30.10.2024 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - একমাত্র বাবার স্মরণে থাকা-ই হলো অব্যভিচারী স্মরণ, এই স্মরণের দ্বারা তোমাদের পাপ কাটতে পারে"

প্রশ্নঃ -
বাবা যা কিছু বোঝান কেউ সেসব সহজে স্বীকার করে, কারো বুঝতে কঠিন অনুভব হয় - এর কারণ কি?

উত্তরঃ  
যে বাচ্চারা বহু কাল ভক্তি করেছে, যারা অর্ধকল্পের পুরানো ভক্ত, তারা বাবার সব কথা সহজে মেনে নেয়, কারণ তারা ভক্তির ফল প্রাপ্ত করে। যারা পুরানো ভক্ত নয় তাদের প্রতিটি কথা বুঝতে কঠিন অনুভব হয় । অন্য ধর্মের মানুষ তো এই জ্ঞান বুঝতেও পারবে না ।

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি মিষ্টি আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে আত্মিক পিতা বসে বোঝান তোমরা সব বাচ্চারা কি করছো? তোমাদের হলো অব্যভিচারী স্মরণ। এক হলো ব্যভিচারী স্মরণ, দ্বিতীয় হলো অব্যভিচারী স্মরণ। তোমাদের সবার হলো অব্যভিচারী স্মরণ। কার স্মরণ? এক পিতার স্মরণ। বাবাকে স্মরণ করতে - করতে পাপ কাটতে থাকবে আর তোমরা সেখানে পৌঁছে যাবে। পবিত্র হয়ে নতুন দুনিয়ায় যেতে হবে। আত্মাদের যেতে হবে। আত্মা-ই এই কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা সকল কর্ম করে তাই না। অতএব বাবা বলেন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো। মানুষ তো অনেককে স্মরণ করে। ভক্তি মার্গে তোমাদের একজনকেই স্মরণ করতে হবে। ভক্তিও সর্বপ্রথম তোমরা সর্বোচ্চ শিববাবার-ই করেছিলে। যাকে বলা হয় অব্যভিচারী ভক্তি। তিনি ই সর্বকে সদগতি প্রদান করেন, তিনি হলেন রচয়িতা পিতা। তাঁর কাছে বাচ্চাদের অসীমের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। ভাই-ভাই এর কাছে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় না। সন্তানদের উত্তরাধিকার সর্বদা পিতার কাছেই প্রাপ্ত হয়। একটু আধটু কন্যাদেরও প্রাপ্ত হয়। তারা তো গিয়ে অর্ধাঙ্গিনী হয়। এখানে তো তোমরা সবাই হলে আত্মা। সব আত্মাদের পিতা হলেন একজন-ই। পিতার কাছে সকলের উত্তরাধিকার প্রাপ্তির অধিকার আছে। তোমরা হলে ভাই-ভাই, যদিও শরীর টি হল স্ত্রী-পুরুষের। আত্মারা সবাই হল ভাই-ভাই। তারা তো শুধুমাত্র কথার কথা বলে দেয় হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই। অর্থ বোঝে না। তোমরা এখন অর্থ বুঝেছ। ভাই-ভাই অর্থাৎ সব আত্মারা হল এক পিতার সন্তান তারপরে প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তানরা হল ভাই-বোন। এখন তোমরা জানো এই দুনিয়া