30.10.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এখন তোমাদের অতি সাধারণ হতে হবে, ফ্যাশানেবেল দামী পোশাক পরিধানেও দেহ-অভিমান আসে"

প্রশ্নঃ -
ভাগ্যে উচ্চপদ না থাকলে তখন কোন্ কথায় বাচ্চাদের আলস্য আসে?

উত্তরঃ  
বাবা বলেন - বাচ্চারা, নিজেদের শোধরানোর জন্য চার্ট রাখো। স্মরণের চার্ট রাখায় অনেক লাভ রয়েছে। নোটবই যেন সদা হাতে থাকে। চেক্ করো যে, কতটা সময় বাবাকে স্মরণ করেছি? আমাদের রেজিস্টার কেমন? চরিত্র দৈবী-গুণসম্পন্ন হয়েছে কি? কর্মের মাঝেও বাবার স্মরণ থাকে কি? স্মরণের দ্বারাই খাদ দূর হবে, ভাগ্যও উচ্চ(শ্রেষ্ঠ) হবে।

গীতঃ-
ভোলানাথের থেকেও অনুপম....

ওম্ শান্তি ।
মিষ্টি-মিষ্টি বাচ্চাদের কাছে এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র ঘরে অবশ্যই থাকা উচিত। এনাদের(লক্ষ্মী-নারায়ণ) দেখে অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিত, কারণ এ হলো তোমাদের অধ্যয়নের এইম অবজেক্ট । তোমরা জানো যে - আমরা স্টুডেন্ট আর ঈশ্বর পড়ান। ঈশ্বরীয় স্টুডেন্ট বা বিদ্যার্থী, আমরা এ'সব পড়ছি। সকলের উদ্দেশ্যই এক। এঁদের দেখে অত্যন্ত খুশী হওয়া উচিত। বাচ্চারা গানও শুনেছে। তিনি অত্যন্ত ভোলা অর্থাৎ সরল। কেউ-কেউ শঙ্করকে ভোলানাথ মনে করে, আবার শিব আর শঙ্করকে মিলিয়ে ফেলে। এখন তোমরা জানো যে, শিব হলেন সর্বোচ্চ ভগবান আর শঙ্কর দেবতা তাহলে দু'জনে এক কিভাবে হতে পারে? এই গানও শুনেছো যে, ভক্তদের রক্ষাকারী, তাহলে ভক্তদের কোনো বিপর্যয় অবশ্যই আছে। ৫ বিকারের বিপর্যয় সকলের উপরেই রয়েছে। ভক্ত তো সকলেই। জ্ঞানী কাউকেই বলা যাবে না। জ্ঞান আর ভক্তি সম্পূর্ণ পৃথক জিনিস। যেমন শিব আর শঙ্কর আলাদা। যখন জ্ঞান প্রাপ্ত হয় তখন ভক্তি থাকে না। তোমরা সুখধামের মালিক হয়ে যাও। আধাকল্পের জন্য সদ্গতি পেয়ে যাও। এক ইশারাতেই তোমরা আধাকল্পের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করে নাও। দেখো, ভক্তদের কত কষ্ট।

