31-08-2025 প্রাতঃ
মুরলি ওম্ শান্তি "অব্যক্ত বাপদাদা" রিভাইসঃ
15-12-2006 মধুবন
‘‘স্মৃতি স্বরূপ, অনুভাবী মূর্ত হয়ে সেকেন্ডের
তীব্রগতিতে পরিবর্তন করে পাস উইথ অনার হও’’
আজ বাপদাদা চতুর্দিকের বাচ্চাদের মধ্যে বিশেষ ভাগ্যের ঝলমলে তিন রেখা মস্তকে দেখছেন।
সবার মস্তক ভাগ্যের রেখায় ঝলমল করছে। এক) পরমাত্ম পালনার ভাগ্যরেখা। দুই) শ্রেষ্ঠ
শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার ভাগ্যের রেখা। তিন) সদগুরু দ্বারা শ্রীমতের ভাগ্যের রেখা।
বাস্তবত:, তোমাদের ভাগ্য অসীম, তবুও আজ এই বিশেষ তিন রেখা দেখছেন। তোমরাও নিজের
নিজের মস্তকে ঝলমলে রেখা অনুভব করছ তো না! সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হলো পরমাত্ম
ভালবাসার পরিপালনের রেখা। বাবা যেমন উঁচু হতে উঁচু তেমন পরমাত্ম পালনাও উঁচু হতে
উঁচু। এই পালনা কত কম সংখ্যকের প্রাপ্ত হয়! কিন্তু তোমরা সবাই এই পালনার যোগ্য
হয়েছ। সমগ্র কল্পে একবারই তোমরা সব বাচ্চার এই পালনা প্রাপ্ত হয়। এখন নয় তো কখনো
প্রাপ্ত হতে পারে না। এই পরমাত্ম পালনা, পরমাত্ম ভালবাসা, পরমাত্ম প্রাপ্তি কোটি
কোটির মধ্যে কিছু আত্মারই অনুভব হয়। তোমরা সবাই অনুভাবী তো না! অনুভব আছে তোমাদের?
পালনারও অনুভব আছে, পঠন-পাঠনেরও আছে, এই শ্রীমতেরও আছে, অনুভাবী মূর্ত তোমরা। তো সদা
নিজের মস্তকে ভাগ্যের এই নক্ষত্র ঝলমলে প্রতীয়মান হয়? সদা? নাকি কখনো ঝলমলে
নক্ষত্র নিষ্প্রভ হয়েও যায়! নিস্তেজ হওয়া উচিত নয়। যদি ঝলমলে নক্ষত্র নিস্তেজ
হয় তবে তার কারণ কী? জানো তোমরা?
বাপদাদা দেখেছেন যে কারণ এটাই তোমরা স্মৃতি স্বরূপ হওনি। তোমরা ভাবো আমি আত্মা,
কিন্তু ভাবনা স্বরূপ হয়ে যাও, স্মৃতি স্বরূপ কম হও। যতক্ষণ স্মৃতি স্বরূপ সদা না
হচ্ছ ততক্ষণ স্মৃতিই শক্তি যোগায়। স্মৃতি স্বরূপই সমর্থ স্বরূপ। সেইজন্য ভাগ্যের
নক্ষত্র কম ঝলমল করে। নিজেকে নিজে জিজ্ঞাসা করো বেশির ভাগ সময় আমি ভাবনা স্বরূপ হই
নাকি স্মৃতি স্বরূপ হই? ভাবনা স্বরূপ হওয়ায় তোমরা ভাবো খুব ভালো - আমি এই, আমি ওই,
আমি সেই... কিন্তু স্মৃতি না থাকার কারণে ভাববার সময় ব্যর্থ সংকল্প সাধারণ সংকল্প
মিক্স হয়ে যায়। বাস্তবত যদি দেখা যায় তো তোমাদের অনাদি স্বরূপই স্মৃতি তথা সমর্থ
স্বরূপ। ভাবনার স্বরূপ নয়। আর আদিতেও এই সময়ের স্মৃতি স্বরূপের প্রালব্ধ প্রাপ্ত
হয়। সুতরাং অনাদি আর আদি স্বরূপের স্মৃতি আছে এবং এই সময় অন্তে সঙ্গমেই তোমরা
স্মৃতি স্বরূপ হয়ে থাকো। ভাবনা স্বরূপ নও। সেইজন্য বাপদাদা আগেও বলেছেন যে বর্তমান
সময়ে অনুভাবী মূর্ত হওয়া শ্রেষ্ঠ স্টেজ। তোমরা ভাবো আমি আত্মা, পরমাত্ম প্রাপ্তি
