30.09.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


“মিষ্টি বাচ্চারা - বাবা এসেছেন সকলের দুঃখ হরণ করে সুখ প্রদান করতে, সেইজন্য তোমরা হলে দুঃখ হরণকারীর সন্তান, তোমরারা কাউকে দুঃখ দিও না”

প্রশ্নঃ -
উঁচুপদ প্রাপ্তকারী বাচ্চাদের মুখ্য লক্ষণ কী হবে?

উত্তরঃ  
১) তারা সর্বদা শ্রীমতে চলতে থাকবে। ২) কখনো অবাধ্য হবে না। ৩) নিজেই নিজেকে রাজতিলক দেওয়ার জন্য পড়াশোনা করে দ্রুত অগ্রসর হবে। ৪) নিজের কখনও ক্ষতি করবে না।
৫) সকলের প্রতি দয়াবান আর কল্যাণকারী হবে। তাদের সার্ভিসের প্রতি অনেক আগ্রহ থাকবে। ৬) কখনও কোনও ঘৃণ্য কাজ করবে না। ঝগড়া-বিবাদ করবে না।

গীতঃ-
তুমি রাত হারালে ঘুমিয়ে আর দিন হারালে খেয়ে, হীরে তুল্য এই মানব জন্ম কড়ি তুল্য হয়ে যায়...