জ্ঞানের দ্বারা তোমরা দেবতা হয়ে যাও, পরে যখন ভক্তদের ভীড় হয় অর্থাৎ দুঃখ হয় তখন বাবা আসেন। বাবা বোঝান যে, ড্রামানুসারে যা অতিবাহিত হয়ে গেছে তা পুনরায় রিপীট হবে। পুনরায় যখন ভক্তি শুরু হয় তখন থেকে বাম-মার্গ শুরু হয় অর্থাৎ অপবিত্র হওয়ার পথ। সেখানেও প্রথম স্থানে রয়েছে কাম-বিকার, যার জন্যই বলা হয়, কাম-বিকারের উপর বিজয়প্রাপ্ত করলে তোমরা জগতজীত হয়ে যাবে। ওরা কি কোনো বিজয় প্রাপ্ত করে, না করে না। রাবণ-রাজ্যে বিকার ব্যতীত কারোর শরীরের জন্ম হয় না, সত্যযুগে রাবণ-রাজ্য হয় না। ওখানেও যদি রাবণ-রাজ্য হতো তবে ভগবান রাম-রাজ্য স্থাপন করে কি আর এমন করেন? বাবার কত আশা থাকে যে, আমার বাচ্চারা যেন সুখী থাকে। (লৌকিকে) ধন একত্রিত করে বাচ্চাদের দিয়ে দেয় যাতে তারা সুখী থাকে। কিন্তু এখানে এমন হতে পারে না। এটা হলোই দুঃখের দুনিয়া। অসীম জগতের এই পিতা বলেন - তোমরা ওখানে জন্ম-জন্মান্তর (প্রতি জন্ম) ধরে সুখ ভোগ করবে। অগাধ ধনসম্পত্তি পেয়ে যাও, ২১ জন্ম ওখানে কোনো দুঃখ থাকবে না। দেউলিয়া হবে না। এই কথাগুলো বুদ্ধিতে রেখে অন্তরে অত্যন্ত খুশী থাকা উচিত। তোমাদের জ্ঞান এবং যোগ সম্পূর্ণ গুপ্ত। স্থূল অস্ত্র-শস্ত্রাদি কিছুই নেই। বাবা বোঝান, এ হলো জ্ঞানের তলোয়ার। তারাই (অজ্ঞানীরা) আবার স্থূল অস্ত্র-শস্ত্রের প্রতীকচিহ্ন দেবীদের দিয়েছে। যারা শাস্ত্রাদি পড়ে তারা কখনও এমনভাবে বলে না যে, এ হলো জ্ঞান-তলোয়ার বা এ হলো জ্ঞান-খর্গ। একথা অসীম জগতের পিতাই বসে বোঝান। তারা মনে করে যে, শক্তিসেনারাই বিজয়লাভ করেছে তাহলে অবশ্যই কোনো অস্ত্র-শস্ত্রাদি আছে। বাবা এসে এ'সব ভুলভ্রান্তিগুলো বলে দেন। তোমাদের এ'সব কথা অনেক মানুষ শুনবে। বিদ্বজনেরাও (পন্ডিত) একদিন আসবে। তিনি তো অসীম জগতের পিতা, তাই না! বাচ্চারা, শ্রীমতানুসারে চলার মধ্যেই তোমাদের কল্যাণ নিহিত কারণ তবেই দেহ-অভিমান ছিন্ন হবে, তাই ধনশালীরা আসে না। বাবা বলেন - দেহ-অভিমান পরিত্যাগ করো। ভাল-ভাল পোশাকাদিরও নেশা থাকে। তোমরা এখন বনবাসে রয়েছো, তাই না! তোমরা এখন যাবে শ্বশুড়বাড়ী। ওখানে তোমাদের প্রচুর অলঙ্কারাদি পড়ানো হবে। দামি দামি পোশাক পড়বে না। বাবা বলেন - অতি সাধারণভাবে থাকতে হবে। যেমন কর্ম আমি করি, বাচ্চাদেরও তেমন সাধারণভাবে থাকতে হবে। তা নাহলে দেহ-অভিমান চলে আসে। সে (দেহ-অভিমান) সবকিছুর অনেক ক্ষতি করে দেয়। তোমরা জানো যে, আমরা শ্বশুড়বাড়ীতে যাচ্ছি। সেখানে আমরা প্রচুর অলঙ্কার পাবো। এখানে তোমাদের অলঙ্কারাদি পড়তে হবে না। আজকাল চুরি-ডাকাতি কত হয়। রাস্তাতেই ডাকাত লুটমার করে সব নিয়ে নেয়। দিনে-দিনে এই বিশৃঙ্খলতা ইত্যাদি অধিকমাত্রায় বৃদ্ধি পেতেই থাকবে সেইজন্য বাবা বলেন - নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করে আমায় স্মরণ করো। দেহ-অভিমানে এলে বাবাকে ভুলে যাবে। এই পরিশ্রম করার সময় এখনই পাওয়া যায়। পুনরায় কখনও ভক্তিমার্গে এরকম পরিশ্রম করা পারবে না।