থেকে সবাইকে ফিরে যেতে হবে। বিশ্বে যত মানুষ আছে, সবার পার্ট এখন পূর্ণ হয়েছে। বাবা এসে আবার পুরানো দুনিয়া থেকে নতুন দুনিয়ায় নিয়ে যান, পার করে নিয়ে যান। গাওয়াও হয় - মাঝি পার করাও। অর্থাৎ সুখধামে নিয়ে চলো। এই পুরানো দুনিয়া পরিবর্তন হয়ে নতুন দুনিয়া অবশ্যই পরিণত হবে। মূল বতন (পরমধাম) থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ দুনিয়ার মানচিত্র তোমাদের বুদ্ধিতে আছে। আমরা আত্মারা হলাম সবাই সুইট হোম, শান্তিধামের নিবাসী। এই কথা তো বুদ্ধিতে স্মরণ আছে, তাইনা। আমরা যখন সত্যযুগী নতুন দুনিয়ায় থাকি বাকি সব আত্মারা তখন শান্তিধামে থাকে। আত্মা তো কখনো বিনাশ হয় না। আত্মায় অবিনাশী পার্ট ভরা আছে। তার কখনও বিনাশ হতে পারে না। ধরো কেউ ইঞ্জিনিয়ার রয়েছে সে পুনরায় ৫ হাজার বছর পরে হুবহু এমনই ইঞ্জিনিয়ার হবে। এই নাম রূপ দেশ কাল থাকবে। এইসব কথা বাবা-ই এসে বোঝান। এই হল অনাদি অবিনাশী ড্রামা। এই ড্রামার আয়ু হল ৫ হাজার বছর। এক সেকেন্ডও কম বেশি হতে পারে না। এই হল অনাদি পূর্ব রচিত ড্রামা। সবার নিজস্ব পার্ট প্রাপ্ত আছে। দেহী-অভিমানী হয়ে, সাক্ষী হয়ে খেলাটি দেখতে হবে। বাবার তো দেহ নেই। তিনি হলেন নলেজফুল, বীজরূপ। বাকি আত্মারা যারা উপরে নিরাকারী দুনিয়ায় থাকে তারা আবার পার্ট প্লে করতে নম্বর অনুসারে আসে। সর্ব প্রথম নম্বর শুরু হয় দেবতাদের। প্রথম নম্বরের সূর্যবংশের চিত্র আছে তারপরে চন্দ্র বংশের চিত্রও আছে। সবচেয়ে উঁচুতে হল সূর্যবংশী লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজত্ব, তাঁদের রাজ্য কবে কীভাবে স্থাপন হয়েছে - কোনও মানুষ মাত্রই জানে না। সত্যযুগের আয়ু লক্ষ বছর লিখে দিয়েছে। কারো জীবন কাহিনী জানে না। লক্ষ্মী-নারায়ণের জীবন কাহিনী জানা উচিত। না জেনে মাথা ঠেকানো অথবা মহিমা গান করা তো হলো ভুল। বাবা বসে মুখ্য মুখ্য যারা রয়েছেন তাদের জীবন কাহিনী শোনান। এখন তোমরা জানো - কীভাবে তাদের রাজধানী চলে। সত্যযুগে শ্রীকৃষ্ণ ছিলেন তাইনা। এখন সেই কৃষ্ণপুরী আবার স্থাপন হচ্ছে। কৃষ্ণ তো হলেন স্বর্গের প্রিন্স। লক্ষ্মী-নারায়ণের রাজধানী কীভাবে স্থাপন হয়েছে - সেসব কথা তোমরা বুঝেছো।

