পরিশ্রম করে। কিন্তু কেউই তাতে লীন হতে পারে না (সম্ভব
নয়)। বাকি পরিশ্রম করে উত্তম পদ প্রাপ্ত করে।এমন এমন মহাত্মা হয়ে ওঠেন এক একজন
যে, তাদেরকে প্ল্যাটেনিয়ামের সাথে ওজন করে থাকে। ব্রহ্মতে লীন হওয়ার পরিশ্রম করেন
যে। তো পরিশ্রমের ফল তো অন্তত পাওয়া যায়। বাকি মুক্তি জীবনমুক্তি প্রাপ্ত হতে পারে
না। বাচ্চারা, তোমরা জানো, এই পুরানো দুনিয়া এখন শেষ হল কী হল। এত এত বম্ব বানিয়েছে,
রেখে দেওয়ার জন্য কী বানিয়েছে থোড়াই। তোমরা জানো, পুরানো দুনিয়ার বিনাশের জন্য এই
বম্ব গুলি কাজে আসবে। অনেক প্রকারের বম্ব রয়েছে। বাবা জ্ঞান আর যোগ শেখান, তার
দ্বারা এরপর রাজ রাজেশ্বর দ্বিমুকুটধারী দেবী দেবতা হবে। কোন্ সেই উঁচু পদ?
ব্রাহ্মণ শিখি (টিকি) হলো উপরে। শিখি হল সবার ওপরে। এখন বাচ্চারা, তোমাদেরকে পতিত
থেকে পবিত্র বানাতে বাবা এসেছেন ।এরপর তোমরাও পতিত - পাবনী হয়ে যাও - এই নেশা
তোমাদের রয়েছে? আমরা সবাইকে পবিত্র বানিয়ে রাজ-রাজেশ্বর বানাচ্ছি।নেশা যদি থাকে,
তবে তোমরা খুশীতে আছো। নিজের মনকে জিজ্ঞাসা করো, আমরা কতজনকে বাবা সম বানিয়েছি?
প্রজাপিতা ব্রহ্মা আর জগৎ অম্বা দু'জনেই এক রকম। ব্রাহ্মণদের রচনা রচিত করেন। শূদ্র
থেকে ব্রাহ্মণ হওয়ার যুক্তি বাবা'ই বলে দেন। কোনো শাস্ত্রে এ'সব নেই। এটা হলি গীতার
যুগ। মহাভারতের যুদ্ধ অবশ্যই হয়েছিল। রাজযোগ কী কেবল একজনকেই শিখিয়েছিলেন? মানুষের
বুদ্ধিতে কেবল অর্জুন আর কৃষ্ণই রয়েছে। এখানে তো অনেকে পড়ে (রাজযোগ শেখে)। তোমরা
বসে আছোও তো কত সাধারণ ভাবে। ছোট বাচ্চারা অল্ফ আর বে পড়ে, তাই না (অ, আ, ক, খ)।
তোমরা এখন বসে আছো, তোমাদেরকেও আমি অল্ফ (আল্লাহ), বে (বাদশাহী) পড়াচ্ছি। অল্ফ আর
বে, এটাই হল অবিনাশী উত্তরাধিকার।বাবা বলেন, আমিকে স্মরণ করো তো বিশ্বের মালিক হয়ে
যাবে । কোনো রকমের আসুরিক কর্ম করবে না। দৈবীগুণ ধারণ করতে হবে। দেখতে হবে আমাদের
মধ্যে কোনও অবগুণ নেই তো? "আমি তো নির্গুণ, কোনো গুণ নেই আমার"। এখন নির্গুণ আশ্রমও
রয়েছে, কিন্তু মানুষ কোনো অর্থই জানে না। নির্গুণ মানে আমার মধ্যে কোনো গুণই নেই।
এখন গুণবান বানানো তো বাবারই কাজ। বাবার টাইটেল এর টুপি নিজেদের ওপরেই রেখে দিয়েছে।
বাবা তো কত কথা বোঝান। ডাইরেকশনও দেন। জগৎ অম্বা আর লক্ষ্মীর কনট্রাস্ট লোকেদেরকে
বলো। ব্রহ্মা - সরস্বতী হলেন সঙ্গমের, লক্ষ্মী - নারায়ণ সত্যযুগের। এই চিত্রটি
রয়েছে বোঝার জন্য। সরস্বতী হল ব্রহ্মার পুত্রী। এখানে বাচ্চারা পড়ে মনুষ্য থেকে