এখন তোমরা সঙ্গমে রয়েছো। তোমরা জানো যে, বাবা আসেনই পুরুষোত্তম সঙ্গমযুগে। লড়াইও অবশ্যই হবে। প্রচুর পরিমাণে পরমানু বোমা তৈরী করে। যতই মাথা চাপড়াও যে এসব যেন বন্ধ হয়ে যায় কিন্ত এমনটা হতে পারে না। ড্রামায় নির্ধারিত। বোঝালেও বোঝে না। মৃত্যু তো হতেই হবে, তা বন্ধ হবে কিভাবে? বোঝেও তবুও বন্ধ করে না। কারণ ড্রামায় নির্ধারিত রয়েছে। যাদব আর কৌরবদের বিনাশ হবেই। ইউরোপের অধিবাসীরা হলো যাদব। ওদের হলো সায়েন্সের অহঙ্কার, যার দ্বারা বিনাশ হয়। পুনরায় বিজয়প্রাপ্ত করে সাইলেন্সের শক্তি। তোমাদের শান্ত-স্বরূপে থাকা শেখানো হয়। বাবাকে স্মরণ করো - ডেড সাইলেন্স (মৃত্যুর ন্যায় নিস্তব্ধতা)। আমরা আত্মারা শরীর থেকে পৃথক । শরীর ত্যাগ করার জন্য যে'রকম আমরা পুরুষার্থ করি, তেমনভাবে শরীর পরিত্যাগ করার জন্য আর কেউ কি পুরুষার্থ করে? সমগ্র দুনিয়া খুঁজে এসো, যদি কেউ বলে -- হে আত্মা, এখন তোমায় শরীর ত্যাগ করে যেতে হবে। পবিত্র হও। তা নাহলে পুনরায় সাজা ভোগ করতে হবে ! সাজাভোগ কে করে? আত্মা। সেইসময় সাক্ষাৎকার হয়। তোমরা এই-এই পাপ করেছো, শাস্তিভোগ করো। সে'সময় অনুভব হয়। যেন জন্ম-জন্মান্তরের জন্য সাজা পায়। এত দুঃখ ভোগ করা তাহলে সুখের ব্যালেন্স কি রইলো। বাবা বলেন - এখন আর পাপকর্ম কোরো না। নিজের রেজিস্টার রাখো। প্রত্যেক স্কুলে ম্যানার্সের রেজিস্টার রাখা হয়, তাই না! শিক্ষামন্ত্রীও বলবে যে, ভারতের ক্যারেক্টার ঠিক নয়। তাদের বলো যে - আমরা এনাদের (লক্ষ্মী-নারায়ণ) মতন আচার-আচরণ শিখছি। এই লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র সদা সঙ্গে থাকা উচিত। এ হলো এইম অবজেক্ট। আমরা এরকম হই। আমরা শ্রীমতানুসারে এই আদি সনাতন দেবী-দেবতা ধর্মের স্থাপনা করছি। এখানে চাল-চলন সংশোধন করা হয়। তোমাদের এখানে বিচারও হয়। সব সেন্টারেই বাচ্চাদের কাছারি থাকা উচিত। রোজ বলো, চার্ট রাখো তবেই (নিজেকে) সংশোধন হবে। কারোর ভাগ্যে না থাকলে তখন অলস হয়ে পড়ে। চার্ট রাখা অত্যন্ত ভাল।

