05.02.2025
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
এই শরীর রূপী বস্ত্রকে এখানেই ত্যাগ করতে হবে, সেইজন্য এর প্রতি আকর্ষণ মিটিয়ে ফেলো,
কোনও আত্মীয় পরিজন যেন স্মরণে না আসে"
প্রশ্নঃ -
যে বাচ্চাদের
যোগবল আছে, তাদের লক্ষণ কেমন হবে?
উত্তরঃ
কোনো
ব্যাপারেই সামান্যতম ধাক্কাও তাদের কাছে আসবে না, কোথাও তাদের অ্যাটাচমেন্ট থাকবে
না । মনে করো আজ কেউ শরীর ত্যাগ করেছে তার জন্য দুঃখ হবে না, কেননা সে জানে যে
ড্রামাতে তার এতটুকুই পার্ট ছিল, আত্মা এক শরীর ত্যাগ করে অন্য শরীর ধারণ করবে ।
ওম্ শান্তি ।
এই জ্ঞান বড়ই
গুপ্ত, এতে নমস্কারও করতে হয় না । লৌকিক দুনিয়াতে নমস্কার অথবা রাম-রাম ইত্যাদি বলে
থাকে । এখানে এসব কথা চলে না। কেননা এটা হলো একটা ফ্যামিলি । ফ্যামিলিতে একে অপরকে
নমস্কার বা গুডমর্নিং করবে এটা শোভা পায় না । ঘরে তো খাওয়া-দাওয়া করলো, অফিসে গেলো,
তারপর ফিরে এলো, এটাই চলতে থাকে, এর মধ্যে নমস্কার করার প্রয়োজন পড়ে না । গুডমর্নিং
করার ফ্যাশন ইউরোপিয়ানদের কাছ থেকে এসেছে । নয়তো এর আগে এসব ছিল না । কোনও সৎসঙ্গে
মিলিত হলে একে অপরের সাথে নমস্কার বিনিময় করে, পা ছোঁয় । মাথা নত করে পা ছোঁয়ার এই
রীতি নম্রতার জন্য শেখানো হয় । এখানে তো বাচ্চারা, তোমাদের দেহী-অভিমানী হতে হবে ।
আত্মা, আত্মাকে কি করবে? তবুও বলতে হয় । যেমন বাবাকে বলবে - বাবা নমস্কার । তখন
বাবাও বলেন - আমি সাধারণ ব্রহ্মা শরীর দ্বারা তোমাদের পড়াই, এনার দ্বারা স্থাপনা
করাই । কিভাবে? যখন বাবা সামনে আসেন তখন বোঝান, নয়তো সবাই বুঝবে কিভাবে । বাবা সামনে
বসে বোঝান তবেই বাচ্চারা বোঝে । দুজনকেই নমস্কার করে বলে - বাপদাদা নমস্কার ।
বাইরের কেউ শুনলে অবাক হবে যে কি বলছে "বাপদাদা"। ডবল নাম তো অনেক মানুষের হয়, তাইনা
। যেমন লক্ষী-নারায়ণ অথবা রাধা-কৃষ্ণ.... যদিও এরা স্ত্রী পুরুষ একত্রিত । আর এখানে
একজন বাপদাদা । এই বিষয় বাচ্চারা তোমরাই বুঝবে । বাবা অবশ্যই বড়ই হবেন । ঐ নাম যদিও
ডবল কিন্তু একজনই তাই না ! তাহলে দুটো নাম কেন রাখা হয়েছে? তোমরা জানো এটা হলো রং
নাম । কেউ বাবাকে চিনতে পারে না । তোমরা বলো নমস্কার বাপদাদা । বাবাও তারপর বলেন