দেবতা হওয়ার জন্য। এখন তোমরা হলে ব্রাহ্মণ । সত্যযুগী দেবতাও মানুষ, তাদেরকে দেবতা
বলা হবে। তাদেরকে মানুষ বলা হলে তাদের ইনসাল্ট করা হবে। সেইজন্য দেবী দেবতা বা
ভগবান ভগবান বলে দেয়। যদি রাজা - রানীকে ভগবান ভগবতী বলা হলে প্রজাদেরকেও বলতে হয়।
সেইজন্য দেবী - দেবতা বলা হয়। ত্রিমূর্তির চিত্রও রয়েছে। সত্যযুগে এত কম মানুষ,
কলিযুগে এত এত মানুষ, সেটাকে কীভাবে বোঝাবে ? তার জন্য গোলাও (সৃষ্টিচক্রের চিত্র)
অবশ্যই চাই। প্রদর্শনীতে এত এত মানুষকে ডাকা হয়। কাস্টম কালেক্টরকে তো কেউ কখনো
নিমন্ত্রণ দেয়নি। তো এই রকম চিন্তা ভাবনা করতে হয়। এতে অনেক বিশাল বুদ্ধির
প্রয়োজন।
বাবার তো রিগার্ড রাখা
উচিত। হুসেনের ঘোড়াকে কত সুন্দর করে সাজায়। লাগাম কত ছোট, ঘোড়া কত বড় হয়ে থাকে।
আত্মাও তো কত ছোট বিন্দু, তার শৃঙ্গার কত বড় । এটা যে অকালমূর্তির সিংহাসন।
সর্বব্যাপীর কথাও গীতার থেকে নিয়েছে। বাবা বলেন, আমি আত্মাদেরকে রাজযোগ শেখাই,
তাহলে সর্বব্যাপী কীকরে হতে পারি। বাবা - টিচার - গুরু সর্বব্যাপী কিকরে হবেন? বাবা
বলেন, আমি তো তোমাদের বাবা, তার উপরে জ্ঞান সাগরও। তোমাদেরকে অসীম জগতের হিস্ট্রি -
জিওগ্রাফি বোঝানোর ফলে অসীম জগতের রাজ্য লাভ হবে। দৈবীগুণও ধারণ করা উচিত। মায়া
একদম নাক টিপে ধরে। আচরণ নোংরা হয়ে যায়, তারপর লেখে এই এই ভুল হয়ে গেছে আমার
দ্বারা। আমি নিজের মুখেই কালিমা লিপ্ত করেছি। এখানে তো পবিত্রতা শেখানো হয়। তাহলে
কারো যদি পতন হয়, তাতে বাবার কী করার আছে ! বাড়িতে যদি কোনো বাচ্চা খারাপ কাজ করে
বসে, মুখে কালি লাগায়, তখন তার বাবা বলে, এর চেয়ে তুমি মরে গেলেও ভালো ছিল। অসীম
জগতের পিতা যদিও ড্রামাকে জানেন, তবুও তো বলবেন, তাই না ! তোমরা অন্যদেরকে পাঠ
পড়িয়ে যদি নিজের পতন ঘটাও, তবে হাজার গুণ পাপ চড়ে যায়। বলা হয় মায়া থাপ্পর
মেরে দিয়েছে। মায়া এমন ঘুষি মারে যে বুদ্ধি শুদ্ধিকে একেবারে লোপ পাইয়ে দেয়।
বাবা বাচ্চাদেরকে
বোঝান, চোখ হল বড়ই ধোঁকাবাজ। কখনোই কোনো বিকর্ম কোরো না। ঝড় ঝাপটা অনেক আসবে।
কেননা তোমরা যুদ্ধের ময়দানে আছো যে। বুঝতেও পারবে না যে কী হচ্ছে। মায়া বুঝে ওঠার
আগেই থাপ্পর কষিয়ে দেয়। এখন তোমরা কতো বোধ-বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে উঠছো। আত্মাই তো
বোধ-বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে ওঠে, তাই না ! আত্মাই বোধহীন ছিল। এখন বাবা বোধ-বুদ্ধি
সম্পন্ন (সমঝদার) বানাচ্ছেন। মানুষ অনেক বেশি দেহ অভিমানে রয়েছে। বোঝেই না যে, আমরা