আছে, কিন্তু উপলব্ধি করা আর অনুভব করা এর মধ্যে অনেক পার্থক্য। অনুভাবী মূর্ত কখনও
না মায়ার দ্বারা প্রতারিত হতে পারে, না দুঃখের অনুভূতি করতে পারে। এই যে মাঝে মাঝে
মায়ার খেলা দেখ কিংবা মায়ার খেলা খেলেও থাকো, তার কারণ হলো অনুভাবী মূর্ত হওয়ার
ক্ষেত্রে খামতি আছে। অনুভবের অথরিটি সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। তো বাপদাদা দেখেছেন যে
অনেক বাচ্চা ভাবে কিন্তু স্বরূপ হওয়ার অনুভূতি কম।
আজকের দুনিয়াতে দেখা আর শোনায় মেজরিটি আত্মা ক্লান্ত হয়ে গেছে কিন্তু অনুভব
দ্বারা প্রাপ্তি করতে চায়। তো তাদেরকে অনুভব করাও, অনুভাবীই করাতে পারবে। অনুভাবী
আত্মা সদা অগ্রচালিত হতে থাকবে, উড়তে থাকবে কেননা, অনুভাবী আত্মার মধ্যে উৎসাহ
উদ্দীপনা সদা ইমার্জ রূপে থাকে। তো চেক করো সব পয়েন্টের অনুভাবী মূর্ত হয়েছ?
অনুভবের অথরিটি তোমাদের সব কর্মে দৃশ্যমান হয়? সব বোল, সব সংকল্প অনুভবের অথরিটি
দ্বারা হয়, নাকি শুধু বুঝে নেওয়ার আধারে? এক হলো বুঝতে পারা, আরেক হলো অনুভব করা।
সব সাব্জেক্টে জ্ঞানে পয়েন্টস বর্ণনা করা সেতো বাইরের স্পিকারও ভালো স্পিচ দেয়,
কিন্তু সব পয়েন্টের অনুভাবী স্বরূপ হওয়া, এটাই জ্ঞানী তু আত্মা। যারা যোগ লাগায়
তারা সংখ্যায় অনেক, কিন্তু যোগের অনুভব অর্থাৎ শক্তি স্বরূপ হওয়া। তাছাড়া, যে
সময় যে শক্তির প্রয়োজন আছে, সেই সময় সেই শক্তিকে আহ্বান করে নির্বিঘ্ন স্বরূপ হয়ে
যাওয়ার বিষয়েই শক্তি স্বরূপের মূল্যায়ন হয়, যদি একটা শক্তিরও খামতি থাকে, বর্ণন
মাত্র আছে কিন্তু স্বরূপ হয়নি তাহলেও সময়কালে প্রতারিত হতে পারো। প্রয়োজন সহন
শক্তি আর তোমরা যদি মোকাবিলা করার শক্তি ইউজ করো, তবে যোগযুক্ত অনুভাবী স্বরূপ বলা
হবে না। চার সাব্জেক্টেই স্মৃতি স্বরূপ বা অনুভাবী স্বরূপের লক্ষণ কী হবে? স্থিতিতে
নিমিত্ত ভাব, বৃত্তিতে সদা শুভ ভাব, আত্মিক ভাব, নিঃস্বার্থ ভাব থাকবে। বায়ুমণ্ডলে
অথবা সম্বন্ধ সম্পর্কে সদা নির্মান ভাব, বাণীতে সদা নির্মল বাণী থাকবে। এই বিশেষত্ব
অনুভাবী মূর্তের সবসময় ন্যাচারাল নেচার হবে। ন্যাচারাল নেচার। এখন অনেক বাচ্চা কখনো
কখনো বলে যে আমি চাই না এটা করি কিন্তু আমার পুরানো নেচার! নেচার যেটা ন্যাচারাল
কাজ সেটাই করে, ভাবতে হয় না, নেচার ন্যাচারালি কাজ করে। তো নিজেকে চেক করো - আমার
ন্যাচারাল নেচার কী? যদি কোনও পুরানো নেচার অংশ মাত্রও থাকে, তবে সবসময় সেটা কার্যে
ব্যবহার হতে হতে পাক্কা সংস্কার হয়ে যায়। সেটা সমাপ্ত করার জন্য পুরানো নেচার,
পুরানো স্বভাব, পুরানো সংস্কার সমাপ্ত করতে চাও কিন্তু করতে পারো না, এর কারণ কী?