তোমরা জানো যে - আমরা এই ৮৪-র চক্রকে জানলেই চক্রবর্তী রাজা হয়ে যাবো। কত সহজ আর পবিত্রও হতে হবে। স্মরণের চার্ট রাখো এতে তোমাদের অত্যন্ত লাভ আছে। নোটবুক না বের করলে বুঝবে যে - বাবাকে স্মরণ করে না। নোকবুক সদা সঙ্গে রাখো। নিজের চার্ট দেখো - কতখানি সময় বাবাকে স্মরণ করেছো। স্মরণ ব্যতীত জং পরিস্কার হতে পারে না। জং সাফ করার জন্য কেরোসিন ঢালে, তাই না! কর্ম করতে-করতেও বাবাকে স্মরণ করো তবেই পুরুষার্থের ফল প্রাপ্ত হবে। পরিশ্রম আছে, তাই না! এমনি-এমনিই কি মাথায় মুকুট পরিয়ে দেবে, না তা দেবে না। বাবা এত উচ্চপদ দেন, কিছু পরিশ্রম তো করতেই হবে। এখানে হাত-পা ইত্যাদি কিছু চালনা করার প্রয়োজনই নেই। পড়া তো অতি সহজ। বুদ্ধিতে রয়েছে যে, শিববাবার কাছ থেকে ব্রহ্মার দ্বারা আমরা এরকম হতে চলেছি। কোথাও গেলে ব্যাজ যেন পড়া থাকে। বলো, বাস্তবে কোট অফ আর্মস্ (রাজ্য-প্রতীক) হলো এটা। বোঝানোর জন্য রয়্যালিটি চাই। অতি মধুরভাবে বোঝাতে হবে। কোট অফ আর্মসের উপরেও বোঝাতে হবে। প্রীত-বুদ্ধি আর বিপরীত-বুদ্ধি কাকে বলা হয়? তোমরা কি বাবাকে জানো? লৌকিক পিতাকে তো গড বলবে না। সেই অসীম জগতের পিতাই পতিত-পাবন, সুখের সাগর। ওনার কাছ থেকেই গভীর সুখ প্রাপ্ত হয়। যেসময় অজ্ঞানী ছিলাম তখন ভাবতাম সুখ মা-বাবা দেন। তারা তো শ্বশুরবাড়ি পাঠিয়ে দেয়। এখন তোমাদের হলো অসীম জগতের শ্বশুড়বাড়ী। ওটা হলো সসীম (হদ) জগতের। লৌকিক মাতা-পিতা ৫-৭ লক্ষ বা কোটি দেবে। বাবা তোমাদের নাম রেখেছেন পদ্মাপদমপতি বাচ্চা। ওখানে পয়সার কোন কথাই নেই। সবকিছুই পাওয়া যায়। অত্যন্ত ভালো ভালো অট্টালিকা (মহল) থাকে। জন্ম-জন্মান্তরের জন্য তোমরা মহল পেয়ে যাও। সুদামার উদাহরণ, তাই না! এক মুঠো চাল শুনেছে তাই এখানেও ওরা(বাচ্চারা) নিয়ে আসে। এখন চাল কি শুধু-শুধু খাবে, না তা খাবে না। তাই তার সঙ্গে কিছু মশলাপাতিও নিয়ে আসে। কত ভালবেসে নিয়ে আসে। বাবা আমাদের জন্ম-জন্মান্তরের জন্য দেবেন সেইজন্যই তাঁকে বলা হয় দাতা। ভক্তিমার্গে তোমরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে দান করো তাই পরের জন্মে অল্পসময়ের জন্য তা প্রাপ্ত হয়। কেউ দরিদ্রকে দান করে, কলেজ নির্মাণ করে তখন পরজন্মে পড়াশোনার দান প্রাপ্ত হয়। ধর্মশালা নির্মাণ করলে ঘর-বাড়ী প্রাপ্ত হয় কারণ ধর্মশালায় অনেকেই এসে আরামবোধ (সুখ পায়) করে। আর এ হলো জন্ম-জন্মান্তরের কথা। তোমরা জানো যে - তোমরা শিববাবাকে যাকিছু দাও তা সব আমাদেরই কার্যে ব্যবহার করেন। শিববাবা নিজের কাছে তো কিছু রাখেন না। এনাকেও বলেছেন - সবকিছু দিয়ে দাও তবেই বিশ্বের মালিক হয়ে যাবে। বিনাশের সাক্ষাৎকার করান, রাজত্বের সাক্ষাৎকার করান। ব্যস্, নেশা চড়ে যায়। বাবা আমায় বিশ্বের মালিক করে দেবেন। গীতাতেও অর্জুনকে সাক্ষাৎকার করিয়েছেন। আমায় স্মরণ করো তবেই তুমি এরকম হবে। বিনাশ এবং স্থাপনার সাক্ষাৎকার করিয়েছেন। এনারও (ব্রহ্মা) শুরুতে খুশীর পারদ ঊর্ধমুখী (চড়ে ছিল ) হয়েছিল। ড্রামায় এই পার্ট ছিল। ভগীরথ কে কেউ কি জানে? না জানে না। বাচ্চারা, তাই তোমাদের এই এইম অবজেক্ট বুদ্ধিতে রাখা উচিত। আমরা এমন হবো। যত পুরুষার্থ করবে ততই উচ্চপদ লাভ করবে। বলাও হয়, ফলো ফাদার। এই সময়ের কথা। অসীম জগতের পিতা বলেন - আমি যে পরামর্শ দিই তা ফলো করো। ইনি (ব্রহ্মা) কি করেছেন তাও বলি। ওনাকে সওদাগর, রত্নাকর, জাদুকরও বলা হয়, তাই না! বাবা হঠাৎই সব ছেড়ে দিয়েছেন। প্রথমে সেই(স্থূল) রত্নের জহুরী ছিলেন, এখন অবিনাশী জ্ঞান-রত্নের জহুরী হয়েছেন। নরককে স্বর্গে পরিণত করাও তো অনেক বড় ম্যাজিক (জাদু)। তিনি আবার সওদাগরও। বাচ্চাদের সঙ্গে কত ভাল সওদা করেন। অবগুণ বা বিকার-রূপী এক মুঠো চাল নিয়ে পরিবর্তে মহল দিয়ে দেন। কত ভাল রোজগারের ব্যবস্থা করেন তিনি। জহরতের ব্যবসাতেও এরকমই হয়। যখন কোন আমেরিকান গ্রাহক আসে তখন তাদের থেকে একশো টাকা মূল্যের জিনিসের পাঁচশো, হাজারও নিয়ে নেয়। তাদের থেকে অনেক পয়সা নিয়ে নেয়। তোমাদের কাছে সর্বাপেক্ষা প্রাচীন জিনিস রয়েছে - প্রাচীন যোগ।

