29-06-2025 প্রাতঃ মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ 31-12-2005 মধুবন


"নতুন বছরে নিজের পুরানো সমূহ সংস্কার যোগ-অগ্নিতে ভস্ম করে ব্রহ্মা বাবা সমান ত্যাগ, তপস্যা ও সেবাতে নম্বর ওয়ান হও"


তোমরা হয় সমুখে আছ অথবা দূরে বসে হৃদয়ের সমীপে আছ, চতুর্দিকের তোমাদের সবাইকে আজ বাপদাদা তিন প্রকারে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। এক - নব জীবনের অভিনন্দন, দুই - নব যুগের অভিনন্দন আর তিন - আজকের দিনে বছরের অভিনন্দন। তোমরাও সবাই নতুন বছরের অভিনন্দন জানাতে এবং নিতে এসেছ। বাস্তবে, নির্মল হৃদয়ের খুশির অভিনন্দন তোমরা ব্রাহ্মণ আত্মারা নিয়েও থাকো, দিয়েও থাকো। আজকের দিনের মাহাত্ম্য আছে। বিদায়েরও আর কল্যাণকারী শুভেচ্ছারও। বিদায় এবং কল্যাণী-শুভেচ্ছার সঙ্গমযুগ। আজকের দিনকে তোমরা বলবে সঙ্গমের দিন। সঙ্গমের মহিমা অনেক বড়। তোমরা সবাই জানো যে, সঙ্গমযুগের মহিমার কারণে আজকাল পুরানো আর নতুন বছরের সঙ্গম কত ধুমধামের সাথে উদযাপন করে। সঙ্গমযুগের মহিমার কারণই হলো এই পুরানো বছর আর নতুন বছরের সঙ্গমের মহিমা। যেখানে দুটো নদী মিলিত হয়, সেটা সঙ্গম, তারও মহিমা আছে। যেখানে নদী আর সাগরের সঙ্গম হয় তারও মহিমা রয়েছে। কিন্তু সর্বাপেক্ষা বড় মহিমা এই সঙ্গম যুগের, পুরুষোত্তম যুগের, যেখানে তোমরা ভাগ্যবান ব্রাহ্মণ আত্মারা বসে আছ। এই নেশা আছে তো না! যদি তোমাকে কেউ জিজ্ঞাসা করে তুমি কোন সময়ে রয়েছো? কলিযুগে আছ, সত্যযুগে আছ? তাহলে, গর্বের সাথে কী বলবে? আমি এই সময় পুরুষোত্তম সঙ্গম যুগে আছি। তোমরা কলিযুগী নও, সঙ্গমযুগী। আর এই সঙ্গম যুগের বিশেষ মহিমা কেন রয়েছে? কেননা, ভগবান আর বাচ্চাদের মিলন হয়, মেলা হয় যা কোনও যুগে হয় না। তোমরা মেলা উদযাপন করতে এসেছ তো না! তোমরা কোথা কোথা থেকে এসেছ মিলন মেলা উদযাপন করার জন্য। কখনো স্বপ্নেও ভেবেছিলে যে ড্রামাতে আমি আত্মার এমনও ভাগ্য স্থিরীকৃত হয়ে আছে! ছিল আর আছে - আত্মার পরমাত্মার সাথে মিলিত হওয়া। বাবাও প্রত্যেক বাচ্চার ভাগ্য দেখে আনন্দিত হন। বাঃ! ভাগ্যবান বাচ্চারা বাঃ! নিজের ভাগ্যকে দেখে হৃদয়ে নিজের প্রতি বাঃ আমি বাঃ! বাঃ! আমার ভাগ্য বাঃ! বাঃ! আমার বাবা বাঃ! বাঃ! আমার ব্রাহ্মণ পরিবার বাঃ! এই বাঃ বাঃ এর গীত অটোমেটিক্যালি গেয়ে থাকো তো না!