পরিবর্তন করার শক্তি কম। মেজরিটির মধ্যে দেখা যায় যে পরিবর্তনের শক্তি তারা বোঝে,
বর্ণনও করে, সবাইকে যদি পরিবর্তন শক্তির বিষয়ে লিখতে বলা হয় অথবা ভাষণ করতে বলা
হয়, বাপদাদা মনে করেন এ ব্যাপারে সবাই পারদর্শী, খুব ভালো ভাষণও করতে পারে, লিখতেও
পারে আর অন্য কেউ যদি আসে তাকে খুব ভালো বোঝাতেও পারে - কোনো ক্ষতি নেই, পরিবর্তন
করে নাও। কিন্তু নিজের মধ্যে পরিবর্তন করার শক্তি আর বর্তমান সময়ের কি মহত্ত্ব সেটা
জেনে পরিবর্তন করার ব্যাপারে সময় লাগানো উচিৎ নয়। পরিবর্তনের শক্তি হতে হবে
সেকেন্ডে। কেননা, যখন বুঝতে পারছ এমন কিছু হওয়া উচিত নয়, বুঝেও যদি পরিবর্তন করতে
না পারো তার কারণ হলো - তোমরা ভাবো কিন্তু স্বরূপ হওনি। সারাদিনে অধিকমাত্রায় ভাবনা
স্বরূপ হও। স্মৃতি তথা সমর্থ স্বরূপ হওয়ায় মেজরিটি কম।
এখন তীব্র গতির সময়, তীব্র পুরুষার্থের সময়, সাধারণ পুরুষার্থেরও কিসময় নয়,
সেকেন্ডে পরিবর্তনের অর্থ হলো - স্মৃতি স্বরূপ দ্বারা এক সেকেন্ডে নির্বিকল্প,
ব্যর্থ সংকল্প যেন নিবৃত্তি হয়, কেন? সময়কে সমাপ্তির সমীপে নিয়ে আসার নিমিত্ত
তোমরা। তো এখনের এই সময়ের মহত্ত্ব অনুযায়ী তোমরা জানোই যে তোমাদের প্রতিটা
পদক্ষেপে পদ্ম সমাহিত হয়ে আছে, আর তা' বাড়ানোর ভাবনা যেমন বুদ্ধিতে রাখো, তেমন
কিন্তু হারিয়ে ফেলার ভাবনাও বুদ্ধিতে রাখো। যদি কদমে পদম তৈরিও হয় তো কদমে পদম
নষ্টও তো করো, নাকি করো না? তো এখন মিনিটের ব্যাপার চলে গেছে, অন্যদের জন্য তোমরা
বলে থাকো ওয়ান মিনিট সাইলেন্সে থাকো কিন্তু তোমাদের জন্য সেকেন্ডের বিষয় হওয়া
উচিত। যেমন, হ্যাঁ আর না ভাবতে কত টাইম লাগে? সেকেন্ড। তো পরিবর্তন শক্তি এত ফাস্ট
হওয়া দরকার। তোমরা মনে করছ কখনো ঠিক আছে, ঠিক নেই! যা বেঠিক তা'তে বিন্দু আর যা
ঠিক তা' প্র্যাকটিক্যালে আনতে হবে। এখন বিন্দুর মহত্ত্বকে কার্যে লাগাও। তিন
বিন্দুকে তোমরা জানো তো না! তাহলে বিন্দুকে সময়মতো কার্যে প্রয়োগ করো। যেমন
সায়েন্সের ওরা সব বিষয়ে তীব্র গতিতে করছে, আর পরিবর্তনের শক্তিও কার্যে বেশি
ব্যবহার করছে। তো সাইলেন্সের শক্তিধর, তোমরা এখন লক্ষ্য রাখো যদি পরিবর্তন করতে হয়,
নলেজফুল হও তবে এখন পাওয়ারফুল হও সেকেন্ডের গতিতে। করছি, হয়ে যাবে..করে নেবো..,
না। হতে পারে, নাকি কঠিন? কেননা, সময়কালে সেকেন্ডের পেপার আসার আছে, মিনিটের নয়,
সুতরাং সেকেন্ডের অভ্যাস বহুকালের হবে তবে তো সেকেন্ডে পাস উইথ অনার হবে, তাই না!
