20.12.2024
প্রাত: মুরলী ওম শান্তি "বাপদাদা" মধুবন
"মিষ্টি বাচ্চারা -
স্মরণে থাকার অভ্যাস করো, তাহলে সর্বদা উৎফুল্ল, উদ্ভাসিত থাকবে, বাবার সাহায্য
প্রাপ্ত হবে, কখনো মুষড়ে পড়বে না"
প্রশ্নঃ -
বাচ্চারা,
তোমাদের এই গডলী স্টুডেন্ট লাইফ কোন্ নেশাতে অতিবাহিত করতে হবে?
উত্তরঃ
সর্বদা এই নেশা
যেন থাকে যে, আমরা এই পড়াশোনার ফল স্বরূপ প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো। এই লাইফ হেসে-খেলে,
জ্ঞানের ড্যান্স করে অতিবাহিত করতে হবে। সর্বদা উত্তরাধিকারী হয়ে ফুল হওয়ার
পুরুষার্থ করতে থাকো। এটা হলো প্রিন্স-প্রিন্সেস তৈরী হওয়ার কলেজ। এখানে পড়তে হবে
আবার পড়াতেও হবে, প্রজাও তৈরী করতে হবে। তবে রাজা হতে পারবে। বাবা তো পড়াশুনা
করান, ওঁনার পড়ার আবশ্যকতা নেই।
গীতঃ-
শৈশবের দিন
ভুলে যেও না (বচপন কে দিন ভুলা না দেনা/আজ হাসে কাল রুলা না দে না..)
ওম্ শান্তি ।
এই গীত হলো
বিশেষ ভাবে বাচ্চাদের জন্য। যদিও গানটি হলো ফিল্মের, কিন্তু কিছু গান হলো তোমাদের
জন্য। যারা সুযোগ্য (সপুত) বাচ্চা, তাদের গান শোনার সময় তার অর্থ নিজের মনের মধ্যে
নিয়ে আসতে হয়। এর কারণ তোমরা আমার আদরের বাচ্চা হয়েছো। বাচ্চা হয়েছো যখন বাবার
উত্তরাধিকারও স্মরণেই থাকবে। বাচ্চাই হওনি তো স্মরণ করার পরিশ্রম করতে হবে।
বাচ্চাদের স্মরণে থাকে আমরা ভবিষ্যতে বাবার উত্তরাধিকার প্রাপ্ত করবৈ। এটা হলোই
রাজযোগ, প্রজা যোগ নয়। আমরা ভবিষ্যতে প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো। আমরা ওনার বাচ্চা,
এছাড়া যে কোন মিত্র-সম্বন্ধীয় ইত্যাদি তাদের সকলকে ভোলাতে হয়। এক ব্যাতীত দ্বিতীয়
কেউ স্মরণে আসে না। দেহও স্মরণে আসবে না। দেহ-অভিমানকে ভেঙে দেহী-অভিমানী হতে হবে।
দেহ- অভিমানে থাকলেই অনেক রকম সংকল্প-বিকল্প (উল্টো মত) উল্টে ফেলে দেয়। স্মরণ করার
প্র্যাক্টিস করতে থাকলে তো সর্বক্ষণ উৎফুল্ল প্রস্ফুটিত ফুল হয়ে থাকবে। স্মরণ করতে
ভুলে গেলে ফুল ম্লান হয়ে যায়। বাচ্চারা সাহসী হলে বাবা সাহায্যকারী হন। বাচ্চাই না
হও তবে বাবা কোন ব্যাপারে সাহায্য করবেন? কারণ তাদের মা-বাবা আবার রাবণ মায়া,
সেইজন্য তাদের নীচে নেমে যাওয়ার সাহায্য প্রাপ্ত হবে। তাই এই সম্পূর্ণ গান তোমাদের
অর্থাৎ বাচ্চাদের উপর তৈরী হয়েছে- শৈশবের দিনগুলি ভুলে যেও না....। বাবাকে স্মরণ
করতে হবে, স্মরণ না করলে আজ যারা হাসছে কাল আবার কাঁদতে থাকবে। স্মরণ করলে সর্বক্ষণ
আনন্দ মুখর থাকবে। বাচ্চারা, তোমরা জানো এক গীতা শাস্ত্র আছে, যেখানে কিছু- কিছু
