29.03.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
জ্ঞানের মাধ্যমেই তোমাদের সঠিক জাগৃতি এসেছে, তোমরা নিজেদের ৮৪ জন্মকে, নিরাকার এবং
সাকার পিতাকে জানো, তাই তোমাদের বিভ্রান্ত হয়ে ছোটাছুটি বন্ধ হয়ে গেছে"
প্রশ্নঃ -
ঈশ্বরের
মতি-গতি সম্পূর্ণ আলাদা - একথা কেন বলা (গায়ন) হয়েছে?
উত্তরঃ
১) কারণ তিনি
এমন মত(শ্রীমত) দেন, যার দ্বারা তোমরা ব্রাহ্মণরা সর্বকিছুর ঊর্ধ্বে অর্থাৎ পৃথক হয়ে
যাও। তোমাদের সকলেরই মত এক হয়ে যায়, ২) একমাত্র ঈশ্বরই আছেন যিনি সকলের সদ্গতি করেন।
পূজারী থেকে পূজ্যে পরিণত করেন, তাই তাঁর মতি-গতি সম্পূর্ণ আলাদা। বাচ্চারা, যা
তোমরা ব্যতীত আর কেউই বুঝতে পারে না।
ওম্ শান্তি ।
বাচ্চারা,
তোমরা জানো যে, বাচ্চাদের যদি শরীর সুস্থ না থাকে তবে বাবা বলবেন যে, ঠিক আছে এখানে
শুয়ে থাকো। কোনও ব্যাপার নেই, কারণ তোমরা হলে হারানিধি বাচ্চা অর্থাৎ ৫ হাজার বছর
পর পুনরায় এসে মিলিত হয়েছো। কাকে পেয়েছো? অসীম জগতের বাবাকে। বাচ্চারা, এও তোমরাই
জানো, যাদের এই নিশ্চয় রয়েছে যে অবশ্যই আমরাই অসীম জগতের বাবার সাথে মিলিত হয়েছি
কারণ বাবা হয়ই এক, সসীম জগতের আর দ্বিতীয় অসীম জগতের। দুঃখে সকলেই অসীম জাগতিক
পিতাকে স্মরণ করে। সত্যযুগে একমাত্র লৌকিক পিতাকেই স্মরণ করে, ওটাই হলো সুখধাম।
লৌকিক পিতা তাকেই বলা হয়, যে এই লোকে জন্ম দেয় অর্থাৎ লৌকিক-জন্ম দান করে। পারলৌকিক
পিতা তো একবারই এসে তোমাদের আপন করে নেন। তোমরাও অমরলোকে বাবার সঙ্গেই থাকো - যাকে
পরলোক, পরমধাম বলা হয়। ওটা হলো ঊর্ধ্ব থেকেও ঊর্ধ্বে বহুদূরের ধাম। স্বর্গকে ঊর্ধ্ব
থেকেও ঊর্ধ্বে বলা যাবে না। এখানেই স্বর্গ-নরক। নতুন দুনিয়াকে স্বর্গ, পুরানো
দুনিয়াকে নরক বলা হয়। এখন হলো পতিত দুনিয়া, আহ্বানও করা হয় - হে পতিত-পাবন এসো।
সত্যযুগে এমনভাবে বলা হবে না। যখন থেকে রাবণ-রাজ্য শুরু হয় তখন থেকে অপবিত্র হতে
থাকে তাই তাকে বলা হয় ৫ বিকারের রাজ্য। সত্যযুগে হয়ই নির্বিকারী রাজ্য। ভারতের মহিমা
কত বিশাল। কিন্তু বিকারী হওয়ার কারণে ভারতের মহিমা কেউ জানে না। যখন এটা
লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য ছিল, তখন ভারত সম্পূর্ণ নির্বিকারী ছিল। এখন সেই রাজ্য আর
নেই। সেই রাজ্য কোথায় গেলো - এই প্রস্তরবুদ্ধিসম্পন্নরা তা জানে না। আর সকলেই
নিজ-নিজ ধর্ম-স্থাপককে জানে। একমাত্র ভারতবাসীরাই, না নিজেদের ধর্মকে জানে, না
নিজেদের ধর্ম-স্থাপককে জানে। শিখ-ধর্মাবলম্বীদেরও জানা আছে যে, আমাদের শিখ ধর্ম