তো আজ এই সঙ্গমের সময় তোমরা নিজেদের অভ্যন্তরে ভেবে নিয়েছ যে কোন কোন বিষয়ে বিদায় দিতে হবে? ভেবেছ সবাই? সদাকালের জন্য বিদায় দিলে সদাকালের অভিনন্দন উদযাপন করতে পারবে। এমন শুভেচ্ছা দাও যাতে তোমাদের মুখমণ্ডল দেখে যে আত্মারাই সামনে আসুক না কেন তারাও যেন শুভ কামনা-শুভ ভাবনা প্রাপ্ত করে খুশি হয়ে যায়। যে হৃদয় থেকে শুভেচ্ছা দেয় বা নেয় সে সদাই কেমন প্রতীয়মান হয়? সঙ্গমযুগী ফরিস্তা। তোমাদের সকলেরই পুরুষার্থ এটাই তো না - ব্রাহ্মণ হতে ফরিস্তা, ফরিস্তা হতে দেবতা। কেননা, বাবাকে সর্বপ্রকার সংকল্প এবং প্রবৃত্তির যে কোনো কিছু, কর্মের বোঝা রয়েছে সেসব তো দিয়ে দিয়েছো তাই না! বোঝা দিয়ে দিয়েছ, নাকি একটু রয়ে গেছে? কেননা, সামান্যতম বোঝা তোমাদের ফরিস্তা হতে দেবে না এবং যখন বাবা এসেছেন বাচ্চাদের বোঝা নেওয়ার জন্য তখন বোঝা দেওয়া কঠিন কি! কঠিন নাকি সহজ? যারা মনে করো বোঝা দিয়ে দিয়েছ তারা হাত উঠাও। দিয়ে দিয়েছ? দেখ, ভেবে হাত উঠিও। বোঝা দিয়ে দিয়েছো? আচ্ছা। দিয়ে দিয়েছো? অভিনন্দন। দিয়ে দিয়েছ তো অনেক অভিনন্দন তোমাদের। আর যারা দাওনি তারা কিসের জন্য রেখেছো? বোঝার প্রতি প্রীতি আছে কি? বোঝা ভালো লাগে? দেখ বাপদাদা সব বাচ্চাকে কী বলেন? ও আমার নিশ্চিন্ত বাদশাহ বাচ্চারা! তো বোঝার চিন্তা হয়! তো বোঝা নেওয়ার জন্য বাবা এসেছেন, কারণ বাবা দেখছেন ৬৩ জন্ম যাবৎ বোঝা উঠাতে উঠাতে সব বাচ্চা অনেক ভারী হয়ে গেছে। সেইজন্য যখন বাবা বাচ্চাদের ভালোবাসার সাথে বলছেন বোঝা দিয়ে দাও। তবুও কেন রেখে দিয়েছ? ভালো লাগে বোঝা? সবচাইতে সূক্ষ্ম বোঝা হলো পুরানো সংস্কারের। বাপদাদা সব বাচ্চার এই বছরের চার্ট দেখেছেন, কেননা, এই বছর সম্পূর্ণ হতে চলেছে তো না! তোমরাও সবাই বছরের নিজের নিজের চার্ট করে থাকবে। তো বাপদাদা দেখেছেন যে কিছু বাচ্চার এই পুরানো সংসারের আকর্ষণ কম হয়েছে। পুরানো সম্বন্ধেরও আকর্ষণ কম হয়েছে কিন্তু মেজরিটির মধ্যে পুরানো সংস্কার ও তার বোঝা রয়েছে। কোনো না কোনো রূপে সেটা মন্সাতে অশুদ্ধ সংকল্প না থাকলেও, কিন্তু ব্যর্থ সংকল্পের সংস্কার এখনও পার্সেন্টে দেখা যাচ্ছে। বাচাতেও দেখা যায়। সম্বন্ধ-সম্পর্কেও কোনো না কোনো সংস্কার এখনও দেখা যাচ্ছে। তো আজ বাপদাদা সব বাচ্চাকে অভিনন্দনের সাথে সাথে এই ইশারা দেন যে এই থেকে যাওয়া সংস্কার সময়কালে প্রতারণাও করবে আর অন্তে প্রতারণা করার নিমিত্ত হয়ে যাবে। সেইজন্য আজ সংস্কারের সংস্করণ করো। প্রত্যেকে তোমরা নিজের সংস্কারকে জানো আর ছাড়তেও চাও, তোমরা বিরক্তও, কিন্তু সদাসর্বদার জন্য পরিবর্তন করতে তীব্র পুরুষার্থ হয় না। পুরুষার্থ তোমরা করো কিন্তু তীব্র পুরুষার্থী নও। কারণ? তীব্র পুরুষার্থ কেন হয় না? কারণ এটাই, যেমন তোমরা রাবনকে মারো, কেবল মারো না তাকে পুড়িয়ে দাও, ঠিক তেমনই সংস্কার মারার জন্য তোমরা পুরুষার্থ করো, সংস্কার একটু বেঁহুশও হয় কিন্তু না জ্বালানোর ফলে মাঝে মাঝে বেঁহুশ অবস্থা থেকে জেগেও ওঠে। তাই পুরানো সংস্কারের সংস্করণ করার জন্য এই নতুন বছরে যোগ অগ্নি দ্বারা জ্বালানোর দৃঢ় সংকল্পের অ্যাটেনশন রাখো। তোমরা বলে থাকো তো না এই নতুন বছরে কী করতে হবে? সেবার ব্যাপার তো আলাদা কিন্তু প্রথমে স্বয়ং-এর বিষয় - তোমরা যোগ লাগাও, বাপদাদা বাচ্চাদের যোগে অভ্যাসরত দেখে থাকেন। অমৃতবেলাতেও তোমরা অনেক পুরুষার্থ করো কিন্তু যোগ তপস্যা, তপ রূপে (গভীরভাবে আধ্যাত্মিক অনুশীলন) করো না। ভালবাসার সাথে অবশ্যই স্মরণ করো, অনেক আধ্যাত্মিক বার্তালাপও করো, শক্তি নেওয়ারও অভ্যাস করো, কিন্তু যে সংকল্পই করো না কেন, স্মরণ এতটাও পাওয়ারফুল বানাও না যাতে সংকল্প যদি করো বিদায়ের তো সেটা বিদায় হয়ে গেল। তোমরা যোগকে যোগ-অগ্নি রূপে কার্যে প্রয়োগ করো না। সেইজন্য যোগকে পাওয়ারফুল বানাও। একাগ্রতার শক্তি সংস্কার ভস্ম করার জন্য বিশেষভাবে আবশ্যক। যে স্বরূপে একাগ্র হতে চাও, যত সময় একাগ্র হতে চাও, ঠিক সেভাবেই একাগ্রতার সংকল্প করলে তোমরা সংস্কার ভস্ম করতে পারবে। একেই বলে, যোগ অগ্নি। নামের চিহ্নমাত্র সমাপ্ত। মেরে ফেললে তবুও লাশ তো থাকে, তাই না! ভস্ম হওয়ার পর তার লেশমাত্র শেষ হয়ে যায়। তো এই বছরে যোগকে পাওয়ারফুল স্টেজে পৌঁছাও। সুতরাং যে স্বরূপে থাকতে চাও, তোমরা যখন মাস্টার সর্বশক্তিমান তখন কোনকিছু সমাপ্ত করার শক্তিকে অর্ডার করবে আর সেই শক্তি তোমাদের অর্ডার মানবে না এতো হতেই পারে না। মালিক তোমরা। নিজেদের মাস্টার বলে থাকো তো না? সুতরাং মাস্টার অর্ডার করবে আর শক্তি যদি হাজির না হয় তাহলে কি সে মাস্টার হয়? তো বাপদাদা দেখেছেন যে পুরানো সংস্কারের কিছু না কিছু অংশ এখনও রয়ে গেছে এবং সেই অংশ মাঝে মাঝে বংশের জন্ম দেয়, যা কাজে পরিণত করতে তোমাদের বাধ্য করে, যুদ্ধ করতে হয়। তো সময় অনুসারে বাচ্চাদের যুদ্ধের স্বরূপ বাপদাদার পছন্দ হয় না। বাপদাদা প্রত্যেক বাচ্চাকে মালিক রূপে দেখতে চান। তোমরা অর্ডার করো আর শক্তির উপস্থিতি - জী হুজুর।