নম্বর অনুযায়ী মালাও তৈরি করা হয়। অমুক মালার দানা হবে। কিন্তু চলতে - চলতে পরে হার স্বীকার করে। মায়া পরাজিত করে। যতক্ষণ সেনায় আছে, বলা হবে কমান্ডার, সে অমুক। তারপরে মৃত্যু হয়। এখানে মৃত্যু অর্থাৎ অবস্থা কম হওয়া, মায়ার কাছে হার স্বীকার করা। শেষ হয়ে যায়। আশ্চর্যবৎ শোনে, অন্যদের শোনায় তারপর ভাগন্তি হয়ে যায় ... ও মম মায়া! .... ধোঁকা দিয়ে যায়। মরজীবা জীবন অর্থাৎ মৃত্যুর জীবন ধারণ করে বাবার আপন হয়ে রামরাজ্য থেকে রাবণ রাজ্যে চলে যায়। এই নিয়েই যুদ্ধ দেখানো হয়েছে - কৌরব ও পাণ্ডবদের। অসুর ও দেবতাদেরও যুদ্ধ দেখিয়েছে। একটি যুদ্ধ দেখাও তাইনা। দুটো কেন? বাবা বোঝান এখানকার কথা। যুদ্ধ অর্থাৎ হিংসা করা হলো, এখানে এ তো হলো অহিংসা পরম দেবী-দেবতা ধর্ম। তোমরা এখন ডবল অহিংসক হয়েছো। তোমাদের হলো যোগবলের কথা। অস্ত্র শস্ত্র দিয়ে তোমরা কাউকে কিছু করো না। ওই শক্তি তো খ্রীস্টানদের অনেক আছে। রাশিয়া ও আমেরিকা হলো দুই ভাই। এই দুয়ের বোমা তৈরির কম্পিটিশন হয়। দুইজনেই একে অপরের চেয়ে শক্তিশালী। এত শক্তি যে যদি দুইজনে মিলে যায় তাহলে সম্পূর্ণ দুনিয়ার উপরে রাজ্য করতে পারে। কিন্তু নিয়ম নেই যে কেউ বাহুবলের জোরে বিশ্বে রাজত্ব করার ক্ষমতা প্রাপ্ত করে। কাহিনী দেখানো হয় - দুইটি বেড়াল নিজেদের মধ্যে লড়াই করে, মাখন মধ্যিখান থেকে তৃতীয় কেউ খায়। এইসব কথা এখন বাবা বোঝান। ব্রহ্মাবাবা কি আর জানতেন। এই চিত্র ইত্যাদিও বাবা দিব্য দৃষ্টি দ্বারা তৈরি করিয়েছেন এবং এখন বোঝাচ্ছেন, তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে। তোমরা সম্পূর্ণ বিশ্বের বাদশাহী প্রাপ্ত কর। ওই দুইজন হলো খুব শক্তিশালী। যেখানে - সেখানে যুদ্ধ করিয়ে দেয়। তারপরে সাহায্য দান করে কারণ তাদের ব্যবসা হল উত্তম। অতএব যখন দুই বেড়াল নিজেদের মধ্যে লড়াই করে তখন বারুদ ইত্যাদি কাজে লাগে। যেখানে সেখানে দুয়ের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেয়। এই হিন্দুস্তান-পাকিস্তান প্রথমে আলাদা ছিল কি। দুটোই একত্রে ছিল, এইসব ড্রামায় নির্ধারিত রয়েছে । এখন তোমরা পুরুষার্থ করছো - যোগবলের দ্বারা বিশ্বের মালিক হই। তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই করে, মাখন মাঝখান থেকে তোমরা খেয়ে নাও। মাখন অর্থাৎ বিশ্বের বাদশাহী তোমরা প্রাপ্ত কর এবং খুব সাধারন ভাবে প্রাপ্ত কর। বাবা বলেন - মিষ্টি মিষ্টি বাচ্চারা, পবিত্র অবশ্যই হতে হবে। পবিত্র হয়ে পবিত্র দুনিয়ায় যেতে হবে। যাকে বলা হয় পবিত্র দুনিয়া, সম্পূর্ণ নির্বিকারী দুনিয়া। প্রতিটি জিনিস সতোপ্রধান, সতঃ, রজঃ, তমঃ অবশ্যই হয়। বাবা বোঝান - তোমাদের এই বুদ্ধি ছিল না কারণ শাস্ত্রে লক্ষ বছর বলে দিয়েছে। ভক্তি হলো অজ্ঞান অন্ধকার। এই কথাও তোমরা কি আগে