শব্দ সঠিক আছে। লেখা আছে যে যুদ্ধের ময়দানে মরলে তবে স্বর্গে যাবে। কিন্তু এতে
হিংসক যুদ্ধের তো কোনো ব্যাপারই নেই। বাচ্চারা, তোমাদের বাবার থেকে শক্তি নিয়ে
মায়ার উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে। তাই অবশ্যই বাবাকে স্মরণ করতে হবে, তবেই তোমরা
স্বর্গের মালিক হবে। তারা আবার বসে স্থূল হাতিয়ার ইত্যাদি দেখিয়েছে। জ্ঞান কাটারী,
জ্ঞান বাণ শব্দ শুনে তো স্থূল রূপে হাতিয়ার দিয়ে দিয়েছে। বাস্তবে হলো এটা
জ্ঞানের কথা। এছাড়া এতো হাত ইত্যাদি তো কারোর হয় না। তো এটা হলো যুদ্ধের ময়দান।
যোগে থেকে শক্তি নিয়ে বিকার গুলির উপর বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে। বাবাকে স্মরণ করার ফলে
উত্তরাধিকার স্মরণে আসবে। উত্তরাধিকারীই উত্তরাধিকার নেয়। উত্তরাধিকারী না হলে
আবার প্রজা হয়ে যেতে হয়। এটা হলোই রাজযোগ, প্রজা যোগ নয়। এই বোঝানো বাবা ব্যতীত আর
কারোর পক্ষে সম্ভব নয়।
বাবা বলেন, আমাকে এই
সাধারণ দেহের (ব্রহ্মা বাবার) আধার নিয়ে আসতে হয়। প্রকৃতির আধার নেওয়া ব্যতীত
বাচ্চারা তোমাদেরকে কীভাবে রাজযোগ শেখাবো? আত্মা শরীরকে ছেড়ে দিলে তখন কোনো
বার্তালাপ হতে পারে না। আবার যখন শরীর ধারণ করবে, বাচ্চা একটু বড় হলে তখন বেরিয়ে
আসে আর বুদ্ধি খোলে। ছোটো বাচ্চারা তো পবিত্রই হয়, ওদের মধ্যে বিকার থাকে না।
সন্ন্যাসীরা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে আবার নীচে নামতে থাকে। নিজের জীবনকে বুঝতে পারে।
বাচ্চারা তো হয়ই পবিত্র, সেইজন্যই বাচ্চা আর মহাত্মা এক সমান মহিমা করা হয়। তো
বাচ্চারা, তোমরা জানো এই শরীর ছেড়ে আমরা প্রিন্স-প্রিন্সেজ হবো। পূর্বেও আমরা
হয়েছিলাম, এখন আবার হবো। এরকম সব ধারণা স্টুডেন্টদের থাকে। এটাও তাদের বুদ্ধিতে আসে,
যারা বাচ্চা হবে আর তার উপর বিশ্বস্ত,আজ্ঞাকারী হয়ে শ্রীমতে চলবে। না হলে শ্রেষ্ঠ
পদ প্রাপ্ত হতে পারে না। টিচার তো পড়া করেই রেখেছে। এমন নয় যে উনি পড়াশুনা করে
তারপর পড়ান। না, টিচার তো পড়াশুনা করেই রয়েছেন। ওনাকে নলেজফুল বলা হয়। সৃষ্টির
আদি-মধ্য-অন্তর নলেজ আর কেউ জানে না। প্রথমে তো বিশ্বাস থাকা দরকার উনি হলেন বাবা।
যদি কারোর ভাগ্যে না থাকে তো আবার মনের মধ্যে খিট্-পিট্ চলতে থাকে। জানা নেই চলতে
পারবে। বাবা বুঝিয়েছেন যখন তোমরা বাবার কোলে আসবে তো এই বিকারের অসুখ আরোই প্রকট
ভাবে বেরিয়ে আসবে। বৈদ্যরাও বলে - অসুখ বাড়বে। বাবাও বলেন তোমরা বাচ্চা হবে তো
দেহ-অভিমানের আর কাম-ক্রোধ ইত্যাদির অসুখ বাড়বে। না হলে পরীক্ষা হবে কীভাবে ?