নমস্কার শরীরধারী আত্মিক বাচ্চারা । এতো লম্বা (সম্ভাষণ) শোভা পায় না। কিন্তু শব্দ
তো রাইটই আছে । তোমরা এখন শরীরধারী আবার আত্মিকও। শিববাবা সব আত্মাদের পিতা আবার
অবশ্যই প্রজাপিতাও । প্রজাপিতা ব্রহ্মার সন্তানরা ভাইবোন । এ হলো প্রবৃত্তি মার্গ ।
তোমরা সবাই ব্রহ্মাকুমার - ব্রহ্মাকুমারী । ব্রহ্মাকুমার কুমারী হলে প্রজাপিতাও
প্রমাণ হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্ধ শ্রদ্ধার কোনও প্রশ্নই নেই । তোমরা বলো ব্রহ্মাকুমার
-ব্রহ্মাকুমারীরা বাবার কাছ থেকে উত্তরাধিকার পেয়ে থাকে । ব্রহ্মার কাছ থেকে
প্রাপ্ত করে না, ব্রহ্মাও শিববাবার সন্তান । সূক্ষ্ম বতন নিবাসী ব্রহ্মা, বিষ্ণু,
শঙ্কর এরা হলো রচনা । এদের রচয়িতা শিব । শিবের জন্য একথা বলতে পারবে না যে, এনার
রচয়িতা কে? শিবের রচয়িতা কেউ হয় না । ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শঙ্কর শিববাবার রচনা । সবার
উপরে শিব, সব আত্মাদের পিতা । এখন প্রশ্ন উঠবে ক্রিয়েটর যখন তাহলে কবে ক্রিয়েট
করেছেন? এ হলো অনাদি । এতো এতো আত্মাদের কবে ক্রিয়েট করেছেন এ প্রশ্ন উঠতে পারে না
। এই অনাদি ড্রামা এভাবেই চলে আসছে । যার কোনো শেষ নেই । এ বিষয়েও তোমরা বাচ্চারা
নম্বরানুসারে বুঝে থাকো । বিষয় অতি সহজ । এক বাবা ছাড়া দ্বিতীয় আর কারও সাথে যেন
অ্যাটাচমেন্ট না থাকে, কেউ মরে বা বাঁচে । গাওয়াও হয়ে থাকে - মায়ের মৃত্যু হলেও
হালুয়া খেও (আম্মা মরে তো ভী হলুআ খানা) .....কেউ মারা গেলে চিন্তার কিছু নেই কেননা
এই ড্রামা অনাদি । ড্রামানুসারে তাকে এই সময় যেতেই হবে, এখানে কিই-বা করার আছে ।
এতটুকুও দুঃখি হওয়ার কিছু নেই । এটাই হলো যোগবলের শক্তি । নিয়ম বলছে সামান্যতম
ধাক্কাও তোমাদের আসা উচিত নয় । সবাই হহো অ্যাক্টর্স তাইনা । নিজের নিজের পার্ট প্লে
করে চলেছে । বাচ্চারা তোমরা জ্ঞান প্রাপ্ত করেছো।
বাবাকে আহ্বান করে বলে
- হে পরমপিতা পরমাত্মা তুমি এসে আমাদের নিয়ে যাও। এতো সব শরীরের বিনাশ ঘটিয়ে সব
আত্মাদের সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়া, এ তো অনেক বড় কাজ। এখানে কেউ মারা গেলে ১২ মাস
