29.11.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
যদি শিববাবাকে সমাদর করো, তবে তাঁর শ্রীমতানুসারে চলতে থাকো, শ্রীমতে চলার অর্থ হলো
বাবার কদর (সম্মান) করা"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা
বাবার থেকেও বড় জাদুকর - কীভাবে ?
উত্তরঃ
চ্চ থেকেও
উচ্চ বাবাকে নিজের সন্তান বানিয়ে দেওয়া, তন-মন-ধনের (সমর্পণ) দ্বারা বাবাকে নিজের
উত্তরাধিকারী করে তাঁর কাছে সম্পূর্ণ সমর্পিত হয়ে যাওয়া - এটাই হলো বাচ্চাদের
জাদুকরী। যে এখন ভগবানকে নিজের উত্তরাধিকারী বানায় সে ২১ জন্মের জন্য বাবার
প্রপার্টির উত্তরাধিকারী হয়ে যায়।
প্রশ্নঃ -
ট্রিবিউনাল (বিচারসভা)
কোন্ বাচ্চাদের জন্য বসে?
উত্তরঃ -
যারা দান করে দেওয়া বস্তু ফিরিয়ে নেওয়ার সঙ্কল্প করে, মায়ার বশবর্তী হয়ে ডিসসার্ভিস
করে, তাদের জন্য ট্রিবিউনাল বসে।
ওম্ শান্তি ।
আধ্যাত্মিক
বিচিত্র (চিত্রহীন অর্থাৎ নিরাকার) বাবা বসে বিচিত্র বাচ্চাদের বোঝান অর্থাৎ
দূরদেশ-নিবাসী যাঁকে পরমপিতা পরমাত্মা বলা হয়। অনেক-অনেক দূরদেশ থেকে এসে এই শরীরের
দ্বারা তোমাদের পড়াই। এখন যারা পড়ে তারা তো অটোমেটিক্যালি যিনি পড়ান তাঁর সঙ্গে যোগ
রাখেন। তাদের বলতে হয় না যে - হে বাচ্চারা, টিচারের সঙ্গে যোগ রাখো বা তাঁকে স্মরণ
করো। না, এখানে বাবা বলেন -- হে আত্মা-রূপী বাচ্চারা, আমি তোমাদের পিতাও, টিচারও,
গুরুও। এঁনার সঙ্গে যোগ রাখো অর্থাৎ বাবাকে স্মরণ করো। ইনি হলেন বিচিত্র বাবা। তোমরা
প্রতি মুহূর্তে এঁনাকে ভুলে যাও, তাই বলতে হয়। যিনি পড়ান তাঁকে স্মরণ করলেই তোমাদের
পাপ ভস্মীভূত হয়ে যাবে। ল' একথা বলে না যে, টিচার বলবে - আমাকে দেখো, এতেই অনেক লাভ।
বাবা বলেন, শুধুমাত্র আমাকে স্মরণ করো। এই স্মরণের বল এর দ্বারাই তোমাদের পাপ
খন্ডিত হবে, একে বলা হয় স্মরণের যাত্রা। আধ্যাত্মিক বিচিত্র বাবা এখন বাচ্চাদের
দেখেন। বাচ্চারাও নিজেদের আত্মা মনে করে বিচিত্র বাবাকে স্মরণ করে। তোমরা তো বারে
বারে শরীরে আসো বা শরীর ধারণ করো। আমি তো সমগ্র কল্পে শরীর ধারণ করি না, শুধুমাত্র
এই সঙ্গমযুগেই অনেক দূরদেশ থেকে আসি - বাচ্চারা, তোমাদের শিক্ষা প্রদান করতে। একথা
সঠিকভাবে স্মরণে রাখতে হবে। বাবা তোমাদের পিতা, শিক্ষক, সদ্গুরু। তিনি বিচিত্র।
ওঁনার নিজস্ব শরীর নেই, তাহলে আসবেন কীভাবে? তিনি বলেন, আমাকে প্রকৃতির, অন্য কোনো
মুখের আধার (সাহায্য) নিতে হয়। আমি তো বিচিত্র (চিত্রহীন)। তোমরা সকলেই হলে
চিত্র-যুক্ত (সাকারী)। আমারও তো অবশ্যই রথ(শরীর) চাই, তাই না। ঘোড়ার গাড়ি করে তো
আসবো না, তাই না। বাবা বলেন, আমি এই শরীরে প্রবেশ করি, যে নম্বর ওয়ান সে-ই লাস্ট
নম্বর হয়। যে সতোপ্রধান ছিল সেই তমোপ্রধান হয়ে যায়। তাই তাদেরকেই পুনরায় সতোপ্রধান
বানানোর জন্য বাবাকে পড়াতে হয়। তিনি বোঝান - বাচ্চারা, এই রাবণ-রাজ্যে তোমাদের
বিকারের উপরে বিজয় প্রাপ্ত করে জগতজীৎ হতে হবে। বাচ্চাদের একথা স্মরণে রাখতে হবে
যে, আমাদের বিচিত্র বাবা পড়ান। বাবাকে যদি স্মরণ না করো তবে পাপ কীভাবে ভস্মীভূত হবে?