ওম্ শান্তি ।
আত্মিক বাচ্চারা আত্মিক বাবার সামনে বসে আছে। এখন এই ভাষাকে তো বাচ্চারা তোমরাই বুঝতে পারো, অন্য নতুন কেউ বুঝতে পারবে না। “হে আত্মিক বাচ্চা”- এইরকম কখনো কেউ বলতে পারবে না। বলতে আসবেও না। তোমরা জানো যে আমরা এখন আত্মিক বাবার সামনে বসে আছি। যে বাবাকে, যথার্থ রীতিতে কেউ জানেই না। যদিও নিজেদেরকে ভাই-ভাই মনে করে, আমরা সকলে হলাম আত্মা। বাবা হলেন এক, কিন্তু যথার্থ রীতিতে কেউই জানে না। যতক্ষণ না সম্মুখে এসে না বোঝে, ততক্ষণ বুঝবেই বা কি করে? তোমরাও যখন সম্মুখে আসো তখন বুঝতে পারো। তোমরা হলে ব্রাহ্মণ-ব্রাহ্মণী। তোমাদের সারনেমই হলো ব্রহ্মাবংশী ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। সব আত্মারাই হলো শিবের। তোমাদেরকে শিবকুমার বা শিবকুমারী বলা যাবে না। এই শব্দটি বলা ভুল হয়ে যায়। কুমাররাও আছো, আবার কুমারীরাও আছো। শিবের কাছে সবাই হলো আত্মা। কুমার-কুমারী তখন বলা যাবে, যখন তোমরা মানব সন্তান । শিবের সন্তান তো নিরাকারী আত্মাই হবে। মূল বতনে সবাই আত্মা রূপেই থাকে, যাদেরকে শালগ্রাম বলা যায়। এখানে (স্থূল সাকার বতনে) যখন আসে, তখনই কুমার কুমারী হয় লৌকিক শরীরে। বাস্তবে তোমরা হলে কুমার, শিব বাবার সন্তান। কুমারী আর কুমার তখন হয়, যখন শরীরে আসে। তোমরা হলে বিকে এইজন্য ভাই বোন বলে থাকো। এখন এই সময় তোমাদের জ্ঞান প্রাপ্ত হচ্ছে। তোমরা জানো যে, বাবা আমাদেরকে পবিত্র বানিয়ে নিয়ে যাবেন। আত্মা যত বাবাকে স্মরণ করবে, ততই পবিত্র হয়ে যাবে। আত্মারা ব্রহ্মা মুখের দ্বারা এই জ্ঞান পড়ছে। চিত্রতেও বাবার জ্ঞান পরিষ্কার ভাবে দেখানো হয়েছে। শিব বাবাই আমাদেরকে পড়াচ্ছেন। না কৃষ্ণ পড়াতে পারে, আর না কৃষ্ণের দ্বারা বাবা পড়াবেন। কৃষ্ণ তো হলো বৈকুণ্ঠের প্রিন্স। এটাও বাচ্চারা তোমাদেরকে বোঝাতে হবে। কৃষ্ণ তো স্বর্গে নিজের মা-বাবার সন্তান হবেন। স্বর্গবাসী বাবার সন্তান হবেন, তাই তিনি হবেন বৈকুন্ঠের প্রিন্স। তাকেও কেউ জানেনা। কৃষ্ণ জয়ন্তীতে নিজের নিজের নিজের বাড়িতে কৃষ্ণের জন্য দোলনা (ঝুলা) বানায় বা মন্দিরেতেও ঝুলা বানায়। মাতা-রা সেখানে গিয়ে গোলকের মধ্যে টাকা-পয়সা দান করে, পূজা করে। আজকাল খ্রাইস্টকেও কৃষ্ণের মতো বানাতে থাকে। মুকুট ইত্যাদি পরিয়ে মায়ের কোলে দিয়ে দেয়। যে রকম কৃষ্ণকে দেখানো হয়। এখন কৃষ্ণ আর খ্রাইস্টের রাশি তো হলো এক। তারা শুধু কপি করতে থাকে। না হলে তো কৃষ্ণের জন্ম আর খ্রাইস্টের জন্মের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। খ্রাইস্টের জন্ম কোনও ছোট বাচ্চা রূপে হয় না। খ্রাইস্টের আত্মা তো কারোর মধ্যে গিয়ে প্রবেশ করে। বিষের দ্বারা জন্ম হয় না। আগে খ্রাইস্টকে কখনো ছোট বাচ্চার রূপে দেখানো হত না। ক্রসের ওপর দেখানো হত। এইসব তো এখন দেখাচ্ছে। বাচ্চারা জানে যে, ধর্ম স্থাপককে কখনও এইরকমভাবে কেউ আঘাত করতে পারে না। তাহলে কাকে আঘাত করেছে? যার মধ্যে প্রবেশ করেছিলেন, তার দুঃখ প্রাপ্ত হয়েছে। সতোপ্রধান আত্মার দুঃখ কিভাবে প্রাপ্ত হবে? তিনি কি এমন কর্ম করেছেন যার জন্য এত দুঃখ ভোগ করবেন? আত্মাই সতোপ্রধান অবস্থাতে আসে, সকলের হিসেব-নিকেশ সমাপ্ত হয়ে যায়। এই সময় বাবা সবাইকে পবিত্র বানাচ্ছেন। সেখান থেকে সতোপ্রধান আত্মা এসে দুঃখ ভোগ করতে পারে না। আত্মাই ভোগ করে তাই না। আত্মা শরীরে থাকে, তাই দুঃখ হয়। আমার কষ্ট হচ্ছে - এই কথাটি কে বলে? এই শরীরের মধ্যে কেউ থাকে। তারা তো আবার বলে দেয় যে, পরমাত্মা অন্তরে আছে, তো পরমাত্মা কি এইরকম বলবেন যে - আমার দুঃখ হচ্ছে। সকলের মধ্যে পরমাত্মা বিরাজমান থাকলে তো পরমাত্মা কিভাবে দুঃখ ভোগ করবেন? এসব কথা আত্মাই বলে থাকে। হে পরমপিতা পরমাত্মা আমাদের দুঃখ হরণ করো, আত্মা পারোলৌকিক বাবাকেই আহ্বান করে।