জানতে। এখন বোঝাও তারা তো বলে দেয় কলিযুগ এখনও ৪০ হাজার বছর আরও চলবে। আচ্ছা, ৪০ হাজার বছর পূর্ণ হয়ে তারপরে কি হবে? এইসব কেউ জানে না তাই বলা হয় অজ্ঞান অন্ধকারে নিদ্রায় আচ্ছন্ন। ভক্তি হলো অজ্ঞান (জ্ঞান বিহীন)। জ্ঞান প্রদান করেন একমাত্র বাবা জ্ঞানের সাগর। তোমরা হলে জ্ঞানের নদী। বাবা এসে বাচ্চাদের অর্থাৎ আত্মাদের পড়ান। তিনি হলেন পিতাও, টিচারও, সদগুরুও। অন্য কেউ এমন বলবে না, ইনি আমাদের পিতা, টিচারও গুরু। এ হলো অসীম জগতের কথা। তিনি অসীম জগতের পিতা, টিচার, সদ্গুরু । স্বয়ং বসে বোঝান আমি তোমাদের সুপ্রিম পিতা, তোমরা সবাই আমার সন্তান। তোমরাও বলো - বাবা, তুমিই সেই বাবা। বাবাও বলেন তোমরা কল্প-কল্প মিলিত হও। অতএব উনি হলেন পরম আত্মা , সুপ্রিম। তিনি এসে বাচ্চাদের সব কথা বোঝান। কলিযুগের আয়ু ৪০ হাজার বছর আরও আছে বলাটা একেবারে গল্প। ৫ হাজার বছরেই সব এসে যায়। বাবা যা কিছু বোঝান তোমরা বিশ্বাস কর, বুঝতে পারো। এমন নয় তোমরা বিশ্বাস কর না। যদি বিশ্বাস না করতে তবে এখানে আসতে না। এই ধর্মের না হলে বিশ্বাস করবে না। বাবা বুঝিয়েছেন সব কিছু নির্ভর করছে ভক্তির উপরে। যারা অনেক ভক্তি করেছে তাদের ভক্তির ফলও তো প্রাপ্ত হওয়া উচিত। তাদেরই বাবার কাছে অসীম জগতের অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। তোমরা জানো আমরা সেই দেবতা বিশ্বের মালিক হই। কয়েকটি দিন বাকি আছে। এই পুরানো দুনিয়ার বিনাশ তো দেখানো হয়েছে, অন্য কোনও শাস্ত্রে এই কথা নেই। একমাত্র গীতা হল ভারতের ধর্ম শাস্ত্র। প্রত্যেক কে নিজের ধর্ম শাস্ত্র পাঠ করা উচিত এবং ওই ধর্ম যাঁর দ্বারা স্থাপন হয়েছে তাঁর সম্বন্ধে জানা উচিত। যেমন খ্রিস্টান রা ক্রাইষ্টের সম্বন্ধে জানে, তাকেই মানে, পুজো করে। তোমরা হলে আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের তাই দেবতাদের পুজো করো। কিন্তু আজকাল নিজেদের হিন্দু ধর্মের বলে দিয়েছো।

তোমরা বাচ্চারা এখন রাজযোগ শিখছো। তোমরা হলে রাজঋষি। তারা হলো হঠযোগ ঋষি। রাত-দিনের তফাৎ। তাদের সন্ন্যাস হল কাঁচা, দৈহিক জগতের। শুধু ঘর সংসার ত্যাগ করার। তোমাদের সন্ন্যাস বা বৈরাগ্য হলো সম্পূর্ণ পুরানো দুনিয়া ত্যাগ করার। সর্ব প্রথম নিজের ঘর (পরম ধাম) সুইট হোমে গিয়ে তারপরে নতুন দুনিয়া সত্যযুগে আসবে। ব্রহ্মা দ্বারা আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা হয়। এখন বর্তমান সময় হলো পতিত পুরানো দুনিয়া। এই সব হলো বুঝবার কথা। বাবার কাছে পড়া করি। এইটি