তোমাদের কোনো বিভ্রান্তি থাকলে আমাকে জিজ্ঞাসা করো। যখন তোমরা শক্তিশালী হয়ে ওঠো
তখন মায়া খুব আছাড় দেয়। তোমরা বক্সিং করতে থাকো। বাচ্চা না হলে তো বক্সিংয়ের কোনো
ব্যাপারই নেই। সে তো নিজের সংকল্প-বিকল্পতে গোঁতা খায়, কোনো সাহায্যই পায় না। বাবা
বোঝান - মাম্মা, বাবা বললে তো বাবার বাচ্চা হতে হয়, আবার সেই হৃদয়ে সুনিশ্চিত হয়ে
যায় যে ইনি আমাদের আত্মাদের পিতা। এছাড়া এটা হলো যুদ্ধের ময়দান, এতে ভয় পেতে নেই
যে ঝড়ে যে দাঁড়াতে পারবো কি পারবো না? একে দুর্বলতা বলা হয়। এক্ষেত্রে বাঘ হতে হয়।
পুরুষার্থের জন্য ভালো মত নিতে হয়। বাবাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে। অনেক বাচ্চা নিজের
অবস্থা লিখে পাঠায়। বাবাকেই সার্টিফিকেট দিতে হয়। যদিওবা এনার (ব্রহ্মাবাবা) থেকে
লুকাও, শিববাবার থেকে তো লুকানো যায় না। অনেক আছে যারা লুকায়, কিন্তু ওঁনার থেকে
কিছুই লুকোতে পারা যায় না। ভালোর ফল ভালো, আর খারাপের ফল খারাপ হয়। সত্যযুগ-ত্রেতাতে
তো সব ভালো আর ভালো হয়। ভালো-খারাপ, পাপ-পূণ্য এখানে হয়। ওখানে দান-পূণ্যও করা যায়
না। হলোই প্রলব্ধ। এখানে আমরা টোটাল স্যারেন্ডার হলে, তবে বাবা ২১ জন্মের জন্য দিয়ে
দেন। ফলো ফাদার করতে হবে। যদি উল্টো কাজ করো তো বাবার নামও বদনাম করবে, সেইজন্য
শিক্ষাও দিতে হয়। রূপ-বসন্তও সকলকে হতে হবে। আমাদের আত্মাদের বাবা পড়িয়েছেন আবার
অন্যদের প্রতি তা বর্ষণও তো করতে হবে। সত্য ব্রাহ্মণদের সত্য গীতা শোনাতে হবে। অন্য
কোনো শাস্ত্রের কথা নেই। মুখ্য হলো গীতা। বাকী সব এর ছোট বাচ্চা। ওর থেকে কারোর
কল্যাণ হয় না। আমাকে কেউ পায় না। আমিই এসে আবার সহজ জ্ঞান, সহজ যোগ শেখাই। সকল
শাস্ত্রের মধ্যে শিরোমণি হলো গীতা, সেই সত্য গীতার দ্বারা উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়।
কৃষ্ণেরও গীতার দ্বারা উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়েছে, গীতারও যিনি বাবা, অর্থাৎ রচয়িতা,
তিনিই উত্তরাধিকার দেন। এছাড়া গীতা শাস্ত্র থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় না। রচয়িতা
হলেন এক, এছাড়া হলো ওনার রচনা। নম্বর ওয়ান শাস্ত্র হলো গীতা। তো পরে যেসব শাস্ত্র
