04.04.2025 প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন


"মিষ্টি বাচ্চারা - এখন তোমরা পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য পুরুষার্থ করছো, পুরুষোত্তম হলেন দেবতারা, কারণ তারা হলেন পবিত্র, তোমরা পবিত্র হচ্ছো"

প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা, অসীম জগতের বাবা তোমাদের শরণ (আশ্রয়) দিয়েছেন কেন?

উত্তরঃ  
কারণ আমরা সবাই রিফিউজড বিন (ময়লার বাক্সে) এ পড়ে ছিলাম। বাবা আমাদের সেই বাক্স থেকে বের করে সুন্দর সুন্দর ফুলে (গুল-গুল) পরিণত করেন। আসুরী গুণের পরিবর্তে দৈবী গুণের অধিকারী করেন। ড্রামা অনুযায়ী বাবা এসে আমাদের ময়লা আবর্জনার থেকে বের করে অ্যাডপ্ট করে আপন করেছেন ।

গীতঃ-
কে এলো আজ সাত সকালে...

ওম্ শান্তি ।
রাতকে দিন করার জন্য বাবাকে আসতে হয়। এখন তোমরা বাচ্চারা জানো যে, বাবা এসেছেন। প্রথমে আমরা শূদ্র বর্ণের ছিলাম, শূদ্র বুদ্ধি ছিল। বর্ণের চিত্রটি বোঝানোর জন্য খুবই ভালো। বাচ্চারা জানে আমরা এই বর্ণে কীভাবে পরিক্রমণ করি। এখন আমাদের পরমপিতা পরমাত্মা শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণে পরিণত করেন। প্রতি কল্পে-কল্পে, কল্পের সঙ্গমযুগে আমরা ব্রাহ্মণ হই। ব্রাহ্মণদের পুরুষোত্তম বলা হবে না। পুরুষোত্তম তো দেবতাদের বলা হবে। ব্রাহ্মণরা এইখানে পুরুষার্থ করে পুরুষোত্তম হওয়ার জন্য। পতিত থেকে পবিত্র হওয়ার জন্য বাবাকে আহ্বান করা হয়। অতএব নিজেকে জিজ্ঞাসা করা উচিত আমরা কতটা পবিত্র হয়েছি? স্টুডেন্টরাও পড়ার জন্য বিচার সাগর মন্থন তো করে তাইনা। তারা ভাবে এই পড়া করে আমরা এমন হব। বাচ্চারা তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে আমরা এখন ব্রাহ্মণ হয়েছি দেবতা হওয়ার জন্য। এই জীবনটি হল অমূল্য কারণ তোমরা এখন ঈশ্বরীয় সন্তান হয়েছো। ঈশ্বর তোমাদের রাজযোগের শিক্ষা দিচ্ছেন, পতিত থেকে পবিত্র করছেন। পবিত্র দেবতায় পরিণত হই। বর্ণের আধারে বোঝানো সহজ। সন্ন্যাসীরা এইসব কথা শুনবে না। যদিও ৮৪ জন্মের হিসাব বুঝবে। এই কথাও বুঝবে যে আমরা হলাম সন্ন্যাস ধর্মের, আমাদের ৮৪ জন্ম হয় না। ইসলাম, বৌদ্ধ ইত্যাদি সবাই বুঝবে আমাদের ৮৪ জন্ম হয় না। হ্যাঁ পুনর্জন্ম হয়। কিন্তু কম। তোমরা বোঝালে সাথে সাথে বুঝবে। বোঝানোর যুক্তি চাই। তোমরা বাচ্চারা এইখানে সামনে বসে আছো তাই বাবা বুদ্ধিকে রিফ্রেশ করে দেন যেমন অন্য বাচ্চারাও আসে এইখানে রিফ্রেশ হতে। তোমাদের তো বাবা রোজ রিফ্রেশ করেন যে এই রকম ধারণা করো। বুদ্ধিতে যেন এই চিন্তন চলতে থাকে, আমরা ৮৪ জন্ম কীভাবে নিয়ে থাকি? কীভাবে শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হই? ব্রহ্মার সন্তান ব্রাহ্মণ। এবারে ব্রহ্মা এলেন কোথা থেকে? বাবা