পরমাত্ম-স্টুডেন্ট তোমরা, পরমাত্ম- পাঠের পড়া পড়ছো, তো পাস উইথ অনার হতেই হবে তো
না! পাস মার্কস নিয়েছ তো কী হয়েছে? পাস উইথ অনার এর লক্ষ্য কী রেখেছ? যারা মনে করো
পাস উইথ অনার হতে হবে তারা হাত উঠাও, পাস উইথ অনার, এই অনার শব্দ আন্ডারলাইন করো।
আচ্ছা। তো এখন কী করতে হবে? "মিনিট মোটর" (ছোট ও হাল্কা যন্ত্রে ব্যবহার করা হয়,
যেমন রোবটে) ) তো কমন, এখন সেকেন্ডের কাজ।
হ্যাঁ, পাঞ্জাবের তোমরা, এখন সেকেন্ডের ব্যাপার। এতে নম্বর ওয়ান কে হবে? পাঞ্জাব।
কী আর বড় ব্যাপার! এত নেশার সাথে বলো, খুব ভালো বলো, এতটাই নেশার সাথে বলো, যখন
বাপদাদা শোনেন খুব খুশি হন, তোমরা বলো - কী আর বড় ব্যাপার! বাপদাদা সাথে আছেন। সাথ
তো অথরিটি, সুতরাং এখন কী করতে হবে? তেজিয়ান হতে হবে এখন। সেবা তো করছ, তাছাড়া
সেবা ব্যতীত আর করবেই বা কি? খালি বসে থাকবে কি? সেবা তো ব্রাহ্মণ আত্মাদের ধর্ম,
কর্ম। কিন্তু এখন সেবার সাথে সাথে সমর্থ স্বরূপ, সেবার উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখিয়েছ,
বাপদাদা খুশি, অভিনন্দনও জানাচ্ছেন। সেবার মুকুট তো প্রাপ্ত হয়েছে, কত সুন্দর লাগছে
দেখ মুকুট পরে! এখন স্মৃতি স্বরূপ হওয়ার মুকুট পরে দেখাও। ইয়ুথ গ্রুপ আছে তো না!
তো কী চমৎকার করবে? সেবাতেও নম্বর ওয়ান আর সমর্থ স্বরূপ হওয়াতেও নম্বর ওয়ান।
বার্তা দেওয়াও ব্রাহ্মণ জীবনের ধর্ম আর কর্ম। কিন্ত এখন বাপদাদা নির্দেশ দিচ্ছেন
যে, পরিবর্তনের মেশিনারি জোরদার করো। নয়তো, পাস উইথ অনার হওয়ার ক্ষেত্রে মুশকিল
হয়ে যাবে। বহুকালের অভ্যাস চাই। ভাবার সাথে সাথেই সম্পাদন করা, শুধু ভাবনা স্বরূপ
হয়ো না। ব্যর্থকে তীব্র গতিতে সমাপ্ত করো। ব্যর্থ সংকল্প, ব্যর্থ বোল, ব্যর্থ কর্ম,
ব্যর্থ সময় আর সম্বন্ধ সম্পর্কেও ব্যর্থ বিধি, রীতি সব সমাপ্ত করো। যখন ব্রাহ্মণ
আত্মারা তীব্র গতিতে স্ব- এর এই ব্যর্থ সমাপ্ত করবে তখন আত্মাদের আশীর্বাদ এবং
নিজের পুণ্যের খাতা তীব্র গতিতে জমা করবে।
বাপদাদা আগেও শুনিয়েছেন যে বাপদাদা তিন খাতা চেক করেন। পুরুষার্থের গতির খাতা,
আশীর্বাদের খাতা, পুণ্যের খাতা। কিন্তু মেজরিটির খাতায় এখনো পরিপূর্ণতার ঘাটতি
রয়েছে। সেইজন্য বাপদাদা আজ এই স্লোগান স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে এখন তেজস্বী হও,