একথাও শুধু এখনই সঙ্গমযুগেই তোমরা শোনো। একবার যাকিছু ঘটে যায় পরবর্তী কল্পে সেটাই
রিপিট হবে। কতো ভালোভাবে বোঝান হয়, এরজন্য অতি বিশাল বুদ্ধির প্রয়োজন। এ কোনো
সাধু-সন্ত ইত্যাদিদের সৎসঙ্গ নয়। ওঁনাকে তোমরা বাবাও বলো, আবার বাচ্চাও বলো। তোমরা
জানো, ইনি আমাদের পিতাও, আবার সন্তানও। আমরা এই (বাবা) বাচ্চাকে আমাদের সবকিছুর
উত্তরাধিকার দিয়ে, বাবার থেকে ২১ জন্মের জন্য উত্তরাধিকার নিয়ে নিই। সব আবর্জনা
প্রদান করে বাবার থেকে আমরা বিশ্বের রাজত্ব (বাদশাহী) প্রাপ্ত করি। আমরা বলি যে,
বাবা আমরা ভক্তিমার্গে বলেছিলাম যে যখন তুমি আসবে তখন আমরা তোমার কাছে তন-মন-ধনসহ
সমর্পিত হয়ে যাবো। লৌকিক পিতাও তো বাচ্চাদের কাছে নিজেকে সমর্পণ করে দেন, তাই না।
এখানে তোমরা কেমন বিচিত্র বাবা পেয়েছো, ওঁনাকে স্মরণ করো তাহলেই তোমাদের পাপ
ভস্মীভূত হয়ে যাবে এবং তোমরা নিজেদের ঘরে চলে যাবে। পথ কত লম্বা। দেখো, বাবা কতদূর
থেকে আসেন পুরানো রাবণ-রাজ্যে। তিনি বলেন, আমার ভাগ্যে পবিত্র শরীর পাওয়া সম্ভব নয়।
পতিতদের পবিত্র করতে কীভাবে আসবো। আমাকে পতিত দুনিয়ায় এসেই সকলকে পবিত্র করতে হয়।
তাই এমন টিচারের সমাদরও তো করা উচিত, তাই না। অনেকেই আছে যারা সম্মান করতে জানে না।
এও তো ড্রামানুসারে হতেই হবে। রাজধানীতে তো সবই চাই, তাই না - নম্বরের ক্রমানুসারে।
তাই সবরকমের পদ এখানেই তৈরী হয়। স্বল্প পদমর্যাদার অধিকারীর এইরকম অবস্থা হবে। না
তারা পড়বে, না বাবার স্মরণে থাকবে। ইনি অতি বিচিত্র বাবা, তাই না। এঁনার চলনও
অলৌকিক। এঁনার পার্ট আর কেউ পেতে পারে না। এই বাবা এসে তোমাদের কত উচ্চ পড়া পড়ান,
তাই তাঁর সম্মানও তো রাখা উচিত। ওঁনার শ্রীমতানুসারে চলা উচিত। কিন্তু মায়া প্রতি
মুহূর্তে ভুলিয়ে দেয়। মায়া এত শক্তিশালী যে মহারথী বাচ্চাদেরও অধঃপতনে নিয়ে যায়।
বাবা কতো ধনবান বানান কিন্তু মায়া সম্পূর্ণরূপে মাথা মুড়িয়ে(মাথা নত) দেয়। মায়ার
থেকে রক্ষা পেতে হলে বাবাকে অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। অনেক ভালো-ভালো বাচ্চা আছে যারা
বাবার হয়ে পুনরায় মায়ার কাছে চলে যায়। সেকথা আর বলার নয় । পাকাপাকি ট্রেটর (বিশ্বাসঘাতক)
হয়ে যায়। মায়া একদম নাক ধরে নেয়। বলাও তো হয়ে থাকে তাই না যে - গজ-কে (হাতী) গ্রাহ
(বড় কুমীর) খেয়ে নেয় (মহারথীকেও মায়া গ্রাস করে)। কিন্তু এর অর্থও কেউ বুঝতে পারে
না। বাবা প্রতিটি কথা সঠিকভাবে বোঝান। অনেক বাচ্চারা বোঝেও কিন্তু পুরুষার্থের