কাঁদতে থাকে । বাবা তো সঙ্গে করে এতো অসংখ্য আত্মাদের নিয়ে যাবেন । সবাই এখানে শরীর
ত্যাগ করবে । বাচ্চারা জানে মহাভারতের লড়াই শুরু হলে মশার মতো আত্মারা যেতে থাকবে ।
ন্যাচারাল ক্যালামিটিজও হতে থাকবে। সম্পূর্ণ দুনিয়াকে বদলে দেবে । এখন দেখো
ইংল্যান্ড, রাশিয়া ইত্যাদি কত বড় বড় দেশ রয়েছে । সত্যযুগে কি এসব ছিল? দুনিয়াতে এটা
কারও বুদ্ধিতে আসেনা যে আমাদের রাজ্যে এরা কেউ ছিল না । একটাই ধর্ম, একটাই রাজ্য
ছিল । তোমাদের মধ্যেও নম্বরানুসারে বুদ্ধিতে সঠিকভাবে ঢুকবে । যদি সঠিক ধারণা হয়ে
তবে সেই ঈশ্বরীয় নেশা সবসময় উচ্চ থাকবে । অতি কষ্টেই কেউ কেউ এই নেশা বজায় রাখে।
আত্মীয় পরিজন ইত্যাদি সবদিক থেকে মনকে সরিয়ে এনে এক অপার খুশিতে স্থিত হয়ে যাওয়া,
অতি চমৎকারিত্ব এতে । তবে হ্যাঁ, এটাও অন্তিমে গিয়ে হবে । শেষে গিয়েই কর্মাতীত
অবস্থা প্রাপ্ত হবে । শরীর থেকেও দেহভান ছিন্ন হয়ে যাবে । ব্যস্ আমি এখন চললাম,
এটাই যেন কমন বিষয় হয়ে যাবে । যেমন নাটকের কুশীলবরা পার্ট শেষ করে ঘরে ফিরে যায় ।
এই দেহরূপী বস্ত্র তো তোমাদের এখানেই ত্যাগ করতে হবে । এই বস্ত্র এখানেই ধারণ করতে
হয়, এখানেই ছেড়ে যেতে হয়। এসব নতুন বিষয় তোমাদের বুদ্ধিতে আছে আর কারও বুদ্ধিতে নেই
। অল্ফ আর বে। অল্ফ সবচেয়ে উপরে । বলাও হয়ে থাকে ব্রহ্মা দ্বারা স্থাপনা, শঙ্কর
দ্বারা বিনাশ, বিষ্ণু দ্বারা পালনা। আচ্ছা, শিবের কাজ তবে কি ? উচ্চ থেকে উচ্চতর
শিববাবাকে কেউ জানেনা । বলে দেয় উনি সর্বব্যাপী । সবকিছুই ওনার রূপ । সম্পূর্ণ
দুনিয়ার বুদ্ধিতে এটাই দৃঢ়তর হয়ে গেছে, সেইজন্যই সব তমোপ্রধান হয়ে গেছে । বাবা বলেন
- সম্পূর্ণ দুনিয়া দুর্গতি প্রাপ্ত, আমিই এসে সবাইকে সদ্গতি প্রদান করি। যদি
সর্বব্যাপী হই তবে কি সবাই ভগবান? একদিকে বলে সবাই ভাই, তারপর বলে সবাই ফাদার্স,
কিছুই বোঝেনা । এখন বাচ্চারা, অসীম জগতের পিতা তোমাদের বলছেন আমাকে স্মরণ করলে
তোমাদের বিকর্ম বিনাশ হবে । তোমাদের এই দাদাকে বা মাম্মাকেও স্মরণ করার প্রয়োজন নেই
।
বাবা বলেন, না মাম্মা
, না বাবা (ব্রহ্মা) কারো মহিমা কিছুই নয় । শিববাবা না থাকলে ব্রহ্মা কি করত?