বোঝান আমি এনার নাম ব্রহ্মা রাখি। এরা যে ব্রহ্মাকুমার - কুমারীরা আছে এরা তো ফ্যামিলি হয়ে গেল। অর্থাৎ নিশ্চয়ই অ্যাডপ্ট করা হয়েছে। বাবা স্বয়ং অ্যাডপ্ট করবেন। তাঁকেই পিতা বলা হয়, দাদাকে অর্থাৎ ব্রহ্মাবাবাকে বলা হয় না। শিববাবাকেই বাবা বলা হয়। সম্পত্তি বাবার কাছেই প্রাপ্ত হয়। কখনো কখনো কাকা, মামা বা বংশের কেউ অ্যাডপ্ট করে থাকে। যেমন একবার বাবা বলেছিলেন একটি শিশু কন্যা ড্স্টবিনে পড়ে ছিল, কেউ তাকে তুলে অন্য একজনের কোলে দিল যার কোনও সন্তান ছিলনা। অতএব সেই কন্যাটি যার কোলে গেলো তাকেই মাতা-পিতা বলবে তাইনা। এখানে যদিও বিষয়টি হলো অসীম জগতের। তোমরা বাচ্চারাও রাবণের দুনিয়ার ডাস্টবিনে পড়েছিলে। বিষয় বৈতরণী নদীতে পড়েছিলে। কতখানি ময়লা হয়ে পড়ে ছিলে। ড্রামা অনুযায়ী বাবা এসে সেই ময়লা থেকে বের করে তোমাদের দত্তক নিয়েছেন। তমোপ্রধানকে ময়লা বা আবর্জনা বলা হবে তাইনা। অসুরী গুণের অধিকারী মানুষ হলো দেহ-অভিমানী। কাম, ক্রোধও হলো বৃহৎ রূপের বিকার তাইনা। সুতরাং তোমরা রাবণের বিশাল ময়লা গাদায় পড়ে ছিলে। বাস্তবে তোমরা হলে রিফিউজিও। এখন তোমরা অসীম জগতের পিতার কাছে আশ্রয় নিয়েছো, রিফিউজড বিন থেকে বেরিয়ে সুন্দর সুন্দর ফুল দেবতা হওয়ার জন্য। এইসময় সম্পূর্ণ দুনিয়া ময়লার বৃহত্তম বিনে পড়ে আছে। বাবা এসে তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের ময়লা থেকে বের করে আপন করেন। কিন্তু ময়লা থাকতে অভ্যস্ত এমন যে ময়লা থেকে বের করার পরেও ময়লা থাকাই ভালো লাগে। বাবা এসে অসীমের ময়লা থেকে মুক্ত করেন। আহ্বানও করে বাবা এসে আমাদের সুন্দর ফুল বানাও। কাঁটার জঙ্গল থেকে মুক্ত করে ফুল বানাও। ঈশ্বরীয় বাগিচায় বসাও। এখন অসুরদের জঙ্গলে আছি। বাবা তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের গার্ডেনে নিয়ে যান। শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হয়েছি তারপরে দেবতা হবো। এই হল দেবতাদের রাজধানী। ব্রাহ্মণদের রাজত্ব হয় না। যদিও নাম হল পাণ্ডব কিন্তু পাণ্ডবদের রাজত্ব নেই। রাজত্ব প্রাপ্তির জন্য বাবার সঙ্গে বসে আছে। অসীমের রাত পূর্ণ হয়ে অসীমের দিন শুরু হয়। গীত শুনেছো না - কে এলো সাত সকালে .... সকাল বেলায় আসেন রাতকে পরিবর্তন করে দিন বানাতে অর্থাৎ স্বর্গের স্থাপনা, নরকের বিনাশ করতে। এই কথাও বুদ্ধিতে থাকলে খুশী অনুভব হবে। যারা নতুন দুনিয়ায় উঁচু পদ মর্যাদা প্রাপ্ত করবে তারা কখনও নিজের অসুরী স্বভাব দেখাবে না। যে যজ্ঞের দ্বারা এত উঁচু হও, সেই যজ্ঞের সেবা খুব ভালোবেসে করবে। এমন যজ্ঞে তো হাড় টুকুও দান করা উচিত। নিজেকে দেখা উচিত - এই আচরণের দ্বারা আমরা উঁচু পদ কীভাবে প্রাপ্ত করবো! অবুঝ ছোট বাচ্চা তো নয় তাইনা। বুঝতে তো