28.11.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - তোমাদের এক বাবার থেকেই শুনতে হবে আর শুনে অন্যদেরকে শোনাতে হবে"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা বাবা তোমাদেরকে কি বোঝাচ্ছেন, যেটা অপরকে শোনাতে হবে?

উত্তরঃ  
বাবা তোমাদের বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা সব আত্মারা হলে ভাই-ভাই । তোমাদের এক বাবার স্মরণেই থাকতে হবে। এই কথাই তোমরা সকলকে শোনাও, কারণ তোমাদের সমগ্র বিশ্বের ভাইদের কল্যাণ করতে হবে। এই সেবার জন্য তোমরাই হলে নিমিত্ত।

ওম্ শান্তি ।
সাধারণতঃ ওম্ শান্তি কেন বলা হয়? এটা হলো পরিচয় দেওয়া - আত্মার পরিচয় আত্মাই দেয়। কথা-বার্তা আত্মাই করে শরীরের দ্বারা। আত্মা ব্যতীত শরীর তো কিছুই করতে পারে না। তাই এই আত্মা নিজের পরিচয় দেয়। আমরা আত্মারা হলাম পরমপিতা পরমাত্মার সন্তান। তারা তো বলে দেয় অহম্ (আমি) আত্মাই পরমাত্মা। বাচ্চারা, তোমাদের এই সব কথা বোঝানো হয়। বাবা তো বাচ্চা বাচ্চাই করবেন, তাই না! আত্মাদের বাবা বলেন - হে আত্মারূপী বাচ্চারা, এই অরগ্যান্স দ্বারা তোমরা বুঝতে পারো। বাবা বোঝান, সর্বপ্রথমে হলো জ্ঞান তারপর ভক্তি। এরকম না যে প্রথমে ভক্তি, শেষে জ্ঞান। প্রথমে হলো জ্ঞান দিন, ভক্তি হলো রাত। আবার শেষে দিন কখন আসবে? যখন ভক্তির প্রতি বৈরাগ্য আসবে। তোমাদের বুদ্ধিতে এটা থাকা চাই। জ্ঞান আর বিজ্ঞান হলো যে না। এখন তোমরা জ্ঞানের অধ্যয়ণ করছো। আবার সত্যযুগ - ত্রেতাতে তোমাদের জ্ঞানের প্রালব্ধ লাভ হয়। বাবা জ্ঞান এখন দেন, যার প্রালব্ধ আবার সত্যযুগে হবে। এটা যে বোঝার ব্যাপার। এখন বাবা তোমাদের জ্ঞান প্রদান করছেন । তোমরা জানো আবার আমরা জ্ঞানের ওপারে বিজ্ঞান নিজেদের গৃহ শান্তিধামে যাবো। সেটাকে না জ্ঞান, না ভক্তি বলা হবে। সেটাকে বলা হয় বিজ্ঞান। জ্ঞানের ওপারে শান্তিধামে চলে যায়। এই সমস্ত জ্ঞান বুদ্ধিতে রাখতে হবে। বাবা জ্ঞান প্রদান করেন- কিসের জন্য ? ভবিষ্যতের নূতন দুনিয়ার জন্য দেন। নূতন দুনিয়াতে যাবে তো প্রথমে অবশ্যই নিজের গৃহে যাবে। মুক্তিধামে যেতে হবে। যে স্থান আত্মাদের নিবাসস্থল সেখানে তো অবশ্যই যাবে যে না। এই নূতন-নূতন কথা তোমারই শুনছো আর কেউ বুঝতে পারে না। তোমরা বুঝতে পারো- আমরা আত্মারা স্পীরিচুয়্যাল ফাদারের স্পীরিচুয়্যাল বাচ্চা। আত্মা রূপী বাচ্চাদের অবশ্যই আত্মা রূপী পিতার প্রয়োজন। আত্মা রূপী পিতা আর আত্মা রূপী বাচ্চারা। আত্মা রূপী বাচ্চাদের একজনই আত্মা রূপী পিতা। তিনি এসে নলেজ দেন। বাবা কীভাবে আসেন- সেটাও বোঝানো হয়। বাবা বলেন আমাকেও প্রকৃতির আধার নিতে হয়। এখন তোমাদের বাবার থেকে অতি অবশ্যই শুনতেই হবে। বাবা ব্যতীত আর কারোর থেকে শুনতে যেও না। বাচ্চারা শুনে আবার অন্য ভাইদের শোনাবে। কিছু না কিছু