নম্বরের ক্রমানুসারে। কারো-কারোর তো সামান্যতম ধারণাও থাকে না। পড়া তো অতি উচ্চ,
তাই না। তাই তা ধারণ করতে পারে না। বাবা বলেন, এদের ভাগ্যে রাজত্ব নেই। কেউ আকন্দ
ফুল, কেউ সুগন্ধি ফুল। বিভিন্নরকমের ফুলের বাগিচা, তাই না। এমনও তো চাই, তাই না।
রাজধানীতে তোমরা চাকর-বাকরও থাকবে। তা নাহলে চাকর-বাকর কীভাবে পাবে। রাজত্ব এখানেই
তৈরী হয়। চাকর-বাকর, চন্ডাল ইত্যাদি সবকিছুই পাবে। এ রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে।
ওয়ান্ডারফুল । বাবা তোমাদের এত উচ্চ বানান, তাই এমন বাবাকে স্মরণ করতে-করতে প্রেমে
অশ্রু-সজল হয়ে যাওয়া উচিত।
তোমরা মালার দানা হও,
তাই না। তারা বলে, বাবা তুমি কত বিচিত্র। কেমন করে এসে তুমি আমাদের মতন পতিতদের
পবিত্র বানানোর জন্য পড়াও। ভক্তিমার্গে অবশ্যই শিবের পূজা করে কিন্তু বোঝে কি যে ইনি
পতিত-পাবন, না তা বোঝে না, তথাপি ডাকতে থাকে যে - হে পতিত-পাবন এসো, এসে আমাদের
ফুলের মতন দেবী-দেবতা বানাও। বাচ্চাদের ফরমান (আদেশ) বাবা মেনে নেন আর যখন আসেন তখন
বলেন - বাচ্চারা! পবিত্র হও। এতেই হাঙ্গামা শুরু হয়ে যায়। বাবা তো ওয়ান্ডারফুল, তাই
না। বাচ্চাদের বলেন, আমাকে স্মরণ করো তবেই পাপ কেটে যাবে। বাবা জানেন যে, আমরা
আত্মাদের সঙ্গে কথা বলি। সবকিছু আত্মাই করে, বিকর্মও আত্মাই করে। আত্মাই শরীরের
দ্বারা কর্মের ফল ভোগ করে। তোমাদের জন্য তো ট্রিবিউনাল (বিচারসভা) বসবে। বিশেষ করে
সেই বাচ্চাদের জন্য, যারা সেবাধারী হয়ে পুনরায় ট্রেটর হয়ে যায়। এ তো বাবা-ই জানেন
যে, কীভাবে মায়া গ্রাস করে নেয়। বাবা আমরা পরাজিত হয়েছি, মুখ কালো করে ফেলেছি....এখন
ক্ষমা করো। এখন অধঃপতনে গেছো আর মায়ার হয়ে গেছো, তাহলে আবার ক্ষমা কিসের? তাদেরকে
তো অনেক-অনেক পরিশ্রম করতে হবে। অনেকেই আছে যারা মায়ার কাছে পরাস্ত হয়। বাবা বলেন -
এখানে বাবার কাছে দান করে পুনরায় তা ফিরিয়ে নিও না। তা নাহলে সব সমাপ্ত হয়ে যাবে।
হরিশ্চন্দ্রের উদাহরণ আছে, তাই না। দান করে অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে। দান করে
পুনরায় ফেরত নিয়ে নিলে শতগুণ দন্ড ভোগ করতে হবে। পুনরায় পদ অত্যন্ত সাধারণমানের
পাবে। বাচ্চারা জানে যে, এ রাজধানী স্থাপিত হচ্ছে। আর যারা ধর্ম স্থাপন করেন তাদের
রাজত্ব প্রথমে চলে না। রাজত্ব তো তখন হয়, যখন ৫০-৬০ কোটি হয়ে যায়, তখন লস্কর তৈরী