তাহলে, শুনেছো এই বছরে স্ব এর প্রতি কী করতে হবে? শক্তিশালী, নিশ্চিন্ত বাদশাহ হওয়া, কেননা, এটাই সবার লক্ষ্য। যে কোনও কাউকে জিজ্ঞাসা করো তারা কী বলে? আমরা বিশ্বের রাজ্য প্রাপ্ত করবো, রাজ্য অধিকারী হবো। নিজেদের রাজযোগী বলে থাকো। তোমরা প্রজাযোগী কী? এই সমগ্র সভাতে কেউ আছো যে প্রজাযোগী? আছো, যে প্রজাযোগী রাজযোগী নও? টিচার্স, সেরকম কেউ আছে? তোমাদের সেন্টারে কেউ প্রজাযোগী আছে? প্রজাযোগীতে কেউ হাত উঠায় না। ভালো লাগে না, তাইতো না! আর বাবাও গৌরবান্বিত হন। বাপদাদা গর্বের সাথে বলেন যে সঙ্গমেও সব বাচ্চা রাজা বাচ্চা। কোনো বাবা এরকম নেশার সাথে বলতে পারে না যে আমার প্রত্যেক বাচ্চা রাজা। কিন্তু বাপদাদা বলেন যে প্রত্যেক বাচ্চা স্বরাজ্য অধিকারী রাজা। প্রজাযোগীতে তোমরা হাত উঠাওনি তো না, তাহলে তোমরা রাজা, তাই না! কিন্তু তেমন ঢিলেঢালা গোছের রাজা হয়ো না, যাতে অর্ডার করলে অথচ এলোই না। হীনবল রাজা হয়ো না। পিছনের তোমরা কে? যারা মনে করো রাজযোগী তারা হাত তোলো। কিছু উপরেও বসে আছে (গ্যালারিতে, আজ হলে ১৮ হাজার ভাই-বোন বসে আছে) বাপদাদা দেখছেন, যারা উপরে আছো, হাত তোলো।