অবশ্যই শোনায়। নিজেকে আত্মা মনে করো, বাবাকে স্মরণ করো, কারণ উনিই হলেন পতিত-পাবন। বুদ্ধি সেখানে চলে যায়। বাচ্চাদের বোঝালে বুঝে যায়। কারণ প্রথমে অবুঝ ছিলো। ভক্তি মার্গের অবুঝ থাকার কারণে রাবণের থাবায় এসে কি করে! কীভাবে ছিঃ ছিঃ (ঘৃণ্য) হয়ে যায়। মদ্যপান করলে কি হয়ে যায় ? মদ্য নোংরাকে আরো ছড়িয়ে দেয়। এখন বাচ্চারা, তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে, অসীম জগতের পিতার থেকে আমাদের উত্তরাধিকার নিতে হবে। কল্প-কল্প নিয়ে এসেছে, সেইজন্য অবশ্যই দৈবী গুণও ধারণ করতে হবে। কৃষ্ণের দৈবীগুণের মহিমা কতো! বৈকুন্ঠের মালিক কতো মধুর। এখন কৃষ্ণের ডিনায়েস্টি বলব না। ডিনায়েস্টি বিষ্ণু বা লক্ষ্মী-নারায়ণের বলব। বাচ্চারা, এখন তোমারা বুঝতে পারছো একমাত্র বাবা সত্যযুগী রাজত্বের ডিনায়েস্টি স্থাপন করেন। এই চিত্র ইত্যাদি যদিও বা না থাকে তবুও বোঝানো যায়। মন্দির তো অনেক হতে থাকে, যার ভিতরে জ্ঞান আছে সে অন্যের কল্যাণ করতে, নিজের সমান করতে ছুটতে থাকে। নিজেকে দেখতে হবে আমি কত জনকে জ্ঞান শুনিয়েছি। কারোর কারোর জ্ঞানের তীর তাড়াতাড়ি লেগে যায়। ভীষ্ম-পিতামহ ইত্যাদিরাও বলেছেন যে- আমাকে কুমারীরা জ্ঞান বাণ মেরেছে। এই সব হলো পবিত্র কুমার-কুমারীরা অর্থাৎ বাচ্চারা। তোমরা সবাই হলে বাচ্চা, সেইজন্য বলো আমরা ব্রহ্মার সন্তান কুমার- কুমারী হলাম ভাই-বোন। এটা পবিত্র সম্পর্ক হয়। তাও হলো অ্যাডপ্টেড চিল্ড্রেন। বাবা অ্যাডপ্ট করেছিলেন। শিববাবা অ্যাডপ্ট করেছিলেন প্রজাপিতা ব্রহ্মা দ্বারা। বাস্তবে অ্যাডপ্ট শব্দও বলবে না। শিববাবার বাচ্চা তো আছেই। সবাই আমাকে ডাকে শিববাবা, শিববাবা এসো। কিন্তু কিছু বোঝে না। সব আত্মারা শরীর ধারণ করে ভূমিকা পালন করে। তো শিববাবাও অবশ্যই শরীর দ্বারা পার্ট প্লে করবে। শিববাবা পার্ট না বাজালে আবার তো কোনো কাজের থাকে না। ভ্যালুই থাকে না। ওনার ভ্যালুই হয়, যখন সমগ্র দুনিয়াকে সদ্গতিতে পৌঁছায়, তখন ওঁনার মহিমা ভক্তিমার্গে গাওয়া হয়। সদ্গতি হয়ে গেলে পরে আবার বাবাকে স্মরণ করার দরকারই থাকে না। তারা শুধু গড ফাদার বলে তো আবার টিচার হারিয়ে যায়। বলার জন্য থেকে যায় যে, পরমপিতা পরমাত্মা হলেন পবিত্র করার জন্য। তারা সদ্গতি করারও বলে না। যদিও গায়নে আসে - সকলের সদ্গতি দাতা হলেন এক। কিন্তু অর্থহীন ভাবে বলে দেয়। এখন তোমরা যা কিছু বলো সেটা অর্থ সহ। বুঝতে পারো ভক্তির রাত আলাদা, জ্ঞান দিন আলাদা। দিনেরও টাইম থাকে। ভক্তিরও টাইম থাকে। এটা অসীম জগতের কথা। বাচ্চারা, তোমাদের অসীম জগতের নলেজ প্রাপ্ত হয়েছে। অর্ধ-কল্প হলো দিন, অর্ধ-কল্প হলো রাত। বাবা বলেন আমি আসি রাতকে দিন করতে।