পূর্বে ছিল না। গুরুনানক সাহেব এসে স্থাপন করেছেন তাহলেঈ অবশ্যই সুখধামে থাকবে না।
তখনই গুরুনানক সাহেব পুনরায় এসে (শিখধর্ম) স্থাপন করবেন কারণ ওয়ার্ল্ডের
হিস্ট্রী-জিওগ্রাফী তো রিপীট হয়, তাই না! খ্রীষ্টানধর্মও ছিল না, পরে স্থাপিত হয়েছে।
প্রথমে নতুন দুনিয়া ছিল, এক ধর্ম ছিল। শুধুমাত্র তোমরা ভারতবাসীরাই ছিলে, এক ধর্ম
ছিল, পুনরায় ৮৪ জন্ম নিতে-নিতে তোমরা এও ভুলে গেছো যে, তোমরাই দেবতা ছিলে। পুনরায়
৮৪ জন্ম তো আমরাই নিই। বাবা তখন বলেন যে - তোমরা নিজেদের জন্মকেও জানো না, তাই আমি
তোমাদের বলে দেই। আধাকল্প রাম-রাজ্য ছিল পুনরায় রাবণ-রাজ্য হয়েছে। প্রথমে
সূর্যবংশীয় পরম্পরা বা কুল, তারপর চন্দ্রবংশীয় পরম্পরা হলো রাম-রাজ্য।
লক্ষ্মী-নারায়ণের সূর্যবংশীয়-পরম্পরার রাজ্য ছিল, যারা সূর্যবংশীয় লক্ষ্মী-নারায়ণ
কুলের ছিল তারাই ৮৪ জন্ম নিতে-নিতে এখন রাবণ-কুলের হয়ে গেছে। পূর্বে
পূণ্যাত্মা-কুলের ছিল, এখন পাপাত্মা-কুলের হয়ে গেছে। ৮৪ জন্ম নিয়েছে, আর তারা (অজ্ঞানীরা)
তো বলে ৮৪ লক্ষ। এখন কে বসে ৮৪ লক্ষের বিচার অর্থাৎ হিসেব করবে, তাই কোনো
বিচার-মন্থন করেই না। এখন বাবা তোমাদের বোঝান যে, তোমরা বাবার সম্মুখে বসে রয়েছো।
নিরাকার পিতা এবং সাকার পিতা, ভারতে দুজনে-ই বিখ্যাত। গায়নও রয়েছে কিন্তু বাবাকেই
জানে না, অজ্ঞানতার নিদ্রায় শায়িত। জ্ঞানের দ্বারা জাগৃতি আসে। আলোয় মানুষ কখনো
ধাক্কা খায় না। অন্ধকারেই ধাক্কা খেতে থাকে। ভারতবাসী পূজ্য ছিল, এখন পূজারী হয়ে
গেছে। লক্ষ্মী-নারায়ণ পূজ্য ছিল, তাই না ! তাঁরা আবার কার পূজা করবে? নিজেদের চিত্র
তৈরী করে, নিজেদের পূজা তো করবে না। এটা তো আর হতে পারে না। বাচ্চারা, তোমরাই জানো
যে - আমরা পূজ্য ছিলাম, কিভাবে পুনরায় পূজারী হয়েছি। একথা আর কেউই বুঝতে পারে না।
বাবা-ই বোঝান, তাই তিনি বলেনও যে - ঈশ্বরের মতি-গতি সম্পূর্ণ আলাদা।
বাচ্চারা, তোমরা এখন
জেনেছো যে, বাবা সমগ্র দুনিয়ার থেকে আমাদের মতি-গতি একেবারে পৃথক করে দেন। সমগ্র
দুনিয়ায় অনেক মত-মতান্তর রয়েছে, এখানে তোমাদের ব্রাহ্মণদেরই মত এক। ঈশ্বরের মতি এবং
গতি। গতি অর্থাৎ সদ্গতি। সদ্গতিদাতা হলেন অদ্বিতীয় পিতা। গায়নও করা হয়, সকলের
সদ্গতিদাতা রাম। কিন্ত জানে না যে, রাম কাকে বলা হয়। তারা বলে, যেখানেই দেখো
রামই-রাম। একে বলা হয়, অজ্ঞানতার অন্ধকার। অন্ধকারে হয় দুঃখ, প্রকাশে থাকে সুখ।
অন্ধকারেই আহ্বান করে, তাই না! ঈশ্বরীয় বন্দনা (বন্দেগী) করার অর্থ হলো বাবাকে