হয়। প্রথমে তো আসেই এক-দুজন, পরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। তোমরা জানো, খ্রাইস্টও নানান
বেশে আসবে। বেগার রূপে এক নম্বর আত্মা অবশ্যই লাস্ট নম্বরে থাকবে। খ্রীস্টানরা সাথে
সাথে বলবে অবশ্যই খ্রাইস্ট এইসময় বেগার-রূপে রয়েছেন। বুঝতে হবে যে, পুনর্জন্ম তো
নিতেই হবে। তমোপ্রধান তো অবশ্যই প্রত্যেককে হতে হবে। এইসময় সমগ্র দুনিয়াই তমোপ্রধান
জরাগ্রস্ত হয়ে গেছে। এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ তো অবশ্যই হবে। খ্রীস্টানরাও বলে,
খ্রাইস্টের জন্মের ৩ হাজার বছর পূর্বে হেভেন ছিল, তা পুনরায় অবশ্যই এখন হবে। কিন্তু
এইকথা বোঝাবে কে? বাবা বলেন, বাচ্চাদের তেমন অবস্থা এখন কোথায় হয়েছে। প্রতি মুহূর্তে
লেখে যে, আমরা যোগে থাকতে পারি না। বাচ্চাদের অ্যাক্টিভিটি (কাজ-কর্ম) থেকেই তা বুঝে
যায়। বাবাকে সমাচার দিতেও ভয় পায়। বাবা তো বাচ্চাদের কতো ভালবাসেন। প্রেমপূর্বক
নমস্কার জানান। বাচ্চাদের মধ্যে অহংকার থাকে। ভালো-ভালো বাচ্চাদের মায়া ভুলিয়ে দেয়।
বাবা বুঝতে পারেন, তিনি বলেন, আমি নলেজফুল। 'জানি জাননহার'- এর (যিনি সর্বজ্ঞ) অর্থ
এই নয় যে, আমি সকলের অন্তরকেও জানি। আমি আসিই পড়াতে, সকলের অন্তরকে পড়তে নয়। আমি
কাউকে (মনকে) রীড করি না, তাই এই সাকারী ব্রহ্মাও রীড করে না। এঁনাকে সবকিছু ভুলতে
হবে, তাহলে তিনি কি রীড করবেন। তোমরা এখানে আসোই পড়তে। ভক্তিমার্গই আলাদা। অধঃপতনে
যাওয়ার উপায় বা যুক্তিও তো চাই, তাই না। এইসব কথাতেই তোমরা অধঃপতনে যাও। ড্রামার এই
খেলা পূর্ব-নির্ধারিত। ভক্তিমার্গের শাস্ত্র পড়তে-পড়তে তোমরা অধঃপতনে গিয়ে
তমোপ্রধান হয়ে যাও। এখন তোমাদের এই ছিঃ ছিঃ দুনিয়ায় একদমই থাকতে হবে না। কলিযুগের
পর আবার সত্যযুগে আসবে। এখন এ হলো সঙ্গমযুগ। এসব কথাকে ধারণ করতে হবে। বাবা-ই বোঝান,
এছাড়া সমগ্র দুনিয়ার বুদ্ধিতে তো এখন গডরেজের তালা লাগানো রয়েছে। তোমরা বোঝ যে, এরা
দৈবী-গুণসম্পন্ন ছিল পুনরায় আসুরী-গুণসম্পন্ন হয়ে গেছে। বাবা বোঝান, এখন
ভক্তিমার্গের কথা সব ভুলে যাও। এখন আমি যা শোনাই তা শোনো, হিয়ার নো ইভিল...... এখন
একমাত্র আমার কাছ থেকেই শোনো। এখন আমি তোমাদের তরী পার করতে এসেছি।
তোমরা হলে ঈশ্বরীয়
সম্প্রদায়। প্রজাপিতা ব্রহ্মার মুখ-কমল দ্বারা তোমাদের জন্ম হয়েছে, তাই না। এতসব
অ্যাডপ্টেড বাচ্চা রয়েছে । ওনাকে আদিদেব বলা হয়। মহাবীরও বলা হয়। বাচ্চারা, তোমরাও