তীব্র পুরুষার্থী হও। তীব্র গতিতে সমাপ্তি আনবে সেরকম হও। তীব্র গতিতে বায়ুমণ্ডল
পরিবর্তনকারী হও।
বাপদাদা একটা বিষয়ে সব বাচ্চার প্রতি খুব খুশি। কোন বিষয়ে? বাবার প্রতি সকলের
ভালবাসা আন্তরিক, তার জন্য অভিনন্দন। কিন্তু বলবো কী করবে! এই সিজন সমাপ্ত হওয়া
পর্যন্ত তীব্র গতির কিছু না কিছু চমক দেখাও। পছন্দ? পছন্দ তোমাদের? যারা মনে করো
লক্ষ্য আর লক্ষণ দুইই স্মৃতিতে বজায় রাখবে তারা হাত উঠাও। লক্ষ্য আর লক্ষণ যারা
দুটোই সামনে রাখবে তারা হাত উঠাও। ডবল ফরেনার্সও রাখবে, টিচার্সও রাখবে এবং ইউথও
রাখবে, আর যারা প্রথম লাইনের তারাও রাখবে। তো ইন অ্যাডভান্স পদম, পদম, পদমগুন
অভিনন্দন। আচ্ছা।
এখন এখনই অভ্যাস করো - এক সেকেন্ডে নির্বিকল্প, নির্ব্যর্থ সংকল্প হয়ে একাগ্র, এক
বাবা দ্বিতীয় কেউ নয় - এই একই সংকল্পে একাগ্র হয়ে বসতে পারো! আর কোনও সংকল্প
থাকবে না। একই সংকল্পের একাগ্রতা শক্তির অনুভবে বসে যাও। টাইম লাগিও না, এক সেকেন্ডে।
আচ্ছা।
চতুর্দিকের বাচ্চাদের যারাই বিশেষভাবে স্মরণের স্নেহ-সুমন পাঠিয়েছে, তারা প্রত্যেক
বাচ্চা নিজের নামে স্মরণের স্নেহ-সুমন আর হৃদয়ের আশিস্ স্বীকার করো। বাপদাদা
দেখছেন যে সবার হৃদয়ে আসে আমারও স্মরণ, আমারও স্মরণ, কিন্তু তোমরা বাচ্চারা সংকল্প
করো আর বাপদাদার কাছে সেই সময়ই পৌঁছে যায়। সেইজন্য বাচ্চাদের প্রত্যেককে তাদের
নাম আর বিশেষত্ব সম্পন্ন স্মরণ স্নেহ দিচ্ছেন।
তো সব স্মৃতি স্বরূপ, সমর্থ স্বরূপ, অনুভব স্বরূপ শ্রেষ্ঠ বাচ্চাদের, সদা যা শুভ
ভেবেছে, সেটা তৎক্ষনাৎ করেছে, যেমন তৎক্ষণাৎ দানের মহত্ত্ব আছে, তেমন তৎক্ষণাৎ
পরিবর্তনেরও মহত্ত্ব আছে। সুতরাং যারা তৎক্ষণাৎ পরিবর্তন করে সেই বিশ্ব পরিবর্তনকারী
বাচ্চাদের, যারা পরমাত্ম পালনা, পরমাত্ম ভালবাসা, পরমাত্ম পড়াশোনা এবং পরমাত্ম
শ্রীমত সব কর্মে নিয়ে আসে সেই মহাবীর বাচ্চাদের, যারা সদা মনোবল আর একাগ্রতা, একতা
দ্বারা নম্বর ওয়ান তীব্র পুরুষার্থ করে এমন বাচ্চাদের বাপদাদার হৃদয়ের স্মরণের
স্নেহ-সুমন আর হৃদয়ের আশিস্ এবং নমস্কার।
দাদিজির প্রতি :- তুমি বিজয়
প্রাপ্ত করে দেখাচ্ছো। দাদিদের প্রতি - সবাই তোমরা ভালোভাবে পার্ট প্লে করছো।
বাপদাদা প্রত্যেকের পার্ট দেখে খুশি হন। ছোট ছোটরাও ভালোভাবে পার্ট প্লে করছে। এমন