তোমরা জানো যে, অর্ধ-কল্প হলো রাবণ রাজ্য, ওখানে অনেক প্রকারের দুঃখ আছে, এরপর বাবা নূতন দুনিয়া স্থাপন করলে সেখানে সুখ আর সুখ পাওয়া যায়। বলাও হয় এটা সুখ আর দুঃখের খেলা। সুখ মানে রাম, দুঃখ অর্থাৎ রাবণ। রাবণের উপর বিজয় প্রাপ্ত করলে তবে রামরাজ্য আসে, এর অর্ধ-কল্প পরে রাবণ, রামরাজ্যের উপর বিজয় লাভ করে রাজত্ব করে। তোমরা এখন মায়ার উপরে বিজয় প্রাপ্ত করো। শব্দ বাই শব্দ তোমরা অর্থ সহ বলো। এটা হলো তোমাদের ঈশ্বরীয় ভাষা। এটা কেউ কি আর বুঝবে! ঈশ্বর কীভাবে কথা বলেন। তোমরা জানো এটা হলো গড্ ফাদারের ভাষা কারণ গড ফাদার হলেন নলেজফুল। গাওয়াও হয় তিনি জ্ঞানের সাগর নলেজফুল, তাই অবশ্যই তো কাউকে নলেজ দেবেন যে না! এখন তোমরা বুঝতে পারো বাবা কীভাবে নলেজ দেন। নিজের পরিচয় দেন আর সৃষ্টি চক্রের নলেজও দেন। যে নলেজ গ্রহণ করার ফলে আমরা চক্রবর্তী রাজা হই। স্বদর্শন চক্র যে। স্মরণ করার ফলে আমাদের পাপ খন্ডন হয়। এটা হলো তোমাদের স্মরণের অহিংসক চক্র। সেই চক্র হলো হিংসক, মস্তক খন্ডনের। ঐ অজ্ঞানী মানুষ একে অপরের মস্তক খন্ডন করতে থাকে। তোমরা এই স্বদর্শন চক্রকে জানার ফলে বাদশাহী প্রাপ্ত করো। কাম হলো মহাশত্রু, যার জন্য আদি-মধ্য-অন্ত দুঃখ পেতে হয়। সেটা হলো দুঃখের চক্র। বাবা তোমাদের এই চক্রের নলেজ বোঝাচ্ছেন। স্বদর্শন চক্রধারী করে তোলেন। শাস্ত্রে তো কতো কথা তৈরী করে দিয়েছে। এখন তোমাদের সে সমস্ত ভুলে যেতে হয়। শুধুমাত্র এক বাবার স্মরণ করতে হবে। কারণ বাবার থেকেই স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবে। বাবাকে স্মরণ করতে হবে আর উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করতে হবে। কতো সহজ। অসীম জগতের পিতা নূতন দুনিয়া স্থাপন করছেন বলে উত্তরাধিকার নেওয়ার জন্যই স্মরণ করতে হবে। এটা হলো "মন্মনাভব", "মধ্যাজীভব" । বাবা আর উত্তরাধিকার স্মরণ করে বাচ্চাদের খুশীর পারদ উঠে থাকা উচিত। আমরা হলাম অসীম জগতের পিতার সন্তান। বাবা স্বর্গের স্থাপনা করেন, আমরা মালিক ছিলাম, অবশ্যই আবার হবো। আবার তোমরাই নরকবাসী হয়েছো। সতোপ্রধান ছিলে এখন তমোপ্রধান হয়েছো। ভক্তি মার্গেও আমরাই এসেছিলাম। অলরাউন্ড চক্র লাগিয়েছো। আমরা ভারতবাসীরা সূর্যবংশী ছিলাম এরপর চন্দ্রবংশী, বৈশ্য বংশী....হতে-হতে নীচে নেমেছি। আমরা ভারতবাসীই দেবী-দেবতা ছিলাম আবার আমাদেরই পতন হয়েছে। এখন সমস্ত কিছু তোমাদের বোধগম্য হচ্ছে। বাম মার্গে (পাপের রাস্তায়) গেলে কতো ঘৃণ্য হয়ে যায়। মন্দিরেও এরকম ঘৃণ্য চিত্র তৈরী করেছে। পূর্বে ঘড়িও এরকম চিত্র দেওয়া তৈরী করতো। এখন তোমরা বুঝতে পারো তোমরা সুগন্ধী ফুলের মতো কতো সুন্দর ছিলে আবার আমরাই পুনর্জন্ম নিতে নিতে কতো ঘৃণ্য হয়ে পড়ি। তোমরা যখন সত্যযুগের মালিক ছিলে, তো দৈবী গুণ সম্পন্ন মানুষ ছিলে। এখন অসুরী গুণ সম্পন্ন হয়েছো, আর কোনো পার্থক্য নেই। লেজওয়ালা বা