ব্রহ্মাকে স্মরণ করে কি হবে? তবে হ্যাঁ, তোমরা জানো যে ব্রহ্মা দ্বারাই আমরা
শিববাবার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করছি, এনার দ্বারা নয়। ইনিও শিববাবার কাছ থেকেই
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করেন, সুতরাং স্মরণ শিববাবাকেই করতে হবে । ইনি তো মাঝখানে
দালাল। একটি ছেলে আর মেয়ের যখন আশীর্বাদ হয় তখন তো একে অপরকে স্মরণ করবেই তাইনা ।
বিবাহ করান যিনি তিনি তো এদের মাঝখানে দালাল । ব্রহ্মা দ্বারা বাবা এনগেজমেন্ট
নিজের সাথে তোমরা আত্মাদের করিয়ে থাকেন সেইজন্য মহিমাও হয়ে থাকে দালালের মাধ্যমে
সদ্গুরু প্রাপ্ত হয়েছে । সদ্গুরু কোনও দালাল নন । সদ্গুরু তো নিরাকার । যদিও গুরু
ব্রহ্মা, গুরু বিষ্ণু বলে থাকে কিন্তু ওনারা কোনও গুরু নন । সদ্গুরু এক বাবাই যিনি
সবাইকে সদ্গতি প্রদান করেন। বাবা তোমাদের শিখিয়েছেন তবেই তোমরা অন্যদেরও রাস্তা বলে
দাও আর বলো যে কোনও কিছু দেখেও দেখো না । বুদ্ধি যেন এক শিববাবার প্রতিই থাকে । এই
চোখ দিয়ে যা কিছু দেখছ সব কবরস্থ হবে । স্মরণ এক শিববাবাকেই করতে হবে, নাকি ব্রহ্মা
বাবাকে। বুদ্ধি বলে ব্রহ্মার কাছ থেকেও কিছু উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে । উত্তরাধিকার
তো বাবার কাছ থেকেই প্রাপ্ত হবে, যেতেও হবে বাবার কাছে। স্টুডেন্ট, স্টুডেন্টকে কেন
স্মরণ করবে । স্টুডেন্ট তো টিচারকে স্মরণ করবে তাইনা । স্কুলে যারা বিচক্ষণ বাচ্চা
হয় তারা অন্যদেরও উন্নতি করতে চেষ্টা করে । বাবাও বলে থাকেন এক-দুজনকে উত্তোরণের পথে
এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করো কিন্তু ভাগ্যে নেই, সেইজন্যই পুরুষার্থও করে না।
অল্পতেই সন্তুষ্ট হয়ে যায় । তাদের বোঝান উচিত প্রদর্শনীতে অনেক আত্মারা আসে, অনেককে
বোঝালে প্রভূত উন্নতি হয় । নিমন্ত্রণ করেও নিয়ে আসা হয়। অনেক বড়ো বড়ো বিচক্ষণ
ব্যক্তিরা আসেন। বিনা নিমন্ত্রণেও কিছু মানুষ চলে আসে। কত কি অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা
বলতে থাকে। রয়্যাল মানুষদের চাল-চলনও রয়্যাল হয়। রয়্যাল মানুষ রয়্যালটির সাথেই ভিতরে
প্রবেশ করবে।তাদের আচরণের মধ্যেও বিস্তর পার্থক্য থাকে । তাদের চলা এবং বলার মধ্যে
কোনো পার্থক্য থাকে না । মেলায় সব রকমের মানুষ আসে, কাউকে নিষেধ করা যায় না সেইজন্য
যে কোনো প্রদর্শনীতে নিমন্ত্রণ কার্ড দিয়ে আমন্ত্রণ জানালে রয়্যাল এবং ভালো ভালো
মানুষ আসবে । তারপর তারা অন্যদেরও শোনাবে । কোথাও কোথাও মহিলাদের জন্য প্রোগ্রাম
রাখলে শুধুমাত্র মহিলারাই এসে দেখবে কেননা অনেক মহিলাই পর্দার আড়ালে থাকে। সুতরাং
শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য প্রোগ্রাম করা উচিত । কোনও পুরুষ যেন না আসে। বাবা
বুঝিয়েছেন সর্বপ্রথম তোমাদের এটাই বোঝাতে হবে যে শিববাবা নিরাকার । শিববাবা আর
প্রজাপিতা ব্রহ্মা দুজনেই বাবা । কিন্তু দুজনেই তো একরকম হতে পারেন না ,যে দুই
বাবার কাছ থেকেই উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হবে । উত্তরাধিকার দাদা অথবা বাবার কাছ থেকে
প্রাপ্ত হবে । দাদার সম্পত্তির প্রতি সবার অধিকার থাকে । যেমনই সন্তান হোক কুপুত্র
হলেও দাদার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়ে যাবে । এসব রীতি এখানকার জন্য । বোঝাও যায়
কুপুত্রের হাতে টাকাপয়সা পড়লে এক বছরের মধ্যেই সব উড়িয়ে শেষ করে দেবে। কিন্তু
গভর্নমেন্টের নিয়ম এমনই যে দিতেই হবে । গভর্নমেন্ট কিছুই করতে পারেনা। বাবা তো
অনুভাবী (ব্রহ্মা) । এক রাজার সন্তান এক কোটি টাকা ১২ মাসের মধ্যে শেষ করে দিয়েছিল।
এমনটাও হয়। শিববাবা তো বলবেন না যে আমি এমনটা হতে দেখেছি। এই দাদা (ব্রহ্মা) বলেন
আমি এমন বহু দৃষ্টান্ত দেখেছি। এই দুনিয়া বড় দুর্গন্ধময় । এ হলো পুরানো দুনিয়া,
পুরানো ঘর। পুরানো ঘরকে সবসময় ভেঙে ফেলতে হয় । এই লক্ষী-নারায়ণের বাদশাহী ঘর দেখো
কতো চমৎকার ।
এখন তোমরা বাপদাদার
দ্বারা বুঝতে পারছো এবং তোমরাই নর থেকে নারায়ণ হয়ে ওঠো । এই হলো সত্যনারায়ণের কথা।
তোমরা বাচ্চারা এটা বুঝেছো। তোমরাই এখন সম্পূর্ণ ফুল তৈরী হচ্ছ, এতে ভীষণ সত্যতা
থাকা উচিত । তোমরা দিন দিন উন্নতি প্রাপ্ত করে চলেছো। ফ্লাওয়ার্স হয়ে উঠতে থাকো ।
বাচ্চারা তোমরা
ভালোবেসে বলে থাকো যে "বাপদাদা", এটাও তোমাদের নতুন ভাষা, যা মানুষের বুদ্ধিতে আসতে
পারে না । বাবা যেখানেই থাকুন না কেন বাচ্চারা বলবে বাপদাদা নমস্কার । বাবাও
রেসপন্স দেবেন রূহানী শরীরধারী বাচ্চাদের নমস্কার । কেউ শুনলে বলবে এতো নতুন কথা,
বাপদাদা একসাথে কিভাবে বলবেন । বাবা আর দাদা দুজন কখনও এক হয় নাকি? নামও দুজনের
আলাদা । শিববাবা, ব্রহ্মা বাবা, তোমরা এই দুজনেরই সন্তান । তোমরা জানো এনার ভিতরে (ব্রহ্মা
বাবা) শিববাবা বসে আছেন। আমরা বাপদাদার সন্তান ।এটাও বুদ্ধিতে স্মরণ থাকলে খুশির
পারদ ঊধ্বর্গামী থাকবে । ড্রামার প্রতিও দৃঢ় বিশ্বাস রাখা উচিত । মনে করো কেউ শরীর
ত্যাগ করেছে, এরপর অন্য শরীর ধারণ করে দ্বিতীয় কোনও পার্ট প্লে করবে। প্রত্যেক আত্মা
অবিনাশী পার্ট পেয়েছে, এর মধ্যে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই । তাকে দ্বিতীয় কোনও পার্ট