ভেবো না আমরা তো ছোট। ছোটরা পবিত্র আল্লাহ্। শক্তিদের নিজস্ব পার্ট, পাণ্ডবদের
নিজস্ব পার্ট। পাণ্ডব না হলেও কাজ হবে না, শক্তিরা যদি না থাকে তবেও কাজ হবে না,
সেইজন্য ভারতে চতুর্ভুজের স্মারক আছে। আর কোনও ধর্মে চতুর্ভুজ দেখায় না কিন্তু
ভারতের স্মারক রূপে চতুর্ভুজের মহত্ত্ব আছে। তো তোমরা উভয় পক্ষই ভালোভাবে পার্ট
প্লে করছ কিন্তু এখন শীঘ্র করতে হবে, ব্যস। কখনো কখনো একটু শিথিল হয়ে যাও। এখন
শিথিল হওয়ার সময় নেই। পরিস্থিতি তো ভিন্ন ভিন্ন হয়েই থাকে কিন্তু পরিস্থিতির
গুহ্যতা বুঝে রাজযুক্ত, যোগযুক্ত, স্নেহযুক্ত, সহযোগ যুক্ত হয়ে চলতে হবে। ঠিক আছে
তো না! (দাদিজির প্রতি) খুব ভালো লাগে তাই না? দেখ কত এসেছে! কেন এসেছে? এরা সবাই
কেন এসেছে? তোমাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসেছে। বাপদাদার সাথে মিলিত হতে তো এসেছে
কিন্তু সাথে দাদিরা না থাকলে তখন বলে তো না মজা আসে না! আর তোমরাও যদি না থাকো তবেও
মজা হয় না।
বরদান:-
স্মৃতির সুইচের দ্বারা স্ব-কল্যাণ আর সকলের কল্যাণ
করে সিদ্ধি স্বরূপ ভব
স্থিতির আধার হলো স্মৃতি। এই শক্তিশালী স্মৃতি যেন
থাকে যে, "আমি বাবার, বাবা আমার।" তো এই স্মৃতি দ্বারা নিজের স্থিতি শক্তিশালী থাকবে
এবং অন্যদেরও শক্তিশালী বানাবে। সুইচ অন করলে যেমন আলোকিত হয়, তেমন স্মৃতিও একটা
সুইচ। যদি সদা স্মৃতি রূপী সুইচের অ্যাটেনশন থাকে তবে নিজের এবং সকলের কল্যাণ করতে
থাকবে। নব জন্ম যখন হয়েছে তখন স্মৃতিও যেন নতুন থাকে। পুরানো সব স্মৃতি স্বভাব
সমাপ্ত - এই বিধি দ্বারা সিদ্ধি স্বরূপের বরদান প্রাপ্ত হয়ে যাবে।
স্লোগান:-
অতীন্দ্রিয় সুখের অনুভুতি করার জন্য নিজের শান্ত
স্বরূপ স্থিতিতে স্থিত হয়ে যাও।
অব্যক্ত ইশারা :- সহজযোগী হতে হলে পরমাত্ম প্রেমের
অনুভবী হও বাপদাদা প্রেমের বন্ধনে বেঁধে আছেন। যদি ছাড়তে চাও তবুও ছাড়তে পারবে
না। সেইজন্য ভক্তিতেও তারা বন্ধনের চিত্র দেখিয়েছে। প্র্যাকটিক্যালি অব্যক্ত হওয়া
সত্ত্বেও প্রেমের বন্ধনে বেঁধে থাকতেই হয়। ব্যক্ত থেকে বিমুক্ত হয়েছেন তবুও ছাড়তে
পারেননি। প্রেমের এই রস্যি খুব মজবুত। এরকম প্রেম স্বরূপ হয়ে পরস্পরকে প্রেমের
রস্যিতে বেঁধে সমীপ সম্বন্ধের অথবা আপন বোধের অনুভূতি করাও।