তো মহাবীর, তাই না যারা যোগবলের দ্বারা মায়ার উপরে জীত প্রাপ্ত করো। বাবাকে বলা হয়
জ্ঞানের সাগর। জ্ঞান সাগর বাবা অবিনাশী জ্ঞান-রত্নের দ্বারা তোমাদের ঝুলি ভরপুর করে
দেন। তোমাদের ধনবান করে দেয়। যে জ্ঞান ধারণ করে সে উচ্চপদ লাভ করে, যে ধারণ করে না
সে অবশ্যই স্বল্পপদ লাভ করবে। বাবার কাছ থেকে তোমরা সীমাহীন সম্পদ প্রাপ্ত কর।
আলাদীন ও আশ্চর্য প্রদীপের গল্পকথাও তো রয়েছে, তাই না। তোমরা জানো যে, ওখানে আমাদের
কোনো অপ্রাপ্ত বস্তুই থাকে না। ২১ জন্মের জন্য বাবা উত্তরাধিকার দিয়ে দেন। অসীম
জগতের পিতা অসীম জগতের উত্তরাধিকার দেন। পার্থিব জগতের উত্তরাধিকার পেলেও অসীম
জগতের পিতাকে স্মরণ অবশ্যই করে - হে পরমাত্মা, দয়া করো, কৃপা করো। একথা কি কেউ জানে
যে তিনি কী দেন, না জানে না। এখন তোমরা জানো যে, বাবা আমাদের বিশ্বের মালিক বানান।
চিত্রতেও দেখানো হয় যে, ব্রহ্মার দ্বারা স্থাপনা, ব্রহ্মা সম্মুখে বসে রয়েছেন
সাধারণ-রূপে। স্থাপনা যিনি করবেন অবশ্যই তাকেই প্রথমে তৈরী করবেন। বাবা কত ভালভাবে
বোঝান। তোমরা সম্পূর্ণরূপে বোঝাতে পারো না। ভক্তিমার্গে শঙ্করের সামনে গিয়ে বলে -
ঝুলি পরিপূর্ণ করে দাও। আত্মারা বলে - আমরা কাঙ্গাল হয়ে গেছি। আমাদের ঝুলি পরিপূর্ণ
কর, আমাদের এমন (দেব-দেবী) বানাও। এখন তোমরা ঝুলি পূর্ণ করতে এসেছো। তারা বলে - আমরা
নর থেকে নারায়ণ হতে চাই। নর থেকে নারায়ণ হওয়ার জন্যই হলো এই পড়াশোনা। পুরানো
দুনিয়ায় আসতে কার মন চাইবে! কিন্তু নতুন দুনিয়ায় সকলেই তো আসবে না। (নতুন দুনিয়া)
২৫ পার্সেন্ট যখন পুরানো হবে তখনও কেউ-কেউ আসবে। তারা কিছুু কম পড়বে, তাই না। কাউকে
যদি (বাবার) সামান্য মেসেজ দিতে থাকো তাহলেও তোমরা স্বর্গের মালিক অবশ্যই হবে। এখন
সকলেই তো নরকের মালিক, তাই না। রাজা, রানী, প্রজা সকলেই নরকের মালিক। ওখানে ছিল
দ্বিমুকুটধারী। এখন তা আর নেই। আজকাল ধর্ম ইত্যাদিকে কেউ মান্য করে না। দেবী-দেবতা
ধর্মই শেষ হয়ে গেছে। গায়নও করা হয়, রিলীজিয়ন(ধর্ম) ইজ মাইট (শক্তি)। ধর্মকে মান্য
না করার কারণে এখন আর শক্তি নেই। বাবা বোঝান - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, তোমরাই
পূজ্য থেকে পূজারী হও। ৮৪ জন্ম তো নাও, তাই না। আমরা তথা ব্রাহ্মণ, তথা দেবতা
পুনরায় আমরা তথা ক্ষত্রিয়....বুদ্ধিতে সম্পূর্ণ চক্র আসে, তাই না। এই ৮৪ জন্মের
চক্রকে আমরা আবর্তন করতেই থাকি। এখন পুনরায় ঘরে ফিরে যেতে হবে। পতিতরা কেউ জানতে