এখন তোমরা জেনে গেছো যে, বাবা এসে গেছেন, দুঃখ হরণ করার যুক্তি বলে দিচ্ছেন। আত্মা শরীরের সাথেই এভারহেল্দী, ওয়েল্দী হয়। মূল বতনে তো হেল্দী ওয়েল্দী বলা হয় না। সেখানে কি কোনও সৃষ্টি আছে নাকি! সেখানে তো আছেই শান্তি। আত্মারা শান্তি স্বধর্মে স্থিত থাকে। এখন বাবা এসেছেন সকলের দুঃখ হরণ করে সুখ দিতে। তাই বাচ্চাদেরকেও বলা হয় যে - তোমরা আমার হয়েছ, তাই কাউকে দুঃখ দিও না। এটা হলো যুদ্ধের ময়দান, কিন্তু গুপ্ত। আর সেটা হলো প্রত্যক্ষ। এখানে যে গায়ন আছে যে, যুদ্ধের ময়দানে যার বীরগতি প্রাপ্ত হবে সে স্বর্গে যাবে। তারও অর্থ তোমাদেরকে বোঝাতে হবে। এই লড়াইয়ের মহত্ত্ব দেখো কত বেশী! বাচ্চারা জানে যে, সেই লড়াইতে মারা গেলে কেউ স্বর্গে যেতে পারবে না। কিন্তু গীতাতে ভগবানুবাচ আছে, তাকে তো সবাই মানবে, তাইনা! ভগবান কাকে বলেছেন, সেই যোদ্ধাদের বলেছেন নাকি তোমাদের বলেছেন? উভয়কেই বলেছেন। তাদেরকেও বোঝাতে হবে, নিজেকে আত্মা মনে করে বাবাকে স্মরণ করো। এই সেবাও করতে হবে। এখন তোমরা স্বর্গে যদি যেতে চাও, তাহলে পুরুষার্থ করো, যুদ্ধক্ষেত্রে তো সকল ধর্মের আত্মারা থাকে, শিখ ধর্মাবলম্বীরা আছে, তারা তো শিখ ধর্মেই যাবে। স্বর্গেতে তখনই আসতে পারবে, যখন তোমাদের ব্রাহ্মণদের কাছ থেকে এসে জ্ঞান প্রাপ্ত করবে। যেরকম এই বাবার কাছে যদি কেউ আসতো, তো বাবা বোঝাতে যে, তোমরা যুদ্ধ করতে করতে শিব বাবাকে স্মরণে করবে, তাহলে স্বর্গে আসতে পারবে। কিন্তু এমন নয় যে স্বর্গের রাজা হতে পারবে। না, তাদেরকে বেশি কিছু বোঝানোও যায় না। তাদেরকে অল্প একটুই জ্ঞান বোঝানো যায়। যুদ্ধের সময় নিজের ইষ্ট দেবতাকে অবশ্যই স্মরণ করতে থাকে। শিখ হলে তো গুরু গোবিন্দের জয় বলবে। এরকম কেউ নেই যে নিজেকে আত্মা মনে করে পরমাত্মাকে স্মরণ করবে। তবে হ্যাঁ, যে বাবার পরিচয় নেবে সে স্বর্গে অবশ্যই আসবে। সকলের বাবা হলেন এক - পতিতপাবন। তিনি পতিত আত্মাদেরকে বলছেন যে আমাকে স্মরণ করো, তাহলেই তোমাদের পাপ নাশ হয়ে যাবে আর আমি যে সুখধামের স্থাপনা করছি সেখানে তোমরা আসতে পারবে। যুদ্ধের সময়ও শিব বাবাকে স্মরণ করলে স্বর্গে আসতে পারবে। ওই লৌকিক যুদ্ধের ময়দানের কথা অন্য, আর এখানে বাবা অন্য যুদ্ধের ময়দানের কথা বলেছেন। বাবা বলছেন যে, জ্ঞানের বিনাশ হয় না। সবাই তো হল শিব বাবার বাচ্চা। এখন শিব বাবা বলছেন যে, আমাকে স্মরণ করলে, তোমরা আমার কাছে আসতে পারবে মুক্তিধামে। তারপর তো যে জ্ঞান শেখানো হয় সেটা পড়লেই তোমরা স্বর্গের রাজত্ব প্রাপ্ত করবে। কত সহজ, তাই না! স্বর্গে যাওয়ার রাস্তা সেকেন্ডে প্রাপ্ত হয়ে যায়। আমি আত্মা বাবাকে স্মরণ করছি। যুদ্ধের ময়দানে তো খুশী-খুশীতে যেতে হবে। কর্ম তো করতেই হবে। দেশকে বাঁচানোর জন্য সবকিছু করতে হয়। সেখানে তো হলই এক ধর্ম। মতভেদের কোনও কথাই নেই। এখানে তো অনেক মতভেদ আছে। জল নিয়ে, জায়গা নিয়ে ঝগড়া। জল বন্ধ করে দেয়, তখন পাথর দিয়ে মারামারি শুরু হয়ে যায়। এক পরস্পরকে আনাজ না দিলে তো ঝগড়া হয়ে যায়।