তোমরা এখন ভোলানাথ বাবাকে পেয়েছো। কত ভোলাভালা। তোমাদের কিসে পরিনত করেন। অবগুণের পরির্বতে তোমাদের ২১ জন্মের জন্য কিসে পরিনত করে দেন। মানুষের তো কিছুই জানা নেই। কখনো বলবে ভোলানাথ এই দিয়েছেন, কখনো বলবে অম্বা দিয়েছেন, গুরু দিয়েছেন। এখানে হলো অধ্যয়ন। তোমরা ঈশ্বরীয় পাঠশালায় বসে রয়েছো। ঈশ্বরীয় পাঠশালা বলবে গীতা-কে। গীতাতেই রয়েছে ভগবানুবাচ। কিন্তু এও কারোর জানা নেই যে, ভগবান কাকে বলে। কাউকে জিজ্ঞাসা কর যে - পরমপিতা পরমাত্মাকে জানো কি? বাবা হলেন উদ্যান-পরিচারক। তোমাদের কাঁটা থেকে ফুলে পরিণত করছেন। ওটাকে গার্ডেন অফ আল্লাহ্ অর্থাৎ ঈশ্বরের বাগিচা বলা হয়। ইউরোপিয়ানরাও প্যারাডাইজ বলে। বরাবরই ভারত পরিস্তান ছিল, এখন কবরস্থান হয়েছে। এখন পুনরায় তোমরা পরিস্তানের মালিক হচ্ছো। বাবা এসে শায়িতদের জাগিয়ে তোলেন। এও তোমরা জানো পুরুষার্থের নম্বরের ক্রমানুসারে। যে নিজে থেকেই জেগে যায় সে অন্যদেরও জাগরিত করে। যদি না জাগায় তবে তো সেও জাগেনি। তাই বাবা বোঝান যে, এই গীতাদিও ড্রামায় পূর্ব-নির্ধারিত। কোনো গান অত্যন্ত ভাল দেয়। যখন তোমরা উদাস হয়ে যাও তখন এই গান চালাও তাহলে ভাল লাগবে। 'রাতের পথিক ক্লান্ত হয়ো না' - এও ভাল। এখন রাত শেষ হতে চলেছে। মানুষ মনে করে যত ভক্তি করবে তত শীঘ্রই ঈশ্বরকে পাওয়া যাবে। হনুমানাদির সাক্ষাৎকার হলেও মনে করে ঈশ্বরলাভ হয়েছে। বাবা বলেন - এই সাক্ষাৎকারাদির পার্টও ড্রামায় পূর্ব-নির্ধারিত। যে ভাবনা রাখে তার সাক্ষাৎকার হয়ে যায়। এছাড়া এমন কোনকিছু হয় না। বাবা বলেন - এই ব্যাজ সকলেরই সর্বদা পড়ে থাকা উচিত। অনেক ধরণের তৈরী হয়। বোঝানোর জন্য এ অত্যন্ত ভালো।