প্লে করতেই হবে । তাকে তো আর ডেকে ফিরিয়ে আনা যাবে না । ড্রামা তাইনা । এতে
কান্নাকাটি করার কোনো ব্যাপার নেই । এমনই অবস্থা যারা প্রাপ্ত করতে পারে তারাই
নির্মোহী রাজা হয়। সত্যযুগে সবাই নির্মোহী (মোহহীন) হয়। এখানে কেউ মারা গেলে কত
কান্নাকাটি করে । বাবাকে পেয়েছি যখন আর তো কান্নাকাটি করার প্রয়োজন নেই । বাবা কত
সুন্দর পথ বলে দিয়েছেন । কন্যাদের জন্য তো খুব ভালো । তোমাদের লৌকিক পিতা অযথা কত
পয়সা খরচ করে আর তোমরা গিয়ে নরকে পড়ো। বরং বলো যে আমি এই পয়সা দিয়ে রূহানী
ইউনিভার্সিটি বা হসপিটাল খুলবো । অনেকের কল্যাণ করলে তোমাদেরও পুণ্য, আমারও পুণ্য
হবে । বাচ্চারা নিজেরাই উৎফুল্ল থাকে এই ভেবে যে আমরা ভারতকে স্বর্গ বানাবার জন্য
তন-মন-ধন সব উৎসর্গ করব ।এমনই ঈশ্বরীয় নেশা থাকা উচিত। দিতে হলে দাও, না দিতে হলে
দিও না। তোমরা নিজেদের কল্যাণ আর অনেকের কল্যাণ করতে চাও না? এতোটাই খুশি থাকা উচিত
। বিশেষ করে কুমারীদের তো এগিয়ে আসা উচিত । আচ্ছা !
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ )
নিজের আচার আচরণে রয়্যালটি থাকা উচিত । সুন্দর আচরণের সাথে কথা বলা উচিত। নম্রতার
গুণ ধারণ করতে হবে ।
২ ) এই চোখ দিয়ে যা
কিছু দেখছো সব কবরস্থ হবে, সেইজন্য সবকিছু দেখেও না দেখার ভান করে থাকা উচিত । এক
শিববাবাকেই স্মরণ করতে হবে । কোনও দেহধারীকে নয়।
বরদান:-
মাস্টার জ্ঞান সাগর হয়ে পুতুল খেলা সমাপ্ত করে স্মৃতি তথা সমর্থ স্বরূপ ভব
যেরকম ভক্তি মার্গে
মূর্তি বানিয়ে পূজা ইত্যাদি করে, তারপর সেই মূর্তিকে জলে ডুবিয়ে দেয় তো এটাকে তোমরা
পুতুল পূজা বলে থাকো। এইরকম তোমাদের সামনেও যখন কোনও নির্জীব, অসার কথা - ঈর্ষা,
অনুমান, আবেশ ইত্যাদি আসে আর তোমরা তার বিস্তার করে অনুভব করো বা করাও যে এটাই হল
সত্য, তো এর দ্বারা তোমরা তার মধ্যে প্রাণ ভরে দাও। তারপর তাকে জ্ঞান সাগর বাবার
স্মরণের দ্বারা, অতীতকে বিন্দু লাগিয়ে স্ব-উন্নতির ঢেউ-এ ডুবিয়েও থাকো, কিন্তু এতে
টাইম তো ওয়েস্ট হয়ে যায় তাই না, এইজন্য প্রথম থেকেই মাস্টার জ্ঞান সাগর হয়ে স্মৃতি
তথা সমর্থী ভব-র বরদানের দ্বারা এই পুতুলের খেলাকে সমাপ্ত করো।
স্লোগান:-
যে
সঠিক সময়ে সহযোগী হয় তার একের পদমগুণ ফল প্রাপ্ত হয়।
অব্যক্ত ঈশারা :-
একান্তপ্রিয় হও, একতা আর একাগ্রতাকে ধারণ করো
যে সমস্ত রাজনেতারা
বা ধর্মনেতারা আছে, তাদেরকে “পবিত্রতা আর একতার” অনুভব করাও। এটারই কম থাকার কারণে
দুটি সত্তা দুর্বল হয়ে গেছে। ধর্মসত্তাকে ধর্মসত্তাহীন বানানোর বিশেষ পদ্ধতি হল -
পবিত্রতাকে সিদ্ধ করা আর রাজ্যসত্তার সামনে একতাকে সিদ্ধ করা।