বাচ্চারা, তোমরা জানো যে আমরা নিজেদের স্বরাজ্য স্থাপন করছি। পড়াশোনার দ্বারা রাজ্য প্রাপ্ত করছি। নতুন দুনিয়া অবশ্যই স্থাপন হবে, এই নেশা থাকলে তো অনেক খুশি আসবে। কোনও বিষয় নিয়ে লড়াই ঝগড়া আদির কোনও কথাই নেই। থাকতেও হবে খুব সাধারণ ভাবে। বাবা বুঝিয়েছেন যে, তোমরা শ্বশুর বাড়িতে যাচ্ছো, সেইজন্য এখন বনবাসে থাকো। সমস্ত আত্মারাই যাবে, শরীর তো সেখানে যেতে পারে না। শরীরের অভিমানও ছেড়ে দিতে হবে। আমি হলাম আত্মা, ৮৪ জন্ম এখন সম্পূর্ণ হয়েছে। যারা ভারতবাসী আছো, বলো - ভারত একসময় স্বর্গ ছিল, এখন তো হল কলিযুগ। কলিযুগে আছে অনেক ধর্ম। সত্যযুগে একটাই ধর্ম ছিলো। ভারত পুনরায় স্বর্গ হবে। তারা বুঝতে পারে যে, ভগবান এসে গেছেন। কিছুদিন পরে তারা ভবিষ্যবাণীও করতে থাকবে। বায়ুমণ্ডল দেখবে, তাই না! তাই বাবা বাচ্চাদেরকে বোঝাচ্ছেন। তিনি তো হলেন সকলের বাবা, তাই না! তাঁর উপর সকলেরই অধিকার আছে। বাবা বলছেন যে আমি এসেছি আর সবাইকে এটাই বলছি যে - এক আমাকেই স্মরণ করো তাে তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। এখন তো সাধারণ মানুষ মনে করে যে যেকোনো সময় যুদ্ধ শুরু হয়ে যেতে পারে। কালও শুরু হয়ে যেতে পারে। যুদ্ধ ভয়ংকর রূপ নিতে বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু বাচ্চারা তোমরা বুঝতে পারছো যে, এখনও আমাদের রাজধানী স্থাপন হয়নি, তাই বিনাশ কিভাবে হতে পারে। চারিদিকে বাবার পরিচয় দেওয়াও এখনও বাকি আছে। পতিত-পাবন বাবা বলছেন - আমাকে স্মরণ করো তাহলে বিকর্ম বিনাশ হয়ে যাবে। এই খবর সকলের কানে পৌঁছে যাওয়া চাই। যদিও যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, বম্বও পড়তে থাকে তবুও তোমাদের এই বিষয়ে নিশ্চয় আছে যে, আমাদের রাজধানী অবশ্যই স্থাপন হবে। ততক্ষণ বিনাশ হতে পারে না। বিশ্বতে শান্তি বলা হয়ে থাকে, তাই না! বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে তো সমগ্র বিশ্বই শেষ হয়ে যাবে।