আহ্বান করা, ভিক্ষা চায়, তাই না! এ তো দেবতাদের মন্দিরে গিয়ে ভিক্ষা চাওয়া হয়ে গেলো,
তাই না! সত্যযুগে ভিক্ষা চাওয়ার প্রয়োজনই নেই। ভিখারীকে ইনসলভেন্ট বলা হয়। সত্যযুগে
তোমরা কতো সভলেন্ট ছিলে (সমৃদ্ধশালী), তাকেই বলা হয় সভলেন্ট (সমৃদ্ধি। ভারত এখন হলো
ইনসভলেন্ট (কাঙ্গাল) । এও কেউ বোঝে না। কল্পের আয়ু উল্টোপাল্টা লিখে দেওয়ার জন্য
মানুষের মাথাই ঘুরে গেছে। বাবা অতি প্রেম-পূর্বক বসে বোঝান। কল্প-পূর্বেও বাচ্চাদের
বুঝিয়েছিলেন যে - আমাকে অর্থাৎ পতিত-পাবন বাবাকে স্মরণ করো তাহলেই পবিত্র হয়ে যাবে।
অপবিত্র কিভাবে হয়েছো? বিকারের খাদ পড়ে রয়েছে। সকল মানুষের মধ্যেই জং ধরে গেছে। এখন
সেই জং কিভাবে অপসারিত হবে? আমাকে স্মরণ কর। দেহ-অভিমান পরিত্যাগ করে দেহী-অভিমানী
হও। নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। প্রথমে তোমরা হলে আত্মা তারপর শরীর ধারণ করো। আত্মা
অবিনাশী, শরীরের মৃত্যু হয়ে যায়। সত্যযুগকে বলা হয় অমরলোক। কলিযুগকে বলা হয়
মৃত্যুলোক। দুনিয়ায় একথা কেউ-ই জানে না যে, অমরলোক ছিল পুনরায় তা মৃত্যুলোক কিভাবে
পরিণত হলো। অমরলোক অর্থাৎ যেখানে অকালমৃত্যু হয় না। সেখানে আয়ুও দীর্ঘ হয়। ওটাই হলো
পবিত্র দুনিয়া।
তোমরা হলে রাজঋষি। ঋষি
পবিত্রকে বলা হয়। তোমাদের পবিত্র কে বানাচ্ছেন? ওদের করেছে শঙ্করাচার্য, তোমাদের
করছেন শিবাচার্য। ইনি কোনোকিছু পড়েননি। এঁনার মাধ্যমে শিববাবা এসে তোমাদের পড়ান।
শঙ্করাচার্য তো মাতৃগর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছে, উপর থেকে অবতরিত তো হননি। বাবা তো এঁনার
মধ্যে প্রবেশ করেন, আসেন যান। মালিক তিনি, যার মধ্যে চান তার মধ্যেই যেতে পারেন।
বাবা বুঝিয়েছেন, কারোর কল্যাণার্থে আমি প্রবেশ করি। আসি তো সেই পতিত শরীরেই, তাই
না! অনেকের কল্যাণ করি। বাচ্চাদের বুঝিয়েছি -- মায়াও কম অর্থাৎ দুর্বল নয়। কখনো-কখনো
ধ্যানের মধ্যে মায়া প্রবেশ করে উল্টোপাল্টা বলায়, তাই বাচ্চাদের অনেক সচেতন থাকতে
হবে। অনেকের মধ্যেই মায়া যখন প্রবেশ করে তখন বলে যে - আমি শিব, আমি অমুক। মায়া
অত্যন্ত শয়তান (অতি মন্দ)। সমঝদার অর্থাৎ অনুভাবী বাচ্চারা ভালোভাবে বুঝে যায় যে,
এরমধ্যে কে প্রবেশ করেছে? এই শরীর (ব্রহ্মার) তো ওনার জন্যই ধার্য করা রয়েছে, তাই
না! তাহলে আমরা অন্যের (কথা) শুনবো কেন? যদি শোনো তাহলে বাবাকে জিজ্ঞাসা করে নাও
যে, এ কথা সঠিক কি সঠিক নয়? বাবা তৎক্ষণাৎ বুঝিয়ে দেবেন। অনেক ব্রাহ্মনীরাও এসব কথা
বুঝতে পারে না যে, এসব কি? কারোর মধ্যে তো এমনভাবে প্রবেশ করে যে, চড়ও মেরে দেয়,