পারবে - রাজা কীভাবে হয়, প্রজা কীভাবে হয়? বাবা রথ নিয়েছেন অনুভাবী তিনি তো না। যিনি রাজা রাজরাদের বিষয়ে খুবই ভালো ভাবে জানতেন। রাজার দাস-দাসীরা অনেক সুখ ভোগ করে। তারা তো রাজার সাথেই থাকে। কিন্তু নাম হবে দাস-দাসী। সুখ তো আছেই তাইনা। যা খাবার রাজা-রানী খাবে সেসব তারাও পাবে। বাইরের কেউ তো সেসব পাবে না। দাসীদের মধ্যেও নম্বর থেকে। কেউ শৃঙ্গার করায়, কেউ শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ করে, কেউ সাফাই ইত্যাদি করে। এখানকার রাজাদের এত দাস-দাসী থাকে, তো সেখানে কত বেশি থাকবে। সবার উপরে আলাদা নিজস্ব চার্জ থাকে। থাকার জায়গা আলাদা থাকবে। সেই স্থান রাজা-রানীদের মতন সুসজ্জিত থাকবে না। যেমন সার্ভেন্ট কোয়ার্টার থাকে না তেমন। মহলের ভিতরে আসবে কিন্তু থাকবে সার্ভেন্ট কোয়ার্টারে। অতএব বাবা ভালোভাবে বোঝান নিজের উপরে দয়া করো। আমরা যেন উঁচু থেকে উঁচুতে অবস্থান করি। আমরা এখন শূদ্র থেকে ব্রাহ্মণ হয়েছি। কি সৌভাগ্য। তারপরে দেবতা হবো। এই সঙ্গমযুগ হলো অত্যন্ত কল্যাণকারী। তোমাদের প্রতিটি কথায় কল্যাণ সমাহিত রয়েছে । ভাণ্ডারাতেও যোগ যুক্ত হয়ে ভোজন তৈরি করলে তাতে অনেকের কল্যাণ নিহিত রয়েছে । শ্রীনাথ দ্বারে ভোজন তৈরি করা হয় একেবারে সাইলেন্সে। কেবলমাত্র শ্রীনাথ স্মরণে থাকেন। ভক্ত নিজের ভক্তিতে মগ্ন হয়ে থাকে। তোমাদের আবার জ্ঞানে মগ্ন থাকা উচিত। কৃষ্ণের এমন ভক্তি হয়, যে বলার নয়। বৃন্দাবনে দুইজন কন্যা আছে, সম্পূর্ণ ভক্তিময়, তারা বলে আমরা এখানেই থাকবো। এখানেই দেহ ত্যাগ করবো কৃষ্ণের স্মরণে থেকে। তাদেরকে অনেকবার বলা হয়েছে ভালো বাড়িতে থাকো, জ্ঞান প্রাপ্ত করো, তারা বলে আমরা তো এখানেই থাকবো। অতএব তাদের বলা হবে ভক্ত শিরোমণি। কৃষ্ণের স্মরণে সমর্পিত হয়। এখন তোমাদের বাবার কাছে সমর্পিত হতে হবে। সর্বপ্রথমে শুরুতে শিববাবার কাছে অনেকে সমর্পিত হয়েছে। অনেকে এসেছে। ভারতে এসে অনেকের নিজের ঘর সংসার মনে পড়েছে। তখন অনেকেই ছেড়ে চলে গেছে। গ্রহণ তো অনেকেরই লাগে তাইনা। কখনো এমন দশা, কখনও অমন দশা হয়। বাবা বোঝান যখন কেউ আসে তখন জিজ্ঞাসা করো তোমরা কোথায় এসেছো? বাইরে বোর্ড দেখেছো - ব্রহ্মাকুমার-কুমারী। এরা তো হল পরিবার তাইনা। এক হলেন নিরাকার পরমপিতা পরমাত্মা। দ্বিতীয়তঃ প্রজাপিতা ব্রহ্মারও গায়ন রয়েছে । এরা সবাই হলো তাঁরই সন্তান, শিববাবা হলেন ঠাকুরদাদা। অবিনাশী উত্তরাধিকার তাঁর কাছ থেকেই প্রাপ্ত হয়। তিনি রায় দেন যে, আমাকে স্মরণ করো তো তোমরা পতিত থেকে পবিত্র হয়ে যাবে। কল্প পূর্বেও এমন পরামর্শ দিয়েছিলেন। কত উচ্চ মানের এই পড়াশোনা। এই কথাও তোমাদের বুদ্ধিতে আছে যে আমরা বাবার কাছে অবিনাশী উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি।