তো নিশ্চয়ই সত্যি তাইনা। এতে নিশ্চয় না হওয়ার কোনও কথা নেই। এই নলেজ বাবা-ই পড়ান। তিনি পিতা শিক্ষকও তিনি, সত্য সদগুরুও হলেন তিনি, সঙ্গে করে ফিরিয়ে নিয়ে যান। দৈহিক জগতের গুরু তো পিছনে ফেলে চলে যায়। এক গুরু চলে গেলে অন্য গুরু করা হয়। তার শিষ্য দেরই আসনে বসানো হয়। এখানে তো হলো বাবা ও সন্তানদের কথা। তাদের হলো গুরু শিষ্যের উত্তরাধিকারের কথা। উত্তরাধিকার তো পিতার-ই চাই তাইনা। শিববাবা আসেন ভারতে। শিবরাত্রি ও কৃষ্ণরাত্রি পালন হয় তাইনা। শিবের জন্ম পত্র তো নেই। শোনানো হবে কীভাবে ? তাঁর তো কোনও তিথি তারিখ থাকে না। কৃষ্ণ যিনি প্রথমে আসেন, তাঁকেই দেখানো হয়। দীপাবলী উৎসব পালন করা তো দুনিয়ার মানুষের কাজ। বাচ্চারা, তোমাদের জন্য দীপাবলী নয়। আমাদের নতুন বর্ষ, নতুন দুনিয়া সত্যযুগ কে বলা হয়। এখন তোমরা নতুন দুনিয়ার জন্য পড়া করছো। এখন তোমরা হলে পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে। ওই কুম্ভ মেলায় কত মানুষ যায়। ওটা হলো নদীর তীরে আয়োজিত মেলা। অনেক অনেক মেলার আয়োজন হয়। সেখানেও তাদের নিজেদের পরিচালনা পর্ষদ (পঞ্চায়েত) থাকে। কখনও কখনও তো সেখানে নিজেদের মধ্যেই ঝগড়া লেগে যায়, কারণ হলো দেহ-অভিমানী । এখানে তো ঝগড়া ইত্যাদির কোনও কথা নেই। বাবা শুধু বলেন - মিষ্টি -মিষ্টি প্রিয় বাচ্চারা, আমায় স্মরণ করো। তোমাদের আত্মা যে সতোপ্রধান থেকে তমোপ্রধান হয়েছে, খাদ পড়েছে তাইনা, সেসব যোগ অগ্নি দ্বারা-ই বের হবে। স্বর্ণকাররা জানে, বাবাকেই পতিত-পাবন বলা হয়। বাবা হলেন সুপ্রিম স্বর্ণকার। সর্বজনের খাদ বের করে প্রকৃত সত্য সোনায় পরিণত করেন। সোনা আগুনে দগ্ধ করা হয়। এই হল যোগ অর্থাৎ স্মরণের অগ্নি কারণ স্মরণ দ্বারা-ই পাপ ভস্ম হয়। তমোপ্রধান থেকে সতোপ্রধান স্মরণের যাত্রা দ্বারা-ই হয়। সবাই তো সতোপ্রধান হবে না। কল্প পূর্বের মতন পুরুষার্থ করবে। পরম আত্মারও ড্রামাতে পার্ট নির্দিষ্ট আছে, যা কিছু নির্দিষ্ট থাকে তা তো হবেই। বদল হতে পারে না। রীল চলতেই থাকে। বাবা বলেন ভবিষ্যতে তোমাদের আরও অনেক গুহ্য কথা শোনাব। সর্ব প্রথমে তো এই কথা নিশ্চয় করতে হবে - তিনি হলেন সর্ব আত্মাদের পিতা। তাঁকেই স্মরণ করতে হবে। মন্মনাভবের অর্থ হলো এই। বাকি কৃষ্ণ ভগবানুবাচ তো নেই। যদি কৃষ্ণ হবে তাহলে তো সবাই তার কাছে যাবে। সবাই চিনবে। তাহলে এমন বলা হয় কেন আমাকে কেবল কোটিতে কেউ জানতে পারবে। এই কথা তো বাবা বোঝান তাই মানুষের বুঝতে কষ্ট হয়। পূর্বেও এমনটাই