গালিও দিতে থাকে। এখন বাবা কি গালি দেবেন, না তা দেবেন না। এইসব কথাও অনেক বাচ্চারা
বুঝতে পারে না। ফার্স্টক্লাস অর্থাৎ মহারথী বাচ্চারাও কখনো-কখনো ভুলে যায়। সবকথাই
জিজ্ঞাসা করা উচিত কারণ অনেকের মধ্যেই মায়া প্রবেশ করে যায়। তখন ধ্যানমগ্ন হয়ে
কি-কি বলতে থাকে। এতেও অনেক সতর্ক হওয়া উচিত। বাবাকে সম্পূর্ণ সমাচার দিতে হবে।
অমুকের মধ্যে মাম্মা আসেন, অমুকের মধ্যে বাবা আসেন - বাবার একমাত্র আজ্ঞা হলো, এ
সমস্ত কথা পরিত্যাগ করে মামেকম্ স্মরণ করো। বাবাকে আর সৃষ্টি-চক্রকে স্মরণ করো।
রচয়িতা এবং রচনাকে যারা স্মরণ করে তাদের মুখমন্ডল সদাই প্রফুল্লিত থাকবে। অনেকেই
রয়েছেন যারা (বাবাকে) স্মরণ করে না। অত্যন্ত কঠিন কর্মবন্ধন রয়েছে । বিবেক বলে -
যখন বাবাকে পেয়েছি, আর তিনি বলছেন যে, আমাকে স্মরণ করো তখন কেন আমরা স্মরণ করবো না?
কিছু হলেই বাবাকে জিজ্ঞাসা করো। বাবা বোঝাবেন যে, কর্মবন্ধন তো এখনও রয়ে গেছে, তাই
না। কর্মাতীত অবস্থা যখন হয়ে যাবে তখন তোমরা সদাই প্রফুল্লিত থাকবে। ততক্ষণ পর্যন্ত
কিছু না কিছু হতেই থাকে। এও জানো যে, শিকারের মৃত্যু শিকারীর জয় (কারোর সর্বনাশ,
কারোর পৌষমাস)। বিনাশ হবেই। তোমরা ফরিস্তা হয়ে যাও। বাচ্চারা, এই দুনিয়ায় তোমাদের
আর বাকি অল্পদিন রয়েছে পুনরায় তোমাদের এই স্থূললোক মনে আসবে না। সূক্ষ্মলোকে আর
মূললোক অর্থাৎ পরমধামই স্মরণে আসবে। সূক্ষ্মলোকে-নিবাসীদের বলা হয় ফরিস্তা। তা অতি
অল্পসময়ের জন্য হও যখন তোমরা কর্মাতীত অবস্থাকে প্রাপ্ত করো। সূক্ষ্মলোকে হাড়-মাংস
থাকে না। হাড়-মাংস যদি না থাকে তাহলে বাকি কি আর থাকে? শুধুমাত্র সূক্ষ্ম শরীর থাকে।
এমন নয় যে, নিরাকার হয়ে যায়। না, সূক্ষ্ম আকার থাকে। ওখানকার ভাষা মুভি অর্থাৎ
নির্বাক চলচ্চিত্র চলে। আত্মা শব্দ থেকে(শব্দের জগতের) ঊর্ধ্বে বা ওপারে থাকে। তাকে
বলা হয় সূক্ষ্ম-সংসার। সেখানে সূক্ষ্ম আওয়াজ হয়। এখানে হলো টকী অর্থাৎ সবাক। পুনরায়
হলো মুভি, তারপরে আসে সাইলেন্স। এখানে কথা বলা হয়। এ হলো ড্রামার পূর্ব-নির্ধারিত
পার্ট । ওখানে থাকে সাইলেন্স। ওটা হলো মুভি আর এটা হলো টকী। এই তিন লোকেরও স্মরণকারী
কোনো বিরল ব্যক্তিই হবেন। বাবা বলেন - বাচ্চা! শাস্তিভোগ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য
অন্ততপক্ষে ৮ ঘন্টা কর্মযোগী হয়ে কর্ম করো, ৮ ঘন্টা বিশ্রাম করো আর ৮ ঘন্টা বাবাকে
স্মরণ করো। এমন অভ্যাসের দ্বারা তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে। নিদ্রাবস্থায় থাকা, এ কোন