তোমরা বাচ্চারা মানুষ থেকে দেবতা হওয়ার পড়াশোনা করছো। তোমাদের অবশ্যই দৈবগুণ ধারণ করতে হবে। তোমাদের খাওয়াদাওয়া, চলন-বলন সবই রয়্যাল হওয়া উচিত। দেবতাদের আহার হয় খুবই অল্প। তাদের লোভ থাকে না। ৩৬ রকমের ভোজন তৈরি হয়, কিন্তু গ্রহণ করেন কম। খাদ্যের প্রতি লোভ থাকাও হল অসুরী চলন । দৈব গুণ ধারণ করতে হলে খাওয়াদাওয়া খুব শুদ্ধ এবং সাধারণ হওয়া উচিত। কিন্তু মায়া এমন যে একদম পাথর বুদ্ধি করে দেয় তখন পদ মর্যাদাও তেমনই প্রাপ্ত হবে। বাবা বলেন, নিজের কল্যাণের জন্য দৈবগুণ ধারণ করো। ভালো ভাবে পড়াশোনা করবে এবং পড়াবে তো তোমরা পুরস্কার প্রাপ্ত করবে। বাবা দেন না, তোমরা নিজের পুরুষার্থ অনুযায়ী প্রাপ্ত করো। নিজেকে দেখা উচিত আমরা কিরূপ সার্ভিস করি ? আমরা কি পদ পাবো? এইসময় দেহ ত্যাগ করলে কি প্রাপ্ত হবে? বাবাকে কেউ জিজ্ঞাসা করলে বাবা তৎক্ষণাৎ বলে দেবেন যে, এই কার্যকলাপ দেখে মনে হচ্ছে অমুক পদ প্রাপ্ত করবে। পুরুষার্থ করেই না তো কল্প-কল্পান্তরের জন্য নিজের ক্ষতি করে। ভালো সার্ভিস যারা করে তারা নিশ্চিত ভালো পদ প্রাপ্ত করবে। মনের ভিতরে এই জ্ঞান তো থাকে এরা গিয়ে দাস-দাসী হবে। বাইরে বলা যায় না। স্কুলেও স্টুডেন্ট বুঝতে পারে আমরা সিনিয়ার হবো নাকি জুনিয়ার? এখানেও সেইরকম। যারা সিনিয়ার হবে তারা রাজা-রানী হবে, জুনিয়ার রা কম পদ পাবে। ধনীদের মধ্যেও সিনিয়ার ও জুনিয়ার থাকবে। দাস-দাসীদের মধ্যেও সিনিয়ার ও জুনিয়ার থাকবে। সিনিয়ারদের উচ্চ মর্যাদা থাকে। যে দাসী ঝাঁট দেওয়ার সেবায় থাকবে তার কখনও মহলের ভিতরে আসার আজ্ঞা থাকে না। এই সব কথা তোমরা বাচ্চারা ভালো রীতি বুঝতে পারো। পরে আরও বুঝতে পারবে। উঁচু স্থান অর্জন করায় যে, তার রিগার্ডও রাখতে হবে। দেখো কুমারকা রয়েছেন, তিনি হলেন সিনিয়ার তাই ওনার রিগার্ড রাখা উচিত।