তোমরা তো আধ্যাত্মিক (রুহানী) মিলিটারি, তাই না! মিলিটারিদের সর্বদা লক্ষ্য থাকে। বাচ্চারা, তোমাদেরও এমন হলে নেশা থাকবে - আমরা এমন হতে চলেছি। আমরা স্টুডেন্ট। বাবা আমাদের মানুষ থেকে দেবতায় পরিনত করছেন। মানুষ দেবতাদের পূজা করে। দেবতারা তো দেবতাদের পূজা করবে না। এখানে মানুষ দেবতাদের পূজা করে কারণ তারা শ্রেষ্ঠ। আচ্ছা!

মিষ্টি-মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত। আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা-রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) বুদ্ধির দ্বারা সদা নিজের এইম অবজেক্টকে স্মরণে রাখতে হবে। লক্ষ্মী-নারায়ণের চিত্র যেন সদা সঙ্গে থাকে, এই খুশিতেই থাকো যে, আমরা এইরকম হওয়ার জন্য পড়ছি, এখন আমরা গডলী স্টুডেন্ট।

২ ) নিজেদের পুরানো অবগুণ অর্থাৎ একমুঠো চাল দিয়ে মহল নিয়ে নিতে হবে। ব্রহ্মাবাবাকে ফলো করে অবিনাশী জ্ঞান-রত্নের জহুরী হতে হবে।

বরদান:-
নিশ্চয়ের আধারে বিজয়ী রত্ন হয়ে সকলের প্রতি মাস্টার আশ্রয় দাতা ভব

নিশ্চয় বুদ্ধি বাচ্চারা বিজয়ী হওয়ার কারণে সদা খুশীতে নাচতে থাকে। তারা নিজেদের বিজয়ের বর্ণনা করে না কিন্তু বিজয়ী হওয়ার কারণে তারা অন্যদেরকেও সাহস প্রদান করে। কাউকে ছোটো করার চেষ্টা করে না, কিন্তু বাবার সমান মাস্টার আশ্রয় দাতা হয় অর্থাৎ আত্মাদের স্থিতি নিচের থেকে উপরে ওঠায়। তারা ব্যর্থ থেকে সদা দূরে থাকে। ব্যর্থ থেকে দূরে থাকাই হল বিজয়ী হওয়া। এইরকম বিজয়ী বাচ্চারা সকলের জন্য মাস্টার আশ্রয়দাতা হয়ে যায়।

স্লোগান:-
নিঃস্বার্থ আর নির্বিকল্প স্থিতির দ্বারা সেবা করাই হলো সফলতার মূর্তি হওয়া।

অব্যক্ত ঈশারা :- স্বয়ং আর সকলের প্রতি মন্সা দ্বারা যোগের শক্তিগুলির প্রয়োগ করো

যোগের প্রয়োগ করার জন্য দৃষ্টি-বৃত্তিতেও পবিত্রতাকে আরও আন্ডারলাইন করো। মূল ফাউন্ডেশন - নিজের সংকল্পকে শুদ্ধ, জ্ঞান স্বরূপ, শক্তি স্বরূপ বানাও। কেউ যতই উদ্ভ্রান্ত হয়ে, দুঃখী, অশান্ত হয়ে আসে, খুশীতে থাকা অসম্ভব মনে করে কিন্তু তোমাদের সামনে আসতেই তোমাদের মূর্তি, তোমাদের বৃত্তি, তোমাদের দৃষ্টি আত্মাকে পরিবর্তন করে দেয়। এটাই হলো যোগের প্রয়োগ।