এটা হলো বিশ্ব বিদ্যালয়, সমগ্র বিশ্বকে তোমরা জ্ঞান প্রদান করো। একমাত্র বাবাই এসে সমগ্র বিশ্বকে পরিবর্তন করেন। তারা তো কল্পের আয়ু লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। তোমরা জানো যে এর আয়ু হল সম্পূর্ণ ৫ হাজার বছর। বলা হয় যে ক্রাইস্টের থেকে তিন হাজার বছর পূর্বে স্বর্গ ছিল। ইসলামী, বৌদ্ধি আদি সকলের হিসেব নিকেশ বের হয়। তাদের পূর্বে দ্বিতীয় আর কারো নাম ছিল না। তোমরা নির্ভুল ভাবে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তারিখের হিসেবে সব কিছু প্রকাশিত করতে পারো। তাই তোমাদেরকে অনেক নেশায় থাকতে হবে। ঝগরা আদির তো কোনও কথাই নেই। তারাই ঝগরা করে যারা অনাথ হয়। তোমরা এখন যে পুরুষার্থ করবে, ২১ জন্মের জন্য সেটা প্রালব্ধ হয়ে যাবে। লড়াই ঝগড়া আদি করলে উঁচু পদও প্রাপ্ত হবে না। শাস্তিও খেতে হবে। কোনও কথা থাকলে বা কোনও কিছুর প্রয়োজন হলে বাবার কাছে আসো, সরকারও বলে যে, নিজের হাতে আইন তুলে নিও না। কেউ বলে যে আমার বিদেশী বুট চাই। বাবা বলছেন - বাচ্চারা, এখন তো বনবাসে আছো। সেখানে তোমরা অনেক কিছু প্রাপ্ত করবে। বাবা তো সত্য কথাই বোঝাবেন তাই না! নাকি এই কথা সত্য নয়? এখানে তোমরা এইসবের আশা কেন রাখছো? এখানে তো খুব সাধারণ হয়ে থাকতে হবে। না হলে তো দেহ অভিমান এসে যাবে, এখানে নিজের ইচ্ছানুসারে চলো না, বাবা যেটা বলেন, শরীর অসুস্থ হলে ডাক্তার আদিকেও ডাকেন, ওষুধ আদি দিয়ে সকলেরই দেখাশোনা তো হয়। তবুও প্রত্যেক কথাতে বাবা বসে আছেন। শ্রীমৎ তো শ্রীমতই আছে, তাইনা! নিশ্চয়ের মধ্যেই বিজয় আছে। তারা তো সবকিছুই বুঝতে পারে, তাই না! বাবার শ্রীমৎ অনুসারে চললেই কল্যান হবে। নিজেরও কল্যান করতে হবে। কউকে মূল্যবান বানাতে পারছো না, তারমানে নিজের তো এক পয়সাও মূল্য থাকলো না। মূল্যবান হওয়ার যোগ্যতাই নেই। এখানে মূল্য না থাকলে তো সেখানেও মূল্য থাকবে না। সেবাধারী বাচ্চাদের সেবা করার অনেক শখ থাকে। চক্র লাগাতে থাকে। সেবা না করলে তো তাদেরকে দয়াবান, কল্যাণকারী, কিছুই বলা যাবে না। বাবাকে স্মরণ না করলে তো ঘৃণ্য কাজ করতে থাকবে। পদও অনেক নিম্নমানের প্রাপ্ত হবে। এইরকম নয় যে, আমাদের তো শিব বাবার সাথে যোগ আছে। এরা তো হলই বিকে। শিব বাবা ব্রহ্মার দ্বারাই জ্ঞান শোনাতে পারেন। তাই শুধু শিব বাবাকে স্মরণ করলে তো মুরলী কিভাবে শুনবে, তাহলে রেজাল্ট কি হবে? না পড়লে তো কি পদ পাবে। এটাও জানো যে সকলের ভাগ্য উঁচু হবে না। সেখানে তো নম্বরের ক্রমানুসারে পদ প্রাপ্ত হবে। পবিত্র তো সবাইকে হতেই হবে। আত্মা পবিত্র না হলে শান্তিধাম যেতে পারবে না।