বাবা বাচ্চাদের মনোযোগ আকর্ষণ করান যে - মহারথী বাচ্চাদের প্রতি রিগার্ড রাখো। রিগার্ড না করলে নিজেই নিজের পাপের বোঝা বাড়তে থাকবে । এই সব কথা বাবা মনে করিয়ে দেন। খুব সতর্ক হতে হবে। নম্বর অনুযায়ী কার সম্মান কীভাবে রাখা উচিত, বাবা তো প্রত্যেককে জানেন, তাইনা। ট্রেটর হতে দেরি লাগে না। তারপরে কুমারী, মাতা ইত্যাদিদের উপরে বন্ধন এসে যায়। কষ্ট সহ্য করতে হয়। অনেক মাতারা লেখেন - বাবা আমাদের এরা অনেক কষ্ট দেয়, আমরা কি করি? আরে, তোমরা কি পশু নাকি যে তোমাদের উপরে জোর করবে। অন্তরে ইচ্ছা আছে তাই জিজ্ঞাসা করো যে কি করবো ! এতে জিজ্ঞাসা করার কোনও কথা নেই। আত্মা হলো নিজের মিত্র, নিজেরই শত্রু। যা চায় তাই করে। জিজ্ঞাসা করা মানে ইচ্ছে আছে। মুখ্য কথা হলো স্মরণের। স্মরণ দ্বারা-ই তোমরা পবিত্র হও। এই লক্ষ্মী-নারায়ণ হলেন নম্বরওয়ান পবিত্র তাইনা। মাম্মা অনেক সার্ভিস করতেন। এমন কেউ বলতে পারেনা যে আমি মাম্মার চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। মাম্মা জ্ঞানে সবচেয়ে বেশি তীক্ষ্ণ ছিলেন। যোগে দুর্বল অনেকেই। স্মরণে থাকতে পারে না। স্মরণে না থাকলে বিকর্ম বিনাশ হবে কীভাবে! নিয়ম বলে শেষ সময়ে স্মরণে থেকেই দেহ ত্যাগ করতে হবে। শিববাবার স্মরনেই যেন দেহ থেকে প্রাণ বের হয়। একমাত্র বাবা ছাড়া অন্য কেউ যেন স্মরণে না আসে। কোনো দিকে যেন আসক্তি না থাকে। এই প্র্যাক্টিস করতে হয়, আমরা অশরীরী এসেছিলাম তারপরে অশরীরী হয়ে ফিরতে হবে। বাচ্চাদের বার-বার বোঝানো হয়। খুব মিষ্টি হতে হবে। দৈবগুণও থাকা চাই। দেহ-অভিমানের ভূত থাকে তাইনা। নিজের উপরে খুব সতর্ক থাকতে হবে। ভালোবেসে ব্যবহার করতে হবে। বাবাকে এবং চক্রকে স্মরণ করো। চক্রের রহস্য কাউকে বোঝালে তার আশ্চর্য লাগবে। ৮৪ জন্মের কথাই মনে নেই তো ৮৪ লক্ষের কথা মনে থাকবে কীভাবে? বুদ্ধিতে আসবেই না, এই চক্রের কথা বুদ্ধিতে স্মরণ রাখো তাহলেও সৌভাগ্য। এখন এই নাটক শেষ হচ্ছে। পুরানো দুনিয়ার প্রতি বৈরাগ্য থাকা উচিত, বুদ্ধিযোগ যেন থাকে শান্তিধাম-সুখধামে। গীতায়ও আছে "মন্মনাভব" । কোনও গীতাপাঠী মন্মনাভবের অর্থ জানে না। তোমরা বাচ্চারা জানো - ভগবানুবাচ, দেহের সব সম্বন্ধ ত্যাগ করে নিজেকে আত্মা নিশ্চয় করো। কে বলেছে? কৃষ্ণ তো ভগবান নন। কেউ বলে আমরা তো শাস্ত্রে বিশ্বাস করি। ভগবান এলেও বিশ্বাস করবে না। নিয়ম অনুযায়ী শাস্ত্র পাঠ করতে থাকে। ভগবান এসেছেন রাজযোগ শেখাচ্ছেন, স্থাপনা হচ্ছে, এই শাস্ত্র ইত্যাদি সবই হল ভক্তিমার্গের। ভগবানে দৃঢ়নিশ্চয় থাকলে অবিনাশী উত্তরাধিকার নিতে ব্যস্ত হবে, তখন ভক্তি উড়ে যাবে। কিন্তু যখন নিশ্চয় হবে তখনই সম্ভব হবে তাইনা। আচ্ছা !