তো এখন এই লাস্ট টার্ন শুরু হয়ে যাবে। সুতরাং বাপদাদা তিন মাস দিচ্ছেন, ঠিক আছে? বাবা কী তোমাদের দেবেন? তিনি হোমওয়ার্ক দেবেন। কেননা, মাঝে মাঝের এই হোমওয়ার্ক লাস্ট পেপারে জমা হবে। তো তিন মাসে প্রত্যেকের নিজের চার্ট চেক করা উচিৎ - আমি মাস্টার সর্বশক্তিমান হয়ে কোনও কর্মেন্দ্রিয়কে, কোনও শক্তিকে যখন অর্ডার করছি, সেই অর্ডার সে প্র্যাকটিক্যালি মানছে কি মানছে না! তোমরা করতে পারবে এটা? প্রথম লাইনের তোমরা করতে পারো? হাত উঠাও। আচ্ছা। তিন মাস কোনও পুরানো সংস্কার যেন আঘাত না করে। অসতর্ক হয়ো না, হয়ে যাবে .. এমন রয়্যাল অসতর্কতা আসতে দিও না। বাপদাদার সাথে খুব মিষ্টি মিষ্টি কথা বলো তোমরা, বলে থাকো বাবা আপনি চিন্তা করবেন না, হয়ে যাবো। বাপদাদা কী করবেন? শুনে হেসে দেন। কিন্তু এই তিন মাসে যদি এরকম কথা বলো তবে বাপদাদা সেটা মানবেন না। মঞ্জুর? হাত তোলো। হৃদয় থেকে হাত তুলো, সমাবেশের কারণে হাত তুলো না। আমাকে করতেই হবে, যদি সব কিছু সহ্যও করতে হয়, কিছু যদি ছাড়তেও হয়, কোনো ক্ষতি নেই। তবুও আমাকে করতেই হবে। নিশ্চিত? নিশ্চিত? নিশ্চিত? টিচার্স করতে হবে?