বাবা বোঝাচ্ছেন যে, তোমরা সবাইকে এই জ্ঞান শোনাতে থাকো, কেউ যদি এখন নাও শোনে, পরে কিন্তু অবশ্যই শুনবে। এখন যতই বিঘ্ন, তুফান জোর কদমে আসুক না কেন তোমরা ভয় পেয়ো না, কেননা নতুন ধর্মের স্থাপনা হচ্ছে, তাই না! তোমরা গুপ্ত রূপে রাজধানী স্থাপন করছো। বাবা সেবাধারী বাচ্চাদের দেখে খুশি হচ্ছেন। তোমাদেরকে নিজেদেরকেই রাজ-তিলক দিতে হবে। শ্রীমতে চলতে হবে। এখানে বাবার অবাধ্য হয়ে চলতে পারবে না। অকারণে নিজের ক্ষতি করো না। বাবা বলছেন যে, বাচ্চারা! সেবাধারী আর কল্যাণকারী হও। স্টুডেন্টদেরকে টিচার বলছেন যে - পড়াশোনা করে এগিয়ে চলো। ২১ জন্মের জন্য তোমাদের স্বর্গের স্কলার্শিপ প্রাপ্ত হয়। রাজধানীতে যাওয়া, এটাই হল সবথেকে বড় স্কলারশিপ। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) সঙ্গম যুগে তোমাদেরকে খুব সাধারণ হয়ে থাকতে হবে। কেননা এখন হলো বনবাসে থাকার সময়। এখানে কোনও আশা রেখো না। কখনো নিজের হাতে আইন তুলে নিও না। লড়াই ঝগড়া আদি করো না।

২ ) বিনাশের পূর্বে নতুন রাজধানী স্থাপন করার জন্য সবাইকে বাবার পরিচয় দিতে হবে যে বাবা বলছেন - আমাকে স্মরণ করো তো বিকর্ম বিনাশ হবে আর তোমরা পবিত্র হয়ে যাবে।

বরদান:-
সন্তুষ্টতার বিশেষত্ব দ্বারা সেবাতে সফলতার মূর্তি হওয়া সন্তুষ্টমণি ভব

সেবার বিশেষ গুণ হল সন্তুষ্টতা। যদি নাম সেবা হয় আর নিজেও ডিস্টার্ব থাকে আর অন্যরাও ডিস্টার্ব হয় তাহলে এইরকম সেবা না করাই ভালো। যে সেবাতে নিজেও সন্তুষ্ট থাকে না আর সম্পর্কে থাকা আত্মারাও সন্তুষ্ট হয় না, সেই সেবা না নিজেকে ফলের প্রাপ্তি করায় আর না অন্যদেরকে, এইজন্য প্রথমে একান্তবাসী হয়ে স্বপরিবর্তন দ্বারা সন্তুষ্টমণির বরদান প্রাপ্ত করো তারপর সেবাতে আসো তখন সফলতা মূর্তি হতে পারবে।

স্লোগান:-
বিঘ্নরূপী পাথরকে ভাঙার পিছুনে সময় নষ্ট না করে, তাকে হাইজাম্প দিয়ে পার করো।

অব্যক্ত ঈশারা :- এখন লগণের অগ্নিকে প্রজ্বলিত করে যোগকে জ্বালা রূপ বানাও

জ্বালাস্বরূপ স্মরণের জন্য মন আর বুদ্ধিতে পাওয়ারফুল ব্রেক চাই আর চারদিক থেকে মন-বুদ্ধিকে গুটিয়ে নেওয়ার শক্তিও চাই। এরফলে বুদ্ধির শক্তি বা কোনও এনার্জি ওয়েস্ট না হয়ে জমা হতে থাকবে। যত জমা হবে ততই পরখ করার শক্তি, নির্ণয় করার শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এরজন্য এখন সংকল্পের বিস্তার বন্ধ করতে থাকো অর্থাৎ গুটিয়ে ফেলার শক্তি ধারণ করতে থাকো।