হয়েছিল। আমি-ই এসে দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করেছিলাম তারপরে এইসব শাস্ত্র ইত্যাদি সব হারিয়ে যায়। তখন ভক্তিমার্গের নিজস্ব সময়ে শাস্ত্র ইত্যাদি সব সেই মতন বেরোবে। সত্যযুগে একটিও শাস্ত্র ইত্যাদি হয় না। ভক্তির নাম-গন্ধ নেই। এখন তো হলো ভক্তির রাজ্য। সবচেয়ে বড় উচ্চ পদের হলেন যিনি শ্রী শ্রী ১০৮ জগৎ গুরু রূপে পরিচিত। আজকাল তো ১০০৮-ও বলে দেওয়া হয়। বাস্তবে এই মালাটি হলো এখানকার। মালা যখন জপ করা হয়, তখন জানে ফুল হল নিরাকার, তারপরে হয় মেরু। ব্রহ্মা-সরস্বতী যুগল দানা। কারণ প্রবৃত্তি মার্গ যে। প্রবৃত্তি মার্গের মানুষ নিবৃত্তি মার্গের গুরু করে, সেই গুরু কি দেবে? হঠযোগ শিখতে হয়। সেসব তো অনেক রকমের হঠযোগ, রাজযোগের হলো একটিই প্রকার। স্মরণের যাত্রা হল এক, যাকে রাজযোগ বলা হয়। বাকি অন্য সবই হলো হঠযোগ, শরীরের সুস্থতার জন্য। এই রাজযোগ বাবা শেখান। আত্মা হলো প্রথমে, পরে হলো শরীর। তোমরা আবার নিজেকে আত্মা ভাবার পরিবর্তে শরীর নিশ্চয় করে উল্টো হয়ে পড়েছ। এখন নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে বাবাকে স্মরণ করো তাহলে অন্ত কালের মতানুযায়ী গতি হয়ে যাবে। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই অনাদি অবিনাশী পূর্ব রচিত ড্রামায় প্রত্যেকের পার্ট দেহী - অভিমানী হয়ে, সাক্ষী হয়ে দেখতে হবে। নিজের সুইট হোম এবং সুইট রাজধানীকে স্মরণ করতে হবে, এই পুরানো দুনিয়াকে বুদ্ধি দ্বারা ভুলে যেতে হবে।

২ ) মায়ার কাছে পরাজিত হবে না। স্মরণের অগ্নির দ্বারা পাপের নাশ করে আত্মাকে পবিত্র করার পুরুষার্থ করতে হবে।

বরদান:-
দীপমালাকে যথার্থ বিধির দ্বারা নিজের দৈবী পদের আহ্বানকারী পুণ্য আত্মা ভব

দীপমালাতে পূর্বে মানুষ বিধিপূর্বক দীপ প্রজ্বলিত করতো, প্রদীপ যাতে নিভে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতো, ঘী ঢালতো, বিধিপূর্বক আহ্বান করবার অভ্যাসে অভ্যস্ত ছিল তারা। এখন তো প্রদীপের পরিবর্তে বাল্ব জ্বালায়। দীপমালা উদযাপন নয় বরং মনোরঞ্জন হয়ে গেছে । আহ্বানের বিধি বা সাধনা বাদ চলে গেছে। স্নেহ সমাপ্ত হয়ে কেবল স্বার্থ রয়ে গেছে, সেইজন্য যথার্থ দাতা রূপধারী লক্ষ্মী কারো কাছে আসে না। কিন্তু তোমরা সকল যথার্থ বিধির দ্বারা নিজের দৈবী পদ এর আহ্বান করে থাকো। সেইজন্য স্বয়ং পূজ্য দেবী-দেবতা হয়ে যাও।

স্লোগান:-
সর্বদা অসীম জাগতিক বৃত্তি, দৃষ্টি আর স্থিতি হলে প'রে তবেই বিশ্ব কল্যাণের কার্য সম্পন্ন হবে।