আচ্ছা, মুকুট পরিহিত এই বাচ্চারা কী করবে? মুকুট ভালো ক'রে পরে নিয়েছ তো? তোমাদেরও করতে হবে। আচ্ছা। দেখ বাচ্চারা হাত উঠাচ্ছে। যদি না করবে তবে কী করবে? সেটাও বলে দাও। তারপরে বাপদাদা একটা সিজন অনুমতি দেবেন না আসার জন্য, কেননা, বাপদাদা দেখছেন যে, সময় তোমাদের জন্য প্রতীক্ষা করছে। তোমরা সময়ের প্রতীক্ষা করো না, বরং তোমরা বন্দোবস্ত করে দিয়ে থাকো। সময় তোমাদের প্রতীক্ষা করছে। প্রকৃতিও, সতঃ প্রধান প্রকৃতি তোমাদের আহ্বান করছে। তো তিন মাসে থেকে যাওয়া সংস্কার নিজের শক্তিশালী স্টেজে পরিবর্তন করো। যদি তিন মাস অ্যাটেনশন রাখা যায় তবে তা' ভবিষ্যতেও অভ্যাস হয়ে যাবে। একবার যদি পরিবর্তনের বিধি শিখে যাও তাহলো খুব কাজে আসবে। তোমরা সময়ের অপেক্ষা ক'রো না, কবে বিনাশ হবে, কবে বিনাশ হবে, আত্মিক কথোপকথনে সবাই জিজ্ঞাসা করে। বাহ্যত:, তোমরা বলো না কিন্তু অভ্যন্তরে তোমরা বলে থাকো জানি না, কবে বিনাশ হবে! দু' বছরের মধ্যে হবে, ১০ বছরের মধ্যে হবে, কত বছরে হবে! তোমরা কেন সময়ের অপেক্ষা করো, সময় তোমাদের অপেক্ষা করছে। বাবাকে বলবো তারিখ বলে দাও, বছরও বলে দাও, ১০ বছর লাগবে, ২০ বছর লাগবে, কত বছর লাগবে?

বাপদাদা বাচ্চাদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছেন, সবাই তোমরা বাবা সমান হয়ে গেছ? পর্দা খুলবো? নাকি পর্দা যখন খুলবে তখন কেউ চুল আঁচড়াবে, কেউ কেউ ফেসে ক্রিম লাগাবে! যদি এভার রেডি হও, সংস্কার সমাপ্ত হয়ে যায় তবে বাপদাদার পর্দা খুলতে দেরি হবে না। অন্ততপক্ষে এভাররেডি তো হয়ে যাও আগে! হয়ে যাবো, হয়ে যাবো বলে বাবাকে অনেক সময় ধরে খুশি করেছ। এখন সেটা আর ক'রো না। হতেই হবে, করতেই হবে। বাবা সমান হতে হবে এই ব্যাপারে তো সবাই তোমরা হাত উঠিয়ে দাও, উঠানোর আবশ্যকতা নেই। ব্রহ্মা বাবাকে দেখ ত্যাগ, তপস্যা আর সেবা লাস্ট মুহূর্ত পর্যন্ত সাকার রূপে প্র্যাকটিক্যালি দেখিয়েছেন। শিব বাবা দ্বারা মহাবাক্য উচ্চারণ করে গেছেন নিজের ডিউটি হিসেবে, লাস্ট দিন পর্যন্ত ডিউটি পালন করেছেন। মনে আছে তো না? লাস্ট মুরলী। তিন শব্দের বরদান, মনে আছে? যার মনে আছে সে হাত উঠাও।