তৈরী হয় তার থেকে উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হতে পারে না। উত্তরাধিকার প্রাপ্তই হয় সামনে।
মুক্তির উত্তরাধিকার তো সকলের প্রাপ্ত হয় না, সকলকে ফিরে যেতে হবে। এছাড়া স্বর্গের
উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয় অধ্যয়ণের দ্বারা। আবার যে যতো অধ্যয়ণ করবে। বাবা সামনে বসে
পড়ান। যতক্ষণ না বিশ্বাস হবে যে কে পড়াচ্ছেন তো বুঝতে কি পারবে? প্রাপ্তি কি করতে
পারে? তবুও বাবার থেকে শুনতে থাকলে তো জ্ঞানের বিনাশ হয় না। যত সুখ প্রাপ্ত হয় আবার
অন্যদেরও সুখ দেবে। প্রজা তৈরী করলে তো আবার নিজে রাজা হয়ে যাবে।
আমাদের হলো স্টুডেন্ট
লাইফ। হেসে-খেলে, জ্ঞানের ড্যান্স করে আমরা গিয়ে প্রিন্স হবো। স্টুডেন্ট জানে, আমাকে
প্রিন্স হতে গেলে খুশীর পারদ চড়বে। এটা তো প্রিন্স-প্রিন্সেসের কলেজ। সেখানে (সত্যযুগে)
প্রিন্স-প্রিন্সেসের আলাদা কলেজ হয়। বিমানে চড়ে যায়। বিমানও সেখানকার ফুল প্রুফ হয়,
কখনো ভাঙতে পারে না কোনো ভাবেই, কখনো অ্যাক্সিডেন্ট হয়ই না। এই সব হলো বোঝার
ব্যাপার। এক তো বাবার সাথে সম্পূর্ণ বুদ্ধিযোগ রাখতে হয়, দ্বিতীয়তঃ বাবাকে সমস্ত
সংবাদ দিতে হয়, কারা-কারা কাঁটা থেকে কুঁড়ি হয়েছে? বাবার সাথে সম্পূর্ণ কানেক্শন
রাখতে হয়, যা আবার টিচারও ডায়রেক্শন দিতে থাকে। কারা উত্তরাধিকারী হয়ে ফুল হওয়ার
পুরুষার্থ করে? কাঁটা থেকে কুঁড়ি তো হয়, আবার ফুল তখন হয় যখন বাচ্চায় পরিণত হয়। না
হলে কুঁড়ি তো কুঁড়ি থাকবে অর্থাৎ প্রজাতে এসে যাবে। এখন যে যেমন পুরুষার্থ করবে,
ঐরকম পদ প্রাপ্ত করবে। এমন না, একজন দৌড়ালে আমরা তাকে পিছনে টেনে ধরবো। ভারতবাসী
এরকম মনে করে। কিন্তু পিছনে টানার তো ব্যাপারই নেই, যা করবে সেটাই পাবে। যে
পুরুষার্থ করবে, ২১ জন্ম তার প্রালব্ধ হবে। বৃদ্ধ তো অবশ্যই হবে। কিন্তু অকাল মৃত্যু
হয় না। কতো বলিষ্ঠ পদ। বাবা বুঝে যান এর ভাগ্য খুলেছে, উত্তরাধিকারী হয়েছে। এখন হলো
পুরুষার্থী, তবুও রিপোর্টও করে, বাবা এই-এই বিঘ্ন আসছে, এটা হয়ে থাকে। প্রত্যেককে
তো দিনপঞ্জি দিতে হয়। এতো পরিশ্রম আর কোনো সৎসঙ্গতে হয় না। বাবা তো ছোটো ছোট
বাচ্চাদেরও সন্দেশী (পরমধাম, সূক্ষ্মলোকের সংবাদ যাঁরা আনেন) তৈরী করে দেন। লড়াইতে
ম্যাসেজ নিয়ে যাওয়ার জন্যও তো কাউকে চাই যে না। এটা হলো লড়াই এর ময়দান। এখানে