পারে না। আত্মাই পতিত অথবা পাবন হয়। সোনায় খাদ পড়ে, তাই না। গহনায় থাকে না। এ হলো
জ্ঞান অগ্নি যার দ্বারা সম্পূর্ণ খাদ নির্গত হয়ে গিয়ে তোমরা পাকা সোনা হয়ে যাও, তখন
গহনাও ভাল-ভাল পাবে। আত্মা এখন পতিত তাই পবিত্রদের সম্মুখে নমন (নমস্কার) করে।
সবকিছু আত্মাই করে, তাই না। এখন বাবা বোঝান - বাচ্চারা! শুধুমাত্র মামেকম্ স্মরণ করো
তাহলেই তরী পার হয়ে যাবে। এখন যে যেমন পুরুষার্থ করবে সেইভাবেই পবিত্র হয়ে পবিত্র
দুনিয়ায় চলে যাবে। সকলকে এই পরিচয়ই দিতে থাক। উনি হলেন সসীম (হদ) জগতের পিতা, আর ইনি
হলেন অসীম জগতের পিতা। সঙ্গমেই বাবা আসেন। স্বর্গের উত্তরাধিকার দিতে। তাই এমন
পিতাকে স্মরণ করতে হবে, তাই না। টিচারকে কখনো স্টুডেন্ট ভুলে যায় কী! কিন্তু এখানে
মায়া ভুলিয়ে দেবে। অত্যন্ত সাবধানে থাকতে হবে থাকতে হবে। এ তো যুদ্ধক্ষেত্র, তাই
না। বাবা বলেন, এখন বিকারে যেও না, অপবিত্র হয়ো না। এখন স্বর্গে যেতে হবে। পবিত্র
হয়ে গেলেই পবিত্র, নতুন দুনিয়ার মালিক হবে। তোমাদের-কে বিশ্বের রাজত্ব (বাদশাহী)
দিই। কম কথা কী? শুধু এই একজন্মে পবিত্র হও। এখন পবিত্র না হলে অধঃপতনে যাবে।
আকর্ষণ বা প্রলোভন অনেক আছে। কাম-বিকারের উপর বিজয়প্রাপ্ত করলে তোমরা জগৎ-জীত হয়ে
যাবে। তোমরা সরাসরি (পরিস্কারভাবে) বলতে পারো যে, পরমপিতা পরমাত্মাই জগৎগুরু, যিনি
সমগ্র জগৎ-কে সদ্গতি দেন। আচ্ছা।
মিষ্টি মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
অবিনাশী জ্ঞান-রত্নের দ্বারা বুদ্ধি-রূপী ঝুলিকে পরিপূর্ণ করে মালামাল (ধনবান) হতে
হবে। কোনো প্রকারের অহংকার প্রকাশ করা উচিত নয়।
২ ) সেবার যোগ্য হয়ে
পুনরায় কখনো ট্রেটর হয়ে গিয়ে ডিসসার্ভিস করা উচিত নয়। দান দেওয়ার পর অত্যন্ত
সাবধানী হতে হবে। কখনও তা ফিরিয়ে নেওয়ার সঙ্কল্পও যেন না আসে।
বরদান:-
ডায়রেক্ট পরমাত্ম লাইটের কানেকশনের দ্বারা অন্ধকারকে অপসারণকারী লাইট হাউস ভব
বাচ্চারা তোমাদের কাছে
ডায়রেক্ট পরমাত্মার লাইটের কানেকশন আছে। কেবল স্বমানের স্মৃতির সুইচ ডায়রেক্ট
লাইনের দ্বারা অন করো তাহলে লাইট এসে যাবে আর সূর্যের রশ্মিকে আড়াল করার জন্য যত
গভীর ঘন কালো মেঘ হোক না কেন, সেও সরে যাবে। এর দ্বারা নিজে তো লাইট থাকবেই, সাথে
অন্যদের জন্যও লাইট হাউস হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
স্বপুরুষার্থে তীব্র হও তাহলে তোমাদের ভায়ব্রেশন দ্বারা অন্যদের মায়া সহজেই পালিয়ে
যাবে।