আচ্ছা সবার মনে আছে, অভিনন্দন। লাস্ট দিন পর্যন্ত ত্যাগও করেছেন, নিজের পুরানো কক্ষ ছাড়েননি। বাচ্চারা কত ভালবাসার সাথে ব্রহ্মা বাবাকে বলেছে, কিন্তু তিনি বলেছেন বাচ্চাদের জন্য বানানো হয়েছে, নিজে ইউজ করেননি। আর সদা আড়াইটে তিনটের সময় উঠে স্বয়ং-এর তপস্যা করেছেন, সংস্কার ভস্ম করেছেন তবেই তিনি কর্মাতীত অব্যক্ত হয়েছেন, ফরিস্তা হয়েছেন। যা ভেবেছেন তাই করে দেখিয়েছেন। তাঁর বলা, ভাবনা আর করা এই তিন সমান। ফলো ফাদার। লাস্ট পর্যন্ত নিজের কর্তব্যে পূর্ণ থেকেছেন, পত্রও লিখেছেন, কত পত্র লিখেছেন? সেবাও ছাড়েননি। ফলো ফাদার। অখণ্ড মহাদানী, মহাদানী নয় অখণ্ড মহাদানীর প্র্যাকটিক্যাল রূপ দেখিয়েছেন শেষ পর্যন্ত। লাস্ট পর্যন্ত বিনা আধারে তপস্বী রূপে বসেছেন। এখন বাচ্চারা বসার জন্য আধার নেয়, তাই না! কিন্তু ফাদার ব্রহ্মা আদি থেকে অন্ত পর্যন্ত তপস্বী রূপ বজায় রেখেছেন। চোখে চশমা পরেননি। এটা সূক্ষ্ম শক্তি। নিরাধার। শরীর পুরানো, দিন দিন প্রকৃতি জলবায়ু দূষিত হচ্ছে সেইজন্য বাপদাদা তোমাদের বলেন না যে, কেন তোমরা আধার নিয়ে থাকো, কেন চশমা পরো, পরো, পরলেও শক্তিশালী স্থিতি অবশ্যই বানাও। সারা বিশ্বের কার্য সমাপ্ত করেছো? বাপদাদা তোমাদের প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছেন, সবাই তোমরা সন্তুষ্ট কি বিশ্ব কল্যাণের কার্য সম্পূর্ণ হয়ে গেছে! হয়ে গেছে? যারা মনে করো যে বিশ্ব কল্যাণের কার্য সমাপ্ত হয়ে গেছে তারা হাত তোলো। একজনও নেই! তাহলে, কীভাবে বলো বিনাশ হবে? কাজ তো সম্পূর্ণ করনি!

চতুর্দিকের সদা উৎসাহ-উদ্দীপনায় যারা অগ্রচালিত, সদা মনোবলের সাথে বাপদাদার পদ্মগুন সহায়তার যোগ্য এমন বাচ্চাদের, সদা বিজয়ী রত্ন, সব কল্পে বিজয়ী হয়েছিল, এখনও আছে আর প্রতি কল্পে বিজয়ী হয়েই আছে, এমন বিজয়ী বাচ্চাদের, সদা এক বাবা দ্বিতীয় কেউ নয়, না সংসারের আকর্ষণ, না সংস্কারের আকর্ষণ - এই দুই আকর্ষণ থেকে মুক্ত থাকা সদা বাবা সমান বাচ্চাদের বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর নমস্কার।

বরদান:-
সদাকালের অ্যাটেনশনের দ্বারা বিজয় মালায় গাঁথা হয়ে বহু সময়ের বিজয়ী ভব

বহু সময়ের বিজয়ী, বিজয় মালার দানা হয়। বিজয়ী হওয়ার জন্য সদা বাবাকে সামনে রাখো - যা বাবা করেছেন তাই আমাকে করতে হবে। প্রতি কদমে যা বাবার সংকল্প সেটাই বাচ্চাদের সংকল্প, যা বাবার বোল সেটাই বাচ্চাদের বোল হতে হবে, তবেই বিজয়ী হবে। এই অ্যাটেনশন সদা কালের জন্য প্রয়োজন, তবে সদা কালের রাজ্য ভাগ্য প্রাপ্ত হবে, কেননা, যেমন পুরুষার্থ তেমনই প্রালব্ধ। সদাসর্বদার পুরুষার্থ যদি হয় তবে সদাকালের রাজ্যভাগ্য হয়।

স্লোগান:-
সেবাতে সদা জী হাজির করাই ভালোবাসার প্রকৃত প্রমাণ।

অব্যক্ত ইশারা :- আত্মিক স্থিতিতে থাকার অভ্যাস করো, অন্তর্মুখী হও যেমন, যে কোনও ব্যক্তি দর্পণের সামনে দাঁড়ালেই নিজের সাক্ষাৎকার করে, ঠিক তেমনই তোমার আত্মিক স্থিতি শক্তি রূপী দর্পণের সামনে যদি কোনো আত্মা আসে তবে এক সেকেন্ডে যেন স্ব স্বরূপের দর্শন বা সাক্ষাত্কার করে। তোমাদের প্রতিটা কর্মে, প্রতিটা আচরণে যেন আধ্যাত্মিকতার অ্যাট্রাক্শন থাকে। যারা স্বচ্ছ, আত্মিক বলযুক্ত আত্মা, তারা সবাইকে নিজের দিকে অবশ্যই আকর্ষণ করে।