তোমরা সামনে শোনো বলে খুব ভালো লাগে, হৃদয় খুশী থাকে। বাইরে গেলে আর সারসের সঙ্গ
পেলে - তবে খুশী উড়ে যায়। সেখানে মায়ার ধূলো আছে যে, সেইজন্য সুপরিপক্ক হতে হয়।
বাবা কতো ভালোবেসে
পড়ান, কতো ফেসিলিটিজ্ (সুবিধা) দেন। এরকমও অনেক আছে যারা ভালো-ভালো বলে আবার উধাও
হয়ে যায়, দাঁড়াতে আবার দাঁড়াতে সক্ষম হয়, এমনের সংখ্যা বিরল। এক্ষেত্রে তো
জ্ঞানের নেশা দরকার। মদেরও যেমন নেশা হয়ে থাকে ! কেউ দেউলিয়া করে দিলো তো আরো
মদ্যপান করলো, নেশা খুব বেশী রকম উঠলে তো মনে করে আমি হলাম রাজারও রাজা।এখানে
তোমাদের অর্থাৎ বাচ্চাদের রোজ জ্ঞান অমৃতের পেয়ালা প্রাপ্ত হয়। ধারণ করার জন্য
দিন-প্রতিদিন পয়েন্টস এরকম পাওয়া যেতে থাকে যাতে বুদ্ধির তালা খুলতে থাকে, সেইজন্য
মুরলী তো যেমন করেই হোক পড়তে হয়। যেমন গীতা রোজ পাঠ করে যে না। এখানেও রোজ বাবার
কাছে পড়াশুনা করতে হয়। জিজ্ঞাসা করা উচিত- আমার উন্নতি হচ্ছে না, কি কারণ আছে? এসে
বোঝা উচিত। আসবেও সেই যার সম্পূর্ণ বিশ্বাস আছে যে উনি হলেন আমাদের বাবা। এরকম নয়,
পুরুষার্থ করছি - নিশ্চয়বুদ্ধি সম্পন্ন হওয়ার জন্য। নিশ্চয়বুদ্ধি সম্পন্ন তো
একরকমই হয়, তাতে কোনো পার্সেন্টেজ হয় না। বাবা হলেন এক, ওনার থেকে উত্তরাধিকার
প্রাপ্ত হয়। এখানে হাজার জন পড়ে তবুও বলে কীভাবে বিশ্বাস করবো? তাদের অপ্রসন্ন বলা
হয়। সুপ্রসন্ন তারা, যারা বাবাকে চিনেছে আর মেনে নিয়েছে। কোনো রাজা যদি বলে এসে
আমার কোলের বাচ্চা হও, তো সে গেলেই সুনিশ্চিত হয়ে যায়। এইরকম বলবে না যে বিশ্বাস হলো
কীভাবে? এটা হলোই রাজযোগ। বাবা তো হলেন স্বর্গের রচয়িতা, তাই স্বর্গের মালিক তৈরী
করেন। বিশ্বাস হচ্ছে না তো তোমার ভাগ্যে নেই, আর কেউ কি করতে পারে? তাঁকে যদি নাই
বা মানবে তবে উপায় হবে কীভাবে ? তারা খুঁড়িয়েই চলবে। অসীম জগতের বাবার থেকে
ভারতবাসীর কল্প-কল্প স্বর্গের উত্তরাধিকার প্রাপ্ত হয়। দেবতা হলেই স্বর্গে থাকে।
কলিযুগে তো রাজত্ব হয়ই না। প্রজারও প্রজার উপর রাজ্য। পতিত দুনিয়া যখন তো তাকে
পবিত্র দুনিয়া বাবা করবে না তো কে করবে? ভাগ্যে না থাকলে তো আবার বুঝবেও না। এটা
তো একদম সোজা বোঝার ব্যাপার। লক্ষ্মী-নারায়ণ এই রাজত্বের প্রালব্ধ কখন পেয়েছে?