শুঁড়ওয়ালা মানুষ হয় না। এটা শুধুমাত্র দেবতাদের চিহ্ন। এছাড়া তো স্বর্গ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে, শুধু এই চিত্র চিহ্ন স্বরূপ আছে। চন্দ্রবংশীদেরও চিহ্ন আছে। তোমরা এখন মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করার জন্য যুদ্ধ করছো। যুদ্ধ করতে করতে ফেল হয়ে যায় তো তাদের নিশানি তীর হলো কমন। বাস্তবে ভারতবাসী হলোই দেবী-দেবতা কুলের (ঘরানার) । নয়তো কোন্ কুলে গণ্য করা হবে। কিন্তু ভারতবাসীর নিজের ঘরানার ব্যাপারে জানা না থাকায় হিন্দু বলে দেয়। নয়তো বাস্তবে তোমাদের একই ঘরানা। ভারতে হলো সব দেবতা ঘরানার, যা অসীম জগতের পিতা স্থাপন করছেন। শাস্ত্রও হলো ভারতে একটিই। ডিটি ডিনায়েস্টির স্থাপনা হচ্ছে, এরপর ওতে ভিন্ন-ভিন্ন ব্রাঞ্চেস্ হয়ে যায়। বাবা দেবী-দেবতা ধর্ম স্থাপন করেন। মুখ্য হলো ৪টি ধর্ম। ফাউন্ডেশন দেবী-দেবতা ধর্মেরই হয়। থাকার যারা সকলেই হলো মুক্তিধামের। তোমরা এরপর নিজের দেবতার ব্রাঞ্চেসে চলে যাবে। ভারতের বাউন্ডারি হলো একটিই আর কোনো ধর্মের মধ্যে নেই। এটা হলো দেবতা ধর্মের বিশেষত্ব । এরপর ওর থেকে অন্যান্য ধর্ম বেরিয়েছে ড্রামার প্ল্যান অনুসারে। ভারতের আসল ধর্মই হলো ডিটি (দেবী-দেবতা), যার স্থাপনা করেন বাবা। এরপর নতুন-নতুন পাতা বের হয়। এই সমস্ত হলো ঈশ্বরীয় বৃক্ষ। বাবা বলেন যে, আমি হলাম এই বৃক্ষের বীজরূপ। এই ফাউন্ডেশন আছে আবার ওর থেকে টিউব বেরিয়ে আসে। মুখ্য ব্যাপার হলই আমরা সব আত্মারা হলাম ভাই-ভাই। সব আত্মাদের পিতা হলেন একই, সকলেই তাঁকে স্মরণ করে। এখন বাবা বলেন, তোমরা এই চোখে যা কিছু দেখছো সেই সব ভুলে যেতে হবে। এটা হলো অসীম জগতের বৈরাগ্য, ওদের হলো পার্থিব। শুধুমাত্র ঘর-বাড়ীর উপর বৈরাগ্য এসে যায়। তোমাদের তো এই সমগ্র পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য। ভক্তির পরে হলো পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য। আমরা আবার নূতন দুনিয়াতে যাবো ভায়া শান্তিধাম। বাবাও বলেন এই পুরানো দুনিয়া ভম্ম হতে চলেছে। এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি এখন যেন আর হৃদয় না টানে। থাকতে তো হবে এখানেই, যতক্ষণ পর্যন্ত যোগ্য হয়ে উঠব। হিসাবপত্র সব চুকিয়ে তোমরা অর্ধ-কল্পের জন্য সুখ জমা করো। তার নামই হলো শান্তিধাম, সুখধাম। প্রথমে সুখ হয়, শেষে দুঃখ। বাবা বুঝিয়েছেন, যে কোনো নূতন-নূতন আত্মারা উপর থেকে আসে, যেমন ক্রাইস্টের আত্মা আসে, প্রথমে ওনাদের দুঃখ থাকে না। প্রথমে সুখ, পরে দুঃখ - এটাই হলো খেলা। নূতন-নূতন যারা আসে তারা হলো সতোপ্রধান। তোমাদের যেমন সুখের অনুভব বেশী, সেরকম আর সকলের দুঃখের অনুভব বেশী। এই সব বুদ্ধি দ্বারা কাজে নেওয়া হয়। বাবা আত্মাদের বসে বোঝাচ্ছেন। সে আবার অন্যান্য