হলাম আত্মা । বাবা আমাদের অর্থাৎ আত্মাদেরকে পড়াচ্ছেন।আমরা আত্মারা এই কান দিয়ে
শুনছি। এখন বাবা বলছেন কোনো প্রকারেরই বিকারের কথা এই কান দিয়ে শুনবে না। বাবা
তোমাদেরকে বিশ্বের মালিক বানাচ্ছেন । তোমাদের লক্ষ্য অনেক বড়। মৃত্যু যখন নিকটে
আসবে তখন তোমাদের ভয় হবে। মৃত্যু পথযাত্রী মানুষকেও তো বলা হয় ভগবান স্মরণ করতে
কিম্বা নিজের গুরু আদিকে স্মরণ করতে। দেহধারীকে স্মরণ করতে শেখায়। বাবা তো বলেন "মামেকম্
স্মরণ করো", এটা বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে রয়েছে। বাবা আদেশ করছেন - "মামেকম্
স্মরণ করো"। দেহধারীদের স্মরণ করবে না। মা বাবাও তো দেহধারী, তাই না ! আমি তো হলাম
বিচিত্র, আমি বিদেহী, এনার (ব্রহ্মা বাবা) মধ্যে বসে তোমাদেরকে জ্ঞান প্রদান করি।
তোমরা এখন জ্ঞান আর যোগ শিখে থাকো রাজ - রাজেশ্বরী হওয়ার জন্য । জ্ঞান সাগর জ্ঞানও
শেখান, রাজযোগও শেখান। আচ্ছা !
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত ।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
বোধ-বুদ্ধি সম্পন্ন হয়ে ঝড় তুফানে কখনো হার মানবে না। চোখ ধোঁকা দেয়, সেইজন্য
নিজেকে নিজে ঠিক রাখবে। কোনো রকমের বিকারী কথা বার্তা এই কান দিয়ে শুনবে না।
২ ) নিজের মনকে
জিজ্ঞাসা করো যে, আমরা কতজনকে নিজ সম বানাচ্ছি? মাস্টার পতিত পাবনী হয়ে সকলকে
পবিত্র (রাজ - রাজেশ্বর) বানানোর সেবা করছি? আমাদের মধ্যে কোনও অবগুণ নেই তো ?
দৈবীগুণ কতখানি ধারণ করেছি?
বরদান:-
প্রতিটি
সংকল্প বা কর্মকে শ্রেষ্ঠ আর সফল বানানো জ্ঞান স্বরূপ বোঝদার ভব
যারা জ্ঞান স্বরূপ,
বুঝদার হয়ে যেকোনও সংকল্প বা কর্ম করে, তারা সফলতার মূর্তি হয়। এরই স্মরণিক
ভক্তিমার্গে কাজ শুরু করার সময় স্বস্তিকা চিহ্ন অঙ্কন করে বা গনেশকে নমস্কার করে।
এই স্বস্তিকা হলো স্ব স্থিতিতে স্থিত হওয়ার আর গনেশ হলো নলেজফুল স্থিতির সূচক। তোমরা
বাচ্চারা যখন নিজে নলেজফুল হয়ে প্রত্যেক সংকল্প বা কর্ম করো তখন সহজেই সফলতার অনুভব
হয়।
স্লোগান:-
ব্রাহ্মণ জীবনের বিশেষত্ব হলো খুশী, সেইজন্য খুশীর দান করতে থাকো।
অব্যক্ত ঈশারা :-
স্বয়ং আর সকলের প্রতি মন্সা দ্বারা যোগের শক্তিগুলির প্রয়োগ করো
যেরকম কোনও সায়েন্সের
সাধনকে ইউস করার আগে চেক করবে যে লাইট আছে কি নেই। এইরকম যখন যোগের, শক্তিগুলির,
গুণের প্রয়োগ করো তখন প্রথমে এটা চেক করো যে মূল আধার আত্মিক শক্তি, পরমাত্ম শক্তি
বা লাইট (হাল্কা) স্থিতি আছে? যদি স্থিতি আর স্বরূপ ডবল লাইট থাকে তাহলে প্রয়োগের
সফলতা খুব সহজেই পেতে পারবে।