অবশ্যই পূর্ব জন্মের কর্ম আছে, তবেই প্রালব্ধ লাভ করেছে। লক্ষ্মী-নারায়ণ স্বর্গের
মালিক ছিলো, এখন হলো নরক তো এরকম শ্রেষ্ঠ কর্ম অথবা রাজযোগ একমাত্র বাবা ব্যতীত আর
কেউ শেখাতে পারে না। এখন হলো সকলের অন্তিম জন্ম। বাবা রাজযোগ শেখাচ্ছেন। দ্বাপরে কি
আর রাজযোগ শেখাবেন! দ্বাপরের পরে কি আর সত্যযুগ আসবে! এখানে তো খুব ভালো ভাবে বুঝে
যায়। বাইরে গেলেই শূণ্য হয়ে যায়, যেমন কৌটোতে নুড়ি থেকে যায়, রত্ন চলে যায়। জ্ঞান
শুনতে শুনতে বিকারে পড়লে তো শেষ। বুদ্ধি থেকে জ্ঞান রত্নের ঝাড়া-মোছা হয়ে যায়।
এরকমও অনেকে লেখে- বাবা, পরিশ্রম করতে করতে আজ আবার পড়ে গিয়েছি। পড়ে গেছো তো
নিজেকে আর কুলকে কলঙ্ক লাগিয়েছো, ভাগ্যে সীমা-রেখা টেনে দিয়েছো। বাড়ীতেও যদি
বাচ্চারা এরকম কোনো অকর্তব্য করে তো বলে এরকম বাচ্চার মরণ ভালো। তো এই অসীম জগতের
পিতা বলেন কুল কলঙ্কিত হয়ো না। যদি বিকারের দান দিয়ে আবার তা ফিরিয়ে নাও তো
পদভ্রষ্ট হয়ে যাবে। পুরুষার্থ করতে হবে, বিজয় প্রাপ্ত করতে হবে। চোট লাগলে আবার উঠে
দাঁড়িয়ে পড়ো। ক্ষণে-ক্ষণে চোট খেতে থাকলে তো হেরে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে যাবে। বাবা তো
অনেক বোঝান তবে তারা এখানেই থাকে। মায়া অনেক চতুর। পবিত্রতার পণ করে যদি আবার পতন
ঘটে তবে চোট বড় জোরে লেগে যায়। খেয়া পার হয়ই পবিত্রতার দ্বারা। পিওরিটি যখন ছিলো,
তখন ভারতের নক্ষত্র উজ্জ্বল ছিল। এখন তো ঘোর অন্ধকার। আচ্ছা!
মিষ্টি-মিষ্টি
হারানিধি বাচ্চাদের প্রতি মাতা-পিতা বাপদাদার স্মরণের স্নেহ-সুমন আর সুপ্রভাত।
আত্মাদের পিতা তাঁর আত্মা রূপী বাচ্চাদেরকে জানাচ্ছেন নমস্কার।
ধারণার জন্য মুখ্য সার :-
১ ) এই
যুদ্ধের ময়দানে মায়াকে ভয় পেতে নেই, পুরুষার্থ করার জন্য বাবার থেকে ভালো মত নিয়ে
নিতে হবে। বিশ্বস্ত (বাফাদার), অনুগত (ফরমানবরদার) হয়ে শ্রীমতে চলতে থাকতে হবে।
২ ) আত্মিক নেশাতে
থাকার জন্য জ্ঞান অমৃতের পেয়ালা রোজ পান করতে হবে। রোজ মুরলী পড়তে হবে। ভাগ্যশালী
হওয়ার জন্য বাবার প্রতি যেন সংশয় না আসে।
বরদান:-
ব্রহ্মা
বাবার সমান জীবন্মুক্ত স্থিতির অনুভবকারী কর্মের বন্ধনগুলির থেকে মুক্ত ভব
ব্রহ্মা বাবা কর্ম
করলেও কর্মের বন্ধনে ফেঁসে যেতেন না। সম্পর্ক-সম্বন্ধে থেকেও সম্বন্ধের বন্ধনে
আবদ্ধ হতেন না। তিনি ধন আর সাধনের বন্ধন থেকেও মুক্ত ছিলেন, দায়িত্ব পালন করেও
জীবন্মুক্ত স্থিতির অনুভব করেছেন। এইরকম ফলো ফাদার করো। তোমরা অতীতের কোনও
হিসেব-নিকেশের বন্ধনেও আবদ্ধ হবে না। সংস্কার, স্বভাব, প্রভাব আর জোড় করে চাপিয়ে
দেওয়ার বন্ধনেও আসবে না, তখন বলা হবে কর্মবন্ধন মুক্ত, জীবন্মুক্ত।
স্লোগান:-
তমোগুণী বায়ুমন্ডলে নিজেকে সেফ রাখতে হলে সাক্ষী হয়ে খেলা দেখার অভ্যাস করো।