আত্মাদের বোঝাচ্ছেন। বাবা বলেন, আমি এই শরীর ধারণ করেছি। অনেক জন্মের শেষে অর্থাৎ তমোপ্রধান শরীরে আমি প্রবেশ করি। আবার ওনাকেই ফার্স্ট নম্বরে যেতে হবে। যে ফার্স্ট সেই লাস্ট, যে লাস্ট সেই ফার্স্ট। এটাও বুঝিয়ে দিতে হয়। আবার ফার্স্টের পরবর্তী কে? মম্মা। ওনারই পার্ট হওয়া উচিত। উনি অনেকেই শিক্ষা দিয়েছেন। আবার বাচ্চারা, তোমাদের মধ্য থেকে নম্বর অনুযায়ী হয় যারা অনেককে শিক্ষা দেন, পড়ান। আবার সেই পাঠ যে নেয় সেও প্রচেষ্টা করে তোমার থেকেও উঁচুতে চলে যেতে। অনেক সেন্টারে এমনও আছে যারা তাদের যে টিচার পড়িয়েছেন তার থেকেও উঁচুতে উঠে যায়। একেক জনকে দেখা যায়। সকলের চলন থেকে তো বোঝা যায় যে না। কাউকে তো আবার মায়া নাক থেকে ধরে এমন টেনে নেয় যে একদম শেষ করে দেয়। বিকারে নীচে নেমে যায়। আরো উন্নতি হলে অনেকের ব্যাপারে শুনতে থাকবে। ওয়ান্ডার (অবাক) লাগবে, এ তো আমাকে জ্ঞান দিতো, আবার এ কীভাবে চলে গেল? আমাকে বলতো পবিত্র হও আর নিজেই আবার ছিঃ ছিঃ হয়ে গেল। বুঝবে তো অবশ্যই। অনেকে ঘৃণ্য হয়ে যায়। বাবা বলেছেন বড়-বড় মহারথীদেরও মায়া খুবই উৎপীড়ন করবে। তোমরা যেমন মায়ার উৎপীড়নের উপর বিজয় লাভ করো, মায়াও সেরকম করবে। বাবা কতো ভালো-ভালো ফার্স্টক্লাস, সুন্দর নামও রেখেছেন। কিন্তু হে মায়া - আশ্চর্য ভাবে শুনে নিয়ে, অন্যদের শোনায়ও, তারপর পালিয়ে যায়। মায়া কতো প্রকট হয়, সেই জন্য বাচ্চাদের খুবই সাবধান থাকতে হবে। যুদ্ধের ময়দান যে ! মায়ার সাথে তোমাদের কতো বড় যুদ্ধ। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার ।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এখানেই সব হিসাব-পত্র চুকিয়ে দিয়ে অর্ধ-কল্পের জন্য সুখ জমা করতে হবে। এই পুরানো দুনিয়ার প্রতি এখন আসক্তি রাখতে নেই। এই চোখ দিয়ে যা কিছু দেখা যাচ্ছে, সেসব ভুলে যেতে হবে।

২ ) মায়া খুবই শক্তিশালী, তার থেকে সাবধান থাকতে হবে। এই আধ্যাত্মিক পাঠে অন্যদের থেকে আগে যেতে হবে। এক বাবার থেকেই শুনতে হবে আর ওঁনার থেকেই যা শুনছো তা অপরকে শোনানো হবে।

বরদান:-
অসীমের দৃষ্টি, বৃত্তি আর স্থিতি দ্বারা সকলের প্রিয় হয়ে ডবল লাইট ফরিস্তা ভব

ফরিস্তা সকলের কাছেই খুব প্রিয়, কেননা ফরিস্তা হল সকলের জন্য, এক-দুজনের জন্য নয়। অসীমের দৃষ্টি, বৃত্তি আর অসীমের স্থিতি যুক্ত ফরিস্তা হল সকল আত্মাদের প্রতি পরমাত্মার সন্দেশবাহক। ফরিস্তা অর্থাৎ ডবল লাইট। সকলের রিস্তা (সম্পর্ক) এক বাবার সাথে জুড়ে দেয়, দেহ আর দেহের সম্বন্ধ থেকে পৃথক, নিজেকে আর সকলকে নিজের চলন আর চেহারার দ্বারা বাবার সমান বানিয়ে তোলা, সকলের প্রতি কল্যানকারী। এইরকম ফরিস্তারাই হল সকলের প্রিয়।

স্লোগান:-
যখন তোমাদের চেহারায় বাবার চরিত্র দেখা যাবে, তখন সমাপ্তি হবে।