বাবার স্মরণ নয়। এমনও যেন কেউ মনে না করে যে, আমরা বাবারই সন্তান, তাই না! তাহলে
স্মরণ কি আর করবো! না, বাবা তো বলেন যে, আমাকে ওখানে স্মরণ করো। নিজেকে আত্মা
নিশ্চয় করে আমাকে স্মরণ করো। যোগবলের দ্বারা যতক্ষণ না পর্যন্ত তোমরা পবিত্র হচ্ছো,
ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ঘরেও ফিরে যেতে পারবে না। আর তা নাহলে সাজাভোগ করে যেতে হবে।
সূক্ষ্মলোক, মূললোকেও যেতে হবে পুনরায় স্বর্গে আসতে হবে। বাবা বুঝিয়েছেন যে,
ভবিষ্যতে সংবাদপত্রেও পড়বে, এখনও অনেক সময় আছে। এত-এত রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে।
দক্ষিণ, উত্তর, পূর্ব, পশ্চিম ভারতে তো কত। সংবাদপত্রের মাধ্যমেই আওয়াজ অর্থাৎ খবর
(চারিদিকে) ছড়িয়ে পড়বে। বাবা বলেন, আমাকে স্মরণ করো তবেই তোমাদের পাপ খন্ডিত হবে।
আহ্বানও করে - হে পতিত-পাবন, লিবারেটর (মুক্তিদাতা) আমাদের দুঃখ থেকে মুক্ত করো।
বাচ্চারা জানে যে, ড্রামার প্ল্যান অনুযায়ী বিনাশও হতেই হবে। এই লড়াই-এর পর পুনরায়
শান্তি-ই শান্তি আসবে, সুখধাম হয়ে যাবে। সব উথাল-পাথাল হয়ে যাবে। সত্যযুগে হয়ই এক
ধর্ম। কলিযুগে অনেক ধর্ম। এ তো যে কেউই বুঝতে পারে। সর্বপ্রথমে আদি সনাতন দেবী-দেবতা
ধর্ম ছিল, যখন সূর্যবংশীরা ছিল তখন চন্দ্রবংশীয়রা ছিল না, চন্দ্রবংশীরা পরে আসে।
পরে এই দেবী-দেবতা ধর্ম প্রায়ঃ লুপ্ত হয়ে যায়। পরে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা আসে। সেও
যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের সংস্থা বৃদ্ধি পায়, ততক্ষণ পর্যন্ত কি জানা যায়, না জানা
যায় না। বাচ্চারা, এখন তোমরাই সৃষ্টির আদি-মধ্য-অন্তকে জানো। তোমাদের জিজ্ঞাসা করবে
যে, সিঁড়িতে শুধু ভারতবাসীদেরই কেন দেখানো হয়েছে? বলো, এই খেলা ভারতেই হয়। আধাকল্প
চলে ওদের(দেবী-দেবতা) পার্ট, বাকি দ্বাপর, কলিযুগে অন্যান্য সব ধর্ম আসে। (সৃষ্টিচক্রে)
গোলোকে এই সমগ্র নলেজ রয়েছে। গোলক তো অতি উত্তম। সত্যযুগ-ত্রেতা হলো শ্রেষ্ঠাচারী
দুনিয়া। দ্বাপর-কলিযুগ হলো ভ্রষ্টাচারী দুনিয়া। এখন তোমরা সঙ্গমে রয়েছ। এ হলো
জ্ঞানের কথা। এই চার যুগের চক্র কীভাবে আবর্তিত হয় - তা কারোরই জানা নেই। সত্যযুগে
এই লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজ্য হয়। এঁনারাও কি জানে যে, সত্যযুগের পর ত্রেতা আসবে,
ত্রেতার পর আবার দ্বাপর, কলিযুগ আসবে। এখানেও (লৌকিকে) মানুষের একদমই জানা নেই।
অবশ্যই বলে কিন্তু চক্র কিভাবে আবর্তিত হয় তা কেউ জানে না, সেইজন্য বাবা বোঝান -
সম্পূর্ণ জোর গীতার উপর রাখো। সত্যিকারের গীতা শুনলে স্বর্গবাসী হয়। এখানে শিববাবা
স্বয়ং শোনান, ওখানে মানুষ পড়ে। গীতাও সর্বপ্রথম তোমরাই পড়ো। ভক্তিতেও সর্বপ্রথমে
তোমরাই যাও, তাই না! শিবের পূজারী প্রথমে তোমরা হও। সর্বপ্রথম তোমরাই অব্যভিচারী
পূজা করো, অদ্বিতীয় শিববাবার। আর কারোর ক্ষমতা আছে কি সোমনাথ মন্দির তৈরী করার, না
তা নেই। বোর্ডে কতরকমের কথা লিখতে পারা যায়। এও লেখা যায় যে, ভারতবাসীরা
সত্যিকারের গীতা শুনেই সত্যখন্ডের মালিক হয়।
বাচ্চারা, এখন তোমরা
জানো যে, আমরা সত্যিকারের গীতা শুনে স্বর্গবাসী হচ্ছি। যখন তোমরা বোঝাও তখন তারা বলে
- হ্যাঁ, একদম সঠিক, বাইরে বেরোলেই শেষ। যেখানকার সেখানেই রয়ে যায়। আচ্ছা।
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
রচয়িতা আর রচনার জ্ঞানকে স্মরণ করে প্রফুল্ল থাকতে হবে। স্মরণের যাত্রার মাধ্যমে
নিজের পুরানো সমস্ত কর্মবন্ধন খন্ডিত করে কর্মাতীত অবস্থা তৈরী করতে হবে।
২ ) ধ্যান,
সাক্ষাৎকারের (দীদার) সময়ই মায়া বেশী করে প্রবেশ করে, তাই সচেতন থাকতে হবে, বাবাকে
সমাচার দিয়ে তাঁর রায় নিতে হবে, কোনো ভূল যেন না করা হয়।
বরদান:-
নিজের
শুভ ভাবনার দ্বারা নির্বল আত্মাদের মধ্যে বল ভরে দিয়ে সদা শক্তি স্বরূপ ভব
সেবাধারী বাচ্চাদের
বিশেষ সেবা হলো - নিজে শক্তি স্বরূপ থাকবে আর সবাইকে শক্তি স্বরূপ বানাবে অর্থাৎ
নির্বল আত্মাদের মধ্যে বল ভরে দেবে, এরজন্য সদা শুভ ভাবনা আর শ্রেষ্ঠ কামনা স্বরূপ
হও। শুভ ভাবনার অর্থ এটা নয় যে কারোর প্রতি ভাবনা রাখতে-রাখতে তার ভাবেই মোহিত হয়ে
যাবে, এই ভুল কখনই করবে না। শুভ ভাবনাও অসীমের হবে। কোনও একজনের প্রতি বিশেষ ভাবনা
রাখাও হল ক্ষতিকারক এইজন্য অসীম জগতে স্থিত হয়ে নির্বল আত্মাদেরকে নিজের প্রাপ্ত
হওয়া শক্তিগুলির আধারে শক্তি স্বরূপ বানাও।
স্লোগান:-
অলংকার
হলো ব্রাহ্মণ জীবনের শৃঙ্গার - সেইজন্য অলংকারী হও, দেহ-অহংকারী নয়।
অব্যক্ত ঈশারা :-
সত্যতা আর সভ্যতারূপী কালচারকে ধারণ করো
কিছু বাচ্চা বলে যে -
সেইভাবে ক্রোধ আসেনা কিন্তু কেউ মিথ্যা বললে ক্রোধ এসে যায়। সে মিথ্যা বললো আর তুমি
ক্রোধ সহকারে বললে, তাহলে দুজনের মধ্যে রাইট কে? কেউ চালাকির সাথে বলে আমি তো ক্রোধ
করিনা, আমার আওয়াজটাই উঁচু, আওয়াজই এমন তেজ কিন্তু যখন সায়েন্সের সাধনের দ্বারা
আওয়াজকে কম বেশী করা যায় তাহলে কেন সাইলেন্সের শক্তি দ্বারা নিজের আওয়াজের গতিকে
কম-বেশি করতে পারো না?