মিষ্টি মিষ্টি হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা পিতা, বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত । আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।

ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) দেবতা হওয়ার জন্য অত্যন্ত রয়্যাল সংস্কার ধারণ করতে হবে। খাওয়া-দাওয়া খুব শুদ্ধ এবং সাধারণ রাখতে হবে। লোভ করবে না। নিজের কল্যাণ করার জন্য দৈবী গুণ ধারণ করতে হবে।

২ ) নিজের খেয়াল রাখার পাশাপাশি সকলের সাথে ভালোবেসে চলতে হবে। নিজের থেকে যারা সিনিয়র, তাদের রিগার্ড অবশ্যই রাখতে হবে। খুব-খুব মিষ্টি হতে হবে। দেহ-অভিমানে আসবে না।

বরদান:-
অতীতের কোনও কথাকে দয়াবান হয়ে হৃদয়ে সমাহিত করে শুভ চিন্তক ভব

যদি কারো অতীতের কোনও দুর্লতার কথা কেউ শোনায় তো শুভ ভাবনার দ্বারা তার থেকে দূরে সরে যাও। ব্যর্থ চিন্তন বা দুর্বলতার কথা নিজেদের মধ্যে যেন না চলে। অতীতের কথাকে দয়াবান হয়ে নিজের মধ্যে সমাহিত করো। সমাহিত করে শুভ ভাবনার দ্বারা সেই আত্মার প্রতি মন্সা সেবা করতে থাকো। যদি কেউ সংস্কারের বশীভূত হয়ে উল্টোপাল্টা বলে, করে বা শোনে তাহলে তাকে পরিবর্তন করো। এক থেকে দুই, দুই থেকে তিন এইভাবে ব্যর্থ কথার মালা যেন না হয়ে যায়। এইরকম অ্যাটেনশন রাখবে অর্থাৎ শুভ চিন্তক হবে।

স্লোগান:-
সন্তুষ্টমণী হও তাহলে প্রভুপ্রিয়, লোকপ্রিয় আর স্বয়ংপ্রিয় হয়ে যাবে।

অব্যক্ত ঈশারা :- “কম্বাইন্ড রূপের স্মৃতির দ্বারা সদা বিজয়ী হও”

যেরকম শরীর আর আত্মার কম্বাইন্ড হল জীবন। যদি আত্মা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায় তাহলে জীবন সমাপ্ত হয়ে যাবে। এইরকম কর্মযোগী জীবন অর্থাৎ কর্ম যোগ বিনা নয়, যোগ কর্ম বিনা নয়। সদা কম্বাইন্ড থাকো তাহলে সফলতা